shono
Advertisement
Examination

পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে পাশ-ফেল ফেরাচ্ছে কেন্দ্র, বোধদয়?

কোনও পড়ুয়া পাশ করতে না-পারলে তার যেমন দায় থাকে, দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারেন না শিক্ষকরাও।
Published By: Kishore GhoshPosted: 05:43 PM Dec 25, 2024Updated: 05:44 PM Dec 25, 2024

কেন্দ্র সিদ্ধান্ত পুনর্মূল্যায়ন করে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে পাশ-ফেল ফেরাচ্ছে। গরিব-প্রান্তিক স্কুলছুট পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়তে পারে যদিও।

Advertisement

একেই ‘বোধহয়’ বলে, বিলম্বে বোধোদয়। সকলের শিক্ষার অধিকার রয়েছে। তা নিয়ে কচকচি কম হয়নি। তারপর শিক্ষার অধিকার আইন তৈরি হল। হরেক রকম স্লোগান, সকলের জন্য শিক্ষা, সর্বশিক্ষা, সামগ্রিক শিক্ষা। মাঝখান থেকে শিক্ষাব্যবস্থার সলিলসমাধি হওয়ার উপক্রম।

কিন্তু এত সব করে ‘স্কুলছুট’ হওয়া কি ঠেকানো গিয়েছে? যায়নি। একটা সময় ‘সাক্ষরতা আন্দোলন’ করে বহু মানুষকে অক্ষরজ্ঞান করানো হয়। নাম সই করতে শেখানো হয়। তাতে কি চতুর্বর্গ লাভ হয়েছিল, খোদায় মালুম। শিক্ষার অধিকার আইনে যেভাবে পাশ-ফেল তুলে দেওয়া হয়েছিল ২০০৯ সালে, তার ‘ফল’ হয়েছে মারাত্মক। যে কোনও ভাল কাজে পুরস্কার আর খারাপ কাজে তিরস্কার– এই বিধি থাকা বাঞ্ছনীয়। না হলে কাজের গুরুত্ব থাকে না। এক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। পাশ-ফেল না থাকায় গুরুত্ব কমেছে পড়াশুনার। অনেকেই একাধিক বিষয়ে ‘শূন্য’ পেয়েও পরের ক্লাসে উঠে গিয়েছে। মূল্যায়ন না হওয়ায় শিক্ষকদের মধ্যেও দেখা গিয়েছে গাছাড়া মনোভাব। অন্তে যা বিষবৃক্ষের আকার নিয়েছে। সরকারি স্কুলে পড়াশুনার ‘মান’ খারাপ অজুহাতে অনেকেই বেশি টাকা দিয়ে বেসরকারি স্কুলে ভর্তি হয়েছে। ঝড়তিপড়তি বাকিরা নবম শ্রেণির গণ্ডি পেরতে পারলে ভাল। না হলে সেখানেই পড়ার ইতি টেনেছে।

অবশেষে কেন্দ্র সিদ্ধান্ত পুনর্মূল্যায়ন করে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে পাশ-ফেল ফেরাচ্ছে। যদিও এর ফলে গরিব ও প্রান্তিক মানুষের মধ্যে স্কুলছুট পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়বে। কিন্তু শিক্ষার সার্বিক মানোন্নয়নের স্বার্থে এই পদক্ষেপ জরুরি ছিল। প্রথম শ্রেণি থেকেও যদি এই ব্যবস্থা চালু করা যায়, তাতেই মঙ্গল। কোনও পড়ুয়া পাশ করতে না-পারলে তার যেমন দায় থাকে, দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারেন না শিক্ষকরাও। তাই গোড়া থেকে মূল্যায়ন হলে সব পক্ষকেই উদ্যোগী হতে হবে। স্কুল কর্তৃপক্ষ পরিকাঠামো ঠিক করবে। শিক্ষক-ছাত্র উভয়েই পড়াশুনার ক্ষেত্রে আন্তরিক হবেন। আখেরে স্কুলের মান বাড়বে। যে-সব স্কুল ছাত্রের অভাবে ঝঁাপ বন্ধ করতে চলেছে, সেখানে নতুন করে পড়ুয়া ভর্তি হতে চাইবে। তাতে অবশ্যই গাত্রদাহ হবে শিক্ষা-ব্যবসায়ীদের। তাদের বাধা ও কলকাঠি সামলে সরকার যদি সিদ্ধান্তে অটল থাকে, তার চেয়ে ভাল কিছুই হতে পারে না। আরও এক ধাপ এগিয়ে প্রথম শ্রেণি থেকেই পাশ-ফেল চালু করা যায় কি না, সরকারের সেটাও ভেবে দেখা দরকার।

যেমন শিক্ষাগত যোগ্যতা, তেমনই পেশাপ্রবেশ। এখন এমন ধারণার ‘ফলিত’ প্রয়োগ দেখতে পাওয়া যায় সমাজের সর্বস্তরে। অল্প পড়াশোনা করে বড় মাপের চাকরি পাওয়া কত দূর সম্ভব, সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে। কেননা, বিশ্বায়িত পৃথিবীতে দিন দিন প্রতিযোগিতার মান তীক্ষ্ণ হচ্ছে। ফলে, যে শ্রম দিচ্ছে, সেই শ্রমিকের থেকে দক্ষতা আরও বেশি করে চাইছে বাজার অর্থনীতি। ফলে একদিকে প্রতিযোগিতা ও অন্যদিকে দক্ষতার সম্মিলিত প্রভাব– শ্রমের বাজারে উচ্চশিক্ষা ও বিশেষ প্রশিক্ষণের গুরুত্ব বাড়াচ্ছে। পাশ-ফেল শেষত আমাদের এই সরণিমুখী করবে?

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • কিন্তু এত সব করে ‘স্কুলছুট’ হওয়া কি ঠেকানো গিয়েছে?
  • যেমন শিক্ষাগত যোগ্যতা, তেমনই পেশাপ্রবেশ।
Advertisement