অভিরূপ দাস: পাথরের লড়াইয়ে এক নম্বরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ। শুক্রবার হাসপাতালের জেনারেল সার্জারি বিভাগে ডা. শিবজ্যোতি ঘোষের অপারেশন থিয়েটারে যে গলব্লাডার কাটা হল তা দেখে চোখ ছানাবড়া। একশো, পাঁচশো, সাতশো, হাজার, চোদ্দোশো। ছোট-মাঝারি-কুচি গলব্লাডারের পাথর গুনতে গুনতে হাঁপিয়ে গিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। শেষমেশ যা দেখা গেল তাতে দেশের মধ্যে প্রথম স্থানে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ।
এর আগে হায়দরাবাদে হাইটেক সিটির হাসপাতালে ৩৯ বছরের মহিলার গলব্লাডার থেকে বেরিয়েছিল ১০০২টি স্টোন। পুণের বছর ত্রিশের এক মহিলার গলব্লাডার থেকে বেরিয়েছিল ১০০০টি পাথর। তবে সেই সব সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেল কলকাতার বাসিন্দা গৌতম দত্তর গলব্লাডার অস্ত্রোপচার। শুক্রবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে তাঁর গলব্লাডার থেকে বেরোল প্রায় ১৪০০ পাথর! এত পাথর একসঙ্গে দেখে থ হয়ে গিয়েছেন ডাক্তারবাবুরা। ডা. শিবজ্যোতি ঘোষের নেতৃত্বে অস্ত্রোপচারের পরিচালনায় ছিলেন ডা. প্রসেনজিৎ মুখোপাধ্যায়, ডা. সুমন সাহা, ডা. সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্য।
[আরও পড়ুন: লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি তুঙ্গে, ফের রাজ্যে আসছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দল]
৬৫ বছরের এক ভদ্রলোক পাঁচমাস ধরে পেটের ব্যথায় ভুগছিলেন। আল্ট্রাসোনোগ্রাফিতে ধরা পড়ে গলব্লাডার স্টোন। ডা. শিবজ্যোতি ঘোষ জানিয়েছেন, যকৃতের নিচে ডানদিক ঘেঁষে থাকে পিত্তথলি। লিভার বা যকৃত দ্বারা উৎপাদিত অতিরিক্ত পিত্ত এই পিত্তথলি বা গলব্লাডারে এসে জমা হয়। গলব্লাডারে স্টোন হলে পেটের ডানদিকে অনুভূত হয় মারাত্মক ব্যথা। যেমনটা হচ্ছিল পঁয়ষট্টির প্রৌঢ়ের। গলব্লাডার স্টোনের কারণ একাধিক। ঘনঘন উপোস, অসময়ে খাওয়া, অনিয়ন্ত্রিত কোলেস্টেরল তার মধ্যে অন্যতম।
[আরও পড়ুন: জি-২০ সামিটে ‘লোন উলফ’ হামলার আশঙ্কা! হোটেলের নিরাপত্তায় মোতায়েন ‘হিট স্কোয়াড’]
সাধারণত এক সেন্টিমিটার স্টোন তৈরি হতে একবছর সময় লাগে। গৌতমবাবুর গলব্লাডারে যে আকারের পাথর ছিল তা তৈরি হতেও অনেকদিন লেগেছে। চিকিৎসকরা জানান, ল্যাপারোস্কোপিক অস্ত্রোপচার হলেও গৌতমবাবুর তা করা খুব একটা সহজ ছিল না। কারণ একাধিক কোমর্বিডিটি ছিল। হার্টের সমস্যা, কিডনি সমস্যা। ডা. শিবজ্যোতি ঘোষের কথায়, কড়া পর্যবেক্ষণে হয়েছে অস্ত্রোপচার। রোগী এখন ভাল আছে। অ্যানাস্থেশিয়ার দায়িত্বে ছিলেন ডা. দেবাশিস ঘোষ।