সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিরোধী শিবির, এনডিএ শরিক দলগুলির পর এবার জাতগণনার পক্ষে সরব হল খোদ আরএসএস (RSS)। পূর্বের অবস্থান থেকে পিছু হঠে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের দাবি, 'মানুষের উন্নয়নের জন্য জাতগণনার প্রয়োজন। তবে তা ভোট রাজনীতির জন্য ব্যবহার করা উচিত নয়।' সংঘের এহেন বক্তব্যে স্বাভাবিকভাবে চাপ আরও বাড়ল কেন্দ্রের মোদি সরকারের।
কেরলের পালাক্করে সংঘের ৩ দিনের সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন সংঘের মুখপাত্র সুনীল আম্বেকর। সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, 'জাতিগণনা অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। সরকারের উচিত তথ্য জানার উদ্দেশ্যে জাতগণনা করা। তবে জাতপাতের প্রতিক্রিয়া আমাদের সমাজে একটি সংবেদনশীল বিষয়। জাতীয় সংহতির ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।' পাশাপাশি তিনি আরও জানান, 'তাই বলে রাজনৈতিক স্বার্থে কোনওভাবেই এই কাজ করা উচিত নয়। শুধুমাত্র মানুষের উন্নয়নের স্বার্থেই জাতগণনা প্রয়োজন।'
[আরও পড়ুন: সায়নের জামিনের বিরোধিতা, সুপ্রিম কোর্টে খারিজ রাজ্যের মামলা]
তবে সঙ্ঘের তরফে জাতগণনায় রাজনীতি এড়ানোর বার্তা দেওয়া হলেও, রাজনীতিতে মাঠে এই ইস্যুতে আরও কোণঠাসা মোদি সরকার। দীর্ঘদিন ধরেই জাতগণনার দাবিতে সবর বিরোধী শিবির। এই দাবিতে কেন্দ্রের উপর লাগাতার চাপ বাড়িয়ে চলেছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। শুধু তাই নয়, শরিক দলগুলিও লাগাতার চাপ বাড়াচ্ছে এনডিএ সরকারের উপর। ইন্ডিয়া জোটে থাকাকালীনই কেন্দ্রের সঙ্গে কার্যত লড়াই করে জাতিগণনা সেরে ফেলে বিহারের নীতীশ সরকার। এর পর এনডিএ-তে ফিরলেও অবস্থান বদল হয়নি তাঁর। সম্প্রতি প্রকাশ্যে জাতগণনার দাবিতে সুর চড়িয়েছেন আর এক শরিক এলজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চিরাগ পাসওয়ান। তিনি বলেন, ‘জাতি জনগণনা সমাজের প্রান্তিক মানুষকে মূল স্রোতে আনার অন্যতম উপায়। আমার দল সর্বদা এই দাবির পক্ষে ছিল এবং থাকবে।' এরই মাঝে সঙ্ঘের বক্তব্যে ঘরে বাইরে যথেষ্ট চাপে নরেন্দ্র মোদি।
[আরও পড়ুন: জম্মুর সেনাঘাঁটিতে জঙ্গি হামলা! গুরুতর আহত জওয়ান, নির্বাচনের প্রাক্কালে বাড়ছে উদ্বেগ]
তবে এদিন জাতগণনার পক্ষে সওয়াল করলেও, কিছুদিন আগেও এর বিরোধিতায় সরব ছিল সঙ্ঘ। গত ডিসেম্বরে আরএসএস সরাসরি জাতগণনার বিরোধিতা করে জানানো হয়, 'জাতগণনা দেশে সামাজিক বৈষম্য আরও বাড়িয়ে তুলবে।' মোদি সরকারের মুখেও শোনা গিয়েছিল একই কথা। এ বিষয়ে কেন্দ্র কোনও রকম উদ্যোগ নিতে নারাজ সে কথা স্পষ্ট করে মোদি সরকারের জানায়, তফসিলি জাতি, উপজাতির, ওবিসি, এভাবে আলাদা করে জাতপাত ঘোষণা করলে বিভেদ বাড়বে। তবে যে ভাবে মোদি সরকারের উপর চাপ বেড়ে চলেছে তাতে কত দিন সরকার কত দিন জাতগণনা ঠেকিয়ে রাখতে পারবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।