সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অভিশপ্ত সেই দিনগুলির পর কেটে গিয়েছে ৩০ বছর। নিজভূমে পরবাসী হয়ে যাওয়া হাজার হাজার কাশ্মীরি পণ্ডিতদের (Kashmiri Pandit) ঘরে ফেরা আজও হয়ে ওঠেনি। এই তিন দশকে প্রায় ১৪ বছর কেন্দ্রে সরকার চালিয়েছে কংগ্রেস। প্রায় সমান সময়ে ক্ষমতায় থেকেছে বিজেপিও (BJP)। কিন্তু বাস্তব হল কোনও সরকারই কাশ্মীরি পণ্ডিতদের পুনর্বাসনের জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ করেনি। যার ফলস্বরূপ আজ উপত্যকায় বসবাস করছেন মোটে হাজার তিনেক কাশ্মীরি পণ্ডিত। বিতাড়িত এই পণ্ডিতদের হাজার হাজার বাড়ি-ঘর, সম্পত্তি আজও পরিত্যক্ত।
ঘটনা হল, কেন্দ্রের বর্তমান বিজেপি সরকার প্রায় প্রতি নির্বাচনের আগেই পণ্ডিতদের ঘরে ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু কাজের কাজ তেমন হয় না। সংসদের চলতি বাজেট অধিবেশনেই সরকারের কাছে পরিসংখ্যান জানতে চাওয়া হয়েছিল, কত সংখ্যক কাশ্মীরি পণ্ডিত এতদিনে ঘরে ফিরেছেন। কিন্তু সরকার তার কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি। জানানো হয়েছে, সরকার কাশ্মীরি পণ্ডিতদের জন্য বাড়ি তৈরি করছে। তাদের চাকরির ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কবে ফিরবেন কাশ্মীরি পণ্ডিতরা? সরকার এ বিষয়ে নীরব। গতকাল সিআরপিএফের ডিজি কূলদীপ সিং (Kuldiep Singh) অবশ্য দাবি করেছেন উপত্যকা এখন অনেকটাই শান্ত। পণ্ডিতদের ফেরার উপযুক্ত পরিবেশও রয়েছে। কিন্তু ফেরা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তাঁদেরই নিতে হবে।
[আরও পড়ুন: চিন ও পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের আবহে প্রতিরক্ষা বাজেটে কাটছাঁট! উদ্বেগ সংসদীয় কমিটির]
আসলে দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত কাশ্মীরি পণ্ডিতদের বেশ কিছু বাড়ি এখন আধাসেনার দখলে। ওই পরিত্যক্ত বাড়িগুলিতে তৈরি হয়েছে সেনা শিবির। হিসাব বলছে, এই মুহূর্তে শুধু কাশ্মীরেই প্রায় ৬৫ হাজার আধাসেনা জওয়ান মোতায়েন রয়েছেন। তাঁদের থাকার বন্দোবস্ত হিসাবে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের পরিত্যক্ত বাড়িগুলিকেই শিবির হিসেবে ব্যবহার করে CRPF। কখনও কখনও অভিযোগ উঠেছে, বাড়ি আধা সেনার হাতে চলে যাওয়ায় পণ্ডিতদের কেউ কেউ ফিরতে চেয়েও পারেন না।
[আরও পড়ুন: ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ ছবির নির্মাতাদের সঙ্গে যোগ রয়েছে জঙ্গিদের! বিস্ফোরক অভিযোগ বিজেপি শরিকের]
সিআরপিএফ ডিজি এদিন সেই অভিযোগ কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন। কূলদীপ সিং বলেন, “কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ছেড়ে যাওয়া কিছু বাড়িতে সিআরপিএফের শিবির আছে। রক্ষণাবেক্ষণের স্বার্থেও কিছু কিছু বাড়ি নেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাড়ির বৈধ মালিকরা যদি বাড়িতে ফিরতে চান তাহলে আমরা বাড়ি ফাঁকা করে দেব। আমি এটুকু বলতে পারি কাশ্মীরের পরিস্থিতি এখন অনেক শান্ত। তাই কেউ ফিরতে চাইলে তাঁরা স্বাগত। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তাঁদেরই নিতে হবে।”