সুব্রত বিশ্বাস: ৫০ লক্ষ টাকা ঘুষ (Bribe) নেওয়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়লেন উত্তর-পূ্র্বাঞ্চলের এক রেলকর্তা। আটক করা হয়েছে আরও একজনকে। তবে তিনি রেলের সঙ্গে যুক্ত কি না, তা এখনও জানা যায়নি। রবিবার এই গ্রেপ্তারির খবর নিশ্চিত করেছে সিবিআই (CBI)। কোথা থেকে ওই রেলকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তা গোপন রেখেছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। এই ঘটনায় ফের রেলের অন্দরে দুর্নীতির বিষয়টি প্রকাশ্যে এল।
সিবিআই সূত্রের খবর, ধৃত ব্যক্তির নাম জিতেন্দ্র পাল সিং। তিনি নর্থ ইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলের লামডিং ডিভিশনের এডিআরএম (ADRM)। অর্থাৎ বেশ বড় পদেই ছিলেন। আর সেই পদ ব্যবহার করে রেলের নির্মাণ সংক্রান্ত কোনও একটি কাজের জন্য ঘুষ নিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। দেড় বছর আগে তিনি লামডিংয়ে কাজে যোগ দেন। লামডিং-গুয়াহাটি যাতায়াত ছিল। সেই ফাঁকেই ঘুষ নেওয়া চলত বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পারে সিবিআই। তিনি ছাড়াও ঠিকাদার শ্যামলকুমার দেব, হরিওম , যোগেন্দ্র কুমার সিং, দিলওয়ার খান, বিনোদকুমার সিংঘল ওরফে মুকেশ এবং সঞ্জিত রায়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। শনিবার রাতভর ঠিকাদার শ্যামল দেবের বাড়িতে তল্লাসি চালিয়ে রবিবার এই অধিকারিককে গ্রেপ্তার করা হয়। হাওয়ালার মাধ্যমে টাকা লেনদেন হতো বলে জানিয়েছে সিবিআই।
[আরও পড়ুন: নেপালে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, ৬৮ জন যাত্রী নিয়ে রানওয়েতে ভেঙে পড়ল বিমান]
অ্যাডিশনাল ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার জিতেন্দ্রপাল সিং যখন নিউ জলপাইগুড়িতে কনস্ট্রাকশন সেকশনে ছিলেন, তখন বিভিন্ন ঠিকাদারদের কাছ থেকে বাড়তি সুবিধা দিয়ে মোটা অঙ্কের ঘুষ নিতেন বলে সূত্রের খবর। ঠিকাদার শ্যামলকুমার দেব দিল্লির হাওয়ালা অপারেটর সঞ্জিত রায়ের কাছ থেকে হরিওমের মাধ্যমে এডিআরএম সিংকে ঘুষের টাকা পৌঁছে দিতেন। এদিন হরিওম টাকা দেওয়ার সময় ওই অধিকারিককে ধরা হয়।
এজন্য সিবিআই একটি ফাঁদ তৈরি করে ছিল। ফাঁদে পড়েই ঘুষের ৫০ লক্ষ টাকা নেওয়ার সময় ধরা পড়েন গুয়হাটিতে কর্মরত অ্যাডিশনাল ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার জিতেন্দ্রপাল সিং। টাকাগুলি হাওয়ালার মাধ্যমে তাঁর হাতে এসেছিল। এর পর জিতেন্দ্রপাল সিং এবং অন্যরাও ধরা পড়েন, জানান অফিসার। এদের ধরার পর গুয়াহাটি, শিলিগুড়ি, দিল্লি, নারোরা, আলিগড় সহ বিভিন্ন স্থানে জিতেন্দ্রপাল সিং এবং অন্যদের ঠেকে তালাশি-অভিযান চালিয়ে নগদ ৪৭ লক্ষ টাকা, ল্যাপটপ এবং বেশ কয়েকটি অপরাধমূলক নথি উদ্ধার করা হয়েছিল। এরপর তদন্তে নেমে রবিবার একেবারে হাতেনাতে ধরা হয় জিতেন্দ্র পাল সিংকে।
[আরও পড়ুন: মমতার পথেই কংগ্রেস, ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে’র আদলে হিমাচলে ‘হর ঘর লক্ষ্মী’র ঘোষণা]
সিবিআইয়ের দাবি, এক ব্যক্তির থেকে ঘুষ নেওয়ার সময়ই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের হাতে ধরা পড়ার পর অবশ্য নিজের কীর্তির কথা স্বীকার করেছেন তিনি, এমনই দাবি সিবিআইয়ের।