সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সারা বছর তাঁরা ব্যস্ত থাকেন আমাদের আনন্দ দেওয়ার কাজে। উৎসবের দিনটা হোক না শুধু তাঁদেরই! ছয় তারকা জানালেন কথায় কথায়, এবারের দীপাবলি কতটা হুল্লোড়ের সঙ্গে আর কার সঙ্গে কী ভাবে উদযাপন করছেন তাঁরা!
দীপাবলির দিন ছোটবেলায় আমি আর ভাই মিলে বাজি ফাটাতাম৷ ফুলঝুরি, তুবড়ি, রংমশাল সব কেনা হত তখন৷ বড় হয়ে আর নিয়ম করে বাজি ফাটানো হয়ে উঠত না৷ এখন গত কয়েক বছর বন্ধুদের বাড়িতে বেশ জমিয়ে খাওয়াদাওয়া, আড্ডা হয়৷ অল্পবিস্তর বাজি যে পোড়াই না, এমনও নয়৷ এ বছরও একই প্ল্যান রয়েছে দিওয়ালির৷
ছোটবেলায় কালীপুজোতে পাড়ার বন্ধুরা মিলে ভীষণ মজা করতাম৷ এর ওর বাড়িতে রকেট ঢুকিয়ে দেওয়া, হঠাৎ কিছু না বলে পটকা ফাটানো–এসব প্রচুর করেছি৷ এর পাশাপাশি বাজিও পোড়াতাম ছেলেবেলায়৷ আমার অলটাইম ফেভারিট বাজি হল বাটারফ্লাই৷ সবচেয়ে মজার হল, এই বাজি এত আনপ্রেডিক্টেবল, এদিক-ওদিক চলে যায়৷ সবাই ভয় পায়, সেটা দেখতেই আবার মজা লাগে৷ এখন আর তেমনভাবে বাজি পোড়ানো হয় না৷ শো থাকলে কলকাতার বাইরেই কেটে যায়৷ এবার শহরে থাকছি, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিয়েই কেটে যাবে৷ ওরা সবাই বাজি পোড়ায়, শেল ফাটায়– ওগুলোই দেখি বসে৷
বাজি পোড়াতে আমার ভীষণ ভাল লাগে৷ ফুলঝুরি, তুবড়ি, চরকি, রংমশাল– ছোটবেলা থেকে প্রতি বছর নানারকম বাজি ফাটাই৷ এখন কালীপুজোর দিন বন্ধুরাও বাড়িতে আসে, সবাই মিলে একসঙ্গে বাজি পোড়াই৷ এর সঙ্গে এলাহি খাওয়াদাওয়া থাকে৷ আর সঙ্গে দেদার আড্ডা৷ ছোটবেলা থেকেই আমার ভীষণ সাহস৷ হাতে করে চকোলেট বোম ফাটাতাম, তখন অত সাইড এফেক্ট বুঝতাম না৷ এখন তো এসব শব্দবাজি নিষিদ্ধ, তাই আর ফাটাই না৷
দুর্গাপুজোর থেকেও কালীপুজো আমার বেশি পছন্দ বলা যেতে পারে৷ কালীপুজোর দিনটার প্রতি আমার অসম্ভব টান, কারণ আমাদের বংশে কালীপুজো হয়৷ আগে আমাদের বাড়িতেই হত, এখন কাজিনদের বাড়িতে হয়, আর আমরা যেহেতু সবাই একসঙ্গে থাকি, তাই আমারই পুজো হয়ে গিয়েছে সেটা৷ আমি নির্জলা উপবাসে থেকে কালীপুজো করি৷ বাজি আমার ভীষণ পছন্দ৷ ছোটবেলায় বাবা বাজি নিয়ে আসতেন প্রচুর৷ সবাই মিলে পোড়াত৷ আমি আর বোন দেখতাম৷ দারুণ লাগত৷ এখন বাবা নেই, বাজি আসে আজও– আমি বাজি পোড়ানো দেখি মুগ্ধ হয়ে৷
ছোটবেলা থেকেই কালীপুজোর দিন দারুণ মজা করি৷ আমাদের আদি বাড়ি ভবানীপুরে৷ ওখানেই আমরা পাঁচ ভাইবোন মিলে বাজি পোড়াতাম৷ তখন চকোলেট বোম, দোদোমা, কালিপটকা সবই ফাটানো অ্যালাউড ছিল বলে সেগুলো ফাটাতাম৷ কার ভাগে ক’টা বেশি চকোলেট বোম পড়েছে, সেই নিয়ে ঝগড়াঝাঁটিও হত আমাদের৷ চরকি, তুবড়ি, ফুলঝুরি– এসব নিয়ে তেমন হেলদোল ছিল না আমার৷ তারপর একটু বড় হওয়ার পর আমরা শিফ্ট করে যাই৷ সেখান থেকে আজ পর্যন্ত পাড়ার পুজোতেই থাকি৷ প্রতিবার নির্জলা উপোস রাখি এদিন৷ চারদিন ধরে দুর্গাপুজোর মতো আড়ম্বরে পাড়ায় কালীপুজো হয়৷ বাজি পোড়ানো, খাওয়াদাওয়া, আড্ডা– সব এখানেই৷ এ বছর আমার ঠাকুমা মারা যাওয়ায় পুজোয় উপোস করা যাবে না৷ তবে পাড়াতেই কাটবে কালীপুজো আর দিওয়ালি৷
আমি বসিরহাটের মেয়ে৷ বাড়ি ভর্তি লোকজন৷ জয়েন্ট ফ্যামিলি৷ কালীপুজোর দিন আমাদের বাড়িতে লক্ষ্মীপুজো হত৷ দীপান্বিতা লক্ষ্মীপুজো যাকে বলে৷ প্রচুর বাজি আসত৷ ফুলঝুরি, চরকি, রংমশাল, চকোলেট বোম– সব দেখতাম৷ এইসময় আমাদের বাড়িতে এত লোকজন আসত, কারণ এর ঠিক পরেই ভাইফোঁটা৷ দাদুরা সাত বোন, চার ভাই– তাঁরা আসতেন, পরের জেনারেশনের পিসিরা, বাবারা আসতেন, তার পরের জেনারেশন আবার আমরা৷ এর সঙ্গে আমাদের ওই বাড়ির যাঁরা বউ, মানে মায়েরা, ঠাকুমারা, তাঁদের ভাইরাও সব ওই বাড়িতে যেতেন–অর্থাৎ বিশাল আয়োজন৷ তাই সবাই ভাইফোঁটার দু’দিন আগেই চলে আসতেন৷ কাজেই কালীপুজোর দিন সবাই মিলে খুব মজা করতাম৷ এই দীপান্বিতা লক্ষ্মীপুজো আমি আজও করি৷ এখন আমার লেক গার্ডেনসের বাড়িতে হয়৷ খুব বড় করে হয়৷ ওই দিনটা কোনও কাজ রাখি না৷ বাড়িতে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব– সবাই আসে, খাওয়াদাওয়া করে৷ আর যারাই আসে, হাতে করে কোনও না কোনও বাজি নিয়ে আসে৷ ফলে অনেক বাজি হয়ে যায়৷ বাড়ির ছাদে প্রচুর বাজি ফাটানো হয়৷ আমি খুব সাজুগুজু করে থাকি– সকালে একরকম, বিকেলে আরেকরকম৷ তাই কালীপুজোর দিনটা আমার কাছে খুব প্রিয়৷
The post দীপাবলির তারা-বাজি appeared first on Sangbad Pratidin.