সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শিশু কোনও স্থানান্তরযোগ্য সম্পত্তি নয় যাকে ইচ্ছেমতো এদিক ওদিক পাঠানো যাবে। মধ্যপ্রদেশের ২ বছর ৭ মাসের শিশুর কাস্টডি মামলায় এমনই পর্যবেক্ষণ করল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত বলছে, কোনও শিশুর কাস্টডি দেওয়ার আগে সেই সিদ্ধান্ত তার মননে কী প্রভাব ফেলবে, সেটা লক্ষ্য রাখা উচিত আদালতের।
কিছুদিন আগে সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দাখিল হয়, একটি ২ বছর ৭ মাসের শিশুর কাস্টডি নিয়ে সমস্যা তৈরি হওয়ায় পিটিশনটি শীর্ষ আদালতে আসে। শিশুটির যখন ১১ মাস বয়স তখন তার মায়ের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। তারপর থেকে সে মাসির কাছে মানুষ। শিশুটির বাবা শিশুর সন্ধান পেতে একটি হেবিয়াস কর্পাসের মামলা করেন। হাই কোর্ট ওই মামলায় রায় দিয়েছিল, মাসির কাছে শিশুটিকে রাখা যাবে না। বাবাকে ফিরিয়ে দিতে হবে।
[আরও পড়ুন: বন্ধুত্বের হাতছানি দিয়ে সায়ানাইড খাইয়ে পর পর খুন! গ্রেপ্তার ৩ মহিলা সিরিয়াল কিলার]
পালটা সুপ্রিম কোর্টে যান মাসি। সেই মামলাতেই শীর্ষ আদালতের বিচারপতি এ এস ওকা এবং এ জি মাসিহর বেঞ্চ বলল, এই ধরনের বিষয় মানবিকতা দিয়ে বিচার করা উচিত। শিশু কোনও 'স্থানান্তরযোগ্য সম্পত্তি' নয়। তার মানসিক অবস্থার কথা না ভেবে তাকে চাইলেই আজ এখানে কাল ওখানে পাঠানো যায় না। হাই কোর্ট বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়মের ভিত্তিতে মানবিকতার ভিত্তিতে নয়। সুপ্রিম কোর্ট বলছে, "শিশুটি তার বাবা বা সেই পরিবারকে কাউকে দেখেনি এক বছরের উপর। এই পরিস্থিতিতে যার কাছে সে বড় হচ্ছে তার থেকে সরিয়ে নতুন জায়গায় নিয়ে গিয়ে রাখলে তাঁর মনের উপর বড়সড় প্রভাব পড়তে পারে।" শীর্ষ আদালত শিশুটির ভার তাঁর মাসিকেই দিয়েছে। বাচ্চাটির সঙ্গে তার বাবা ১৫ দিনে একবার করে দেখা করতে পারবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
[আরও পড়ুন: জেলে মৃত্যু হলে সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য! ঘোষণা কেজরিওয়াল সরকারের]
মা বাবার বিচ্ছেদ, বা বাবা-মায়ের মৃত্যু! বিরূপ পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় শিশুদের। তাঁদের লালন-পালন, বেড়ে ওঠা এসবকিছুই পুরোপুরি নির্ভর করে আদালত এবং আইনের বইয়ে লেখা বাধাধরা কিছু নিয়মের উপরে। অথচ এর কী প্রভাব শিশুর মননে পড়ছে, সেটা ভেবে দেখা যায় না। সেটার উপরই এবার আলোকপাত করল শীর্ষ আদালত।