shono
Advertisement

 কুয়াদ্রাত ম্যাজিকই জেতাল ইস্টবেঙ্গলকে, কোচের ক্যারিশমায় মুগ্ধ মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য

জাদুকাঠি হাতে নিয়ে ইস্টবেঙ্গলের খোলনলচে বদলে দিয়েছেন কুয়াদ্রাত।
Posted: 03:06 PM Jan 29, 2024Updated: 03:22 PM Jan 29, 2024

মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য: আজ ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal) কাছে শাপমুক্তির রাত!
কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে ক্লেটন সিলভা, হিজাজি মাহেরদের লড়াই দেখে আমি নিজের খেলোয়াড় জীবনে ফিরে গিয়েছিলাম। এটাই তো চাপের মুহূর্তে একটা বড় ক্লাবের ফুটবলারদের শরীরীভাষা হওয়া উচিত! দলীয় শক্তির বিচারে পিছিয়ে থাকলেও এই মানসিকতাই তফাৎ গড়ে দেয়। গতবছর এই মানসিকতারই অভাব ছিল ইস্টবেঙ্গলে। কিন্তু এবার অন্য চেহারায় দেখতে পাওয়া যাচ্ছে দলটাকে। সুপার কাপের শুরু থেকেই দুরন্ত ফুটবল খেলছে ক্লেটনরা। একটা-একটা ম্যাচ জিতে ফাইনালে পৌঁছেছে ইস্টবেঙ্গল।
আর রবিবার খেতাবি ম্যাচে প্রতিযোগিতার অন্যতম শক্তিশালী দলটাকেই মাটি ছুঁইয়ে ট্রফি জিতল ইস্টবেঙ্গল। এক যুগ পর জাতীয়স্তরে কোনও ট্রফি হাতে তুলল লাল-হলুদ বাহিনী।
ইস্টবেঙ্গলের এই রূপবদলের নেপথ্যে যাকে সবচেয়ে বেশি কৃতিত্ব দিতেই হয়, সেই লোকটা হল কার্লেস কুয়াদ্রাত (Carles Cuadrat)। ঠিক যেন জাদুকাঠি হাতে নিয়ে দলটার খোলনলচেই বদলে দিয়েছে এই স্প্যানিয়ার্ড।

Advertisement

[আরও পড়ুন: খারাপ ফর্ম অব্যাহত, বিরাট দলে ফিরলেই কি ছাঁটাই শুভমান? জল্পনা তুঙ্গে]

গতবছর ইস্টবেঙ্গলের প্রধান রোগ ছিল গোল করেও তা ধরে রাখতে না পারা। কুয়াদ্রাত এসেই আগে সেই রোগটা সারিয়েছে। এখন ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্সিভ শেপ অনেক, অনেক ভালো। এমন নয় যে দলটা গোল খায় না। কিন্তু এখন একটা ইউনিট হয়ে হিজাজিরা ডিফেন্স করে। হিজাজির মতো একটা প্লেয়ারকে খুঁজে এনেছে কুয়াদ্রাত। ও শুধু গোল আটকানো নয়, করার ক্ষেত্রেও সাবলীল। দেখলাম ওকে সুপার কাপের সেরা ডিফেন্ডারের পুরস্কার দেওয়া হল। একদম ঠিক সিদ্ধান্ত। সেট-পিসের ক্ষেত্রে হিজাজির ভূমিকা থাকে অনেকটাই। যে কোনও দলের কাছে ওর মতো ফুটবলার ‘অ্যাসেট’!
কুয়াদ্রাত আরও একটা কাজ ভালো মতো করেছে। সেটা হল রিজার্ভ বেঞ্চ তৈরি রাখা। প্রায় পুরো সুপার কাপই ইস্টবেঙ্গল খেলল নাওরেম মহেশ সিং আর লালচুংনুঙ্গাকে ছাড়া। গতবছর ইস্টবেঙ্গল খারাপ খেললেও এই দুই ফুটবলারের পারফরম্যান্স নিয়ে কোনও প্রশ্নের অবকাশ ছিল না। ফাইনালের আগেই তারা দলের সঙ্গে যোগ দিলেও ওদের ছাড়াই দল সাজিয়েছিল কুয়াদ্রাত। উইনিং কম্বিনেশন একেবারেই ভাঙতে না চাওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু সেই কাজটা মসৃণভাবে হল ইস্টবেঙ্গলের রিজার্ভ বেঞ্চ শক্তিশালী হওয়ায়। আর এই রিজার্ভ বেঞ্চ শক্তিশালী করার কৃতিত্ব দিতেই হবে কুয়াদ্রাতকে। কোচ হয়ে আসার পর নিয়মিত কলকাতা লিগের ম্যাচ দেখেছে। পিভি বিষ্ণু, সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো প্লেয়ারদের তুলে আনছে। ১৭-১৮ জন প্লেয়ারকে প্রথম দলের মতো তৈরি রেখেছে। ফলে কারও থাকা না থাকা বিশেষ প্রভাব ফেলে না দলটার উপর।
সঙ্গে বলব ক্লেটনের কথা। মাঠের বাইরে যেমন কুয়াদ্রাত, মাঠের ভেতরে তেমন ক্লেটন ইস্টবেঙ্গলকে নেতৃত্ব দেওয়ার কাজটা সাফল্যের সঙ্গে করে। আজও করল। অতিরিক্ত সময়ে ঠিক যখন প্রয়োজন, গোল করে দলের মনোবল বাড়িয়ে দিল। সেটাই শেষ পর্যন্ত তফাৎ গড়ে দিল। আর মনোবল প্রসঙ্গে মনে পড়ল, আর কয়েকটা দিন পরেই ফের আইএসএলে ফিরবে ইস্টবেঙ্গল। শুরুটাই করবে ডার্বি দিয়ে। এমনিতে কাপ আর লিগের পার্থক‌্য আছে। কাপে খুব তাড়াতাড়ি নিজেদের সেরা ফর্মে পৌঁছে যেতে হয়, লিগে সেই ফর্ম দীর্ঘদিন ধরে রাখতে হয়। সুপার কাপ জিতেছে বলেই আইএসএলে দলটা দুরন্ত পারফর্ম করবেই, সেটা ধরে নেওয়া অর্থহীন। তবে ফের সর্বভারতীয় পর্যায়ে ট্রফি জেতার পর ইস্টবেঙ্গল যে আত্মবিশ্বাসী হয়ে আইএসএলে নামবে, সেটা বলে দেওয়াই যায়।

[আরও পড়ুন: আরও কত বছর চেন্নাইতে খেলবেন ধোনি? চলে এল বড় আপডেট]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement