জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: ১০ বছর আগেকার ঘটনা। তার ক্ষত এখনও শুকোয়নি। সেটাই আরও একবার উসকে উঠল রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের (Jyotipriya Mallick) গ্রেপ্তারিতে। বারাসতের প্রতিবাদী শিক্ষক-যুবক বরুণ বিশ্বাস খুনের (Barun Biswas Murder) ঘটনায় ফের জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের যোগাযোগের অভিযোগে সরব হল তাঁর পরিবার। সরব এপিডিআর কর্মীরাও। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কল রেকর্ডই খুনের সঙ্গে তাঁর যোগের প্রমাণ, দাবি এপিডিআর (APDR) কর্মী নন্দদুলাল দাসের। এবার প্রকৃত দোষী শাস্তি পাক, এমনই বলছেন বরুণ বিশ্বাসের দিদি।
২০১২ সালের ৫ জুলাই। গাইঘাটার (Gaighata) ছেলে, কলকাতার মিত্র ইনস্টিটিউশনের শিক্ষক তথা সুটিয়া ধর্ষণকাণ্ডে আন্দোলনের প্রধান মুখ বরুণ বিশ্বাসকে গোবরডাঙা স্টেশনের বাইরে গুলি করে খুন (Shot dead)করে দুষ্কৃতীরা। সেই ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা বাংলাকে। এখনও এলাকার কেউ সেই ঘটনা ভুলতে পারেননি। বরুণ খুনের নেপথ্যে তৎকালীন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছিল পরিবার। ১১ বছর পর সেই জ্যোতিপ্রিয়র গ্রেপ্তারিতে গাইঘাটার বিশ্বাস পরিবার ফের তাঁর দিকে খুনের মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে আঙুল তুলেছেন। কল রেকর্ডই তার প্রমাণ, বলছেন স্থানীয় এপিডিআর সদস্য নন্দদুলাল দাস। তিনি আন্দোলনে বরুণের সহকর্মী ছিলেন। একই বক্তব্য বরুণের দিদি প্রমীলার।
[আরও পড়ুন: এবার নবমীতেও যাওয়া হয়নি, জ্যোতিপ্রিয়র গ্রেপ্তারিতে মন ভালো নেই মন্তেশ্বরের পৈতৃক বাড়ির]
চালুন্দিয়া খাল এবং ইছামতি নদী সংস্কারের জন্য বরাদ্দ ৩৮ কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ এবং তার প্রতিবাদ আন্দোলন করায় খুন হতে হয় তরতাজা যুবক বরুণ বিশ্বাসকে। সেই সঙ্গে এর পেছনে হাত ছিল জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের, এমনই দাবি করেন বরুণ বিশ্বাসের দিদি প্রমিলা রায় বিশ্বাস। বরুন খুন হওয়ার পর তাঁর দিদিকে হুমকি এবং শাসানির মুখেও পড়তে হয়। তাঁর বিরুদ্ধে তিন কোটি টাকার মিথ্যা মানহানির মামলাও করা হয় বলে তিনি অভিযোগ করেন। প্রমীলাদেবী চান, তাঁর ভাইয়ের খুনিদের শাস্তি হোক। সিবিআই তদন্তে প্রকৃত ঘটনা উঠে আসুক।
[আরও পড়ুন: আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু পরেশ অধিকারীর ছেলের]
এপিডিয়ার চাঁদপাড়া শাখার সভাপতি চালন্দিয়া খাল বাঁচাও কমিটি সদস্য তথা বরুণ বিশ্বাসের সহযোগী নন্দদুলাল দাস বলেন, ”যেদিন বরুণ খুন হয়, সেদিন জ্যোতিপ্রিয়র কণ্ঠস্বরের কল রেকর্ড কাছে আছে। চালন্দিয়া খাল ভরাটের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলন শুরু করেছিলাম আমরা৷ বরুণ ছিল তাঁর মুখ৷ সে কারণেই খুন হতে হয়েছিল বরুণকে। খুনের পর জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে ফোন করা হয়েছিল। তাঁকেই জিজ্ঞেস করা হয়, এর পর কী করা হবে। কল রেকর্ড পরীক্ষা করলেই তা পাওয়া যাবে। উত্তর ২৪ পরগনায় নামে বেনামে প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে জ্যোতিপ্রিয়র৷”