সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তীরে এসে ডুবেছে তরী। চাঁদের মাত্র ২.১ কিলোমিটার আগে থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে ল্যান্ডার বিক্রমের। সকাল সাড়ে আটটা বেজে গেলেও এখনও কোনও সংকেত পাননি ইসরোর বিজ্ঞানীরা। চন্দ্রযান ২-এর মতো চ্যালেঞ্জিং প্রকল্পে আশানুরূপ ফল না মেলায় হতাশ মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। তবে তাঁদের হতাশ না হওয়ার বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
[আরও পড়ুন: তীরে এসে ডুবল তরী, চাঁদ ছুঁতে গিয়ে নিখোঁজ ল্যান্ডার বিক্রম]
চন্দ্রযান ২ চাঁদের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেওয়ার দিন গত ১৫ জুলাই এসেছিল প্রথম বাধা। তারপর যদিও সেই বাধা অতিক্রম করেছিল ইসরো। গত ২২ জুলাই শ্রীহরিকোটা থেকে পাড়ি দিয়েছিল চন্দ্রযান ২। সময় যত গড়িয়েছে ততই বেড়েছে উদ্বেগ। পরিকল্পনামাফিকই দিব্যি এগোচ্ছিল ল্যান্ডার বিক্রম। ঠিক সময় সফলভাবে বিচ্ছিন্নও হয়েছিল সে। শুক্রবার গভীর রাতেই ছিল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। রাত ১টা ৪০ মিনিট থেকে ১টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত ছিল চরম উৎকণ্ঠা। আপামর দেশবাসীর স্বপ্ন সার্থক করতে লক্ষ্যপূরণের পথে এগোচ্ছিল ল্যান্ডার বিক্রম। কিন্তু আচমকাই সব শেষ। চাঁদের মাত্র ২.১ কিলোমিটার আগে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এখনও পর্যন্ত ল্যান্ডার বিক্রমের কোনও সংকেত পাননি বিজ্ঞানীরা। এতদিনের পরিশ্রম ব্যর্থ হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই মুষড়ে পড়েছে টিম ইসরো।
শনিবার সকালে বেঙ্গালুরুতে ইসরোর ট্র্যাকিং সেন্টারে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিজ্ঞানীদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। ইসরোর প্রধান কে শিবনের গলা জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দেন মোদি। বিজ্ঞানীদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন,”কাল রাতে আমি আপনাদের মনের পরিস্থিতি বুঝতে পেরেছি। তাই বেশিক্ষণ এখানে থাকিনি। জীবনে ওঠাপড়া লেগেই থাকে। এ নিয়ে ভাববেন না। বরং ল্যান্ডার বিক্রম নিখোঁজের জেরে আমাদের চাঁদকে ছোঁয়ার ইচ্ছা আরও বাড়ল। সাহস হারাবেন না। বিজ্ঞানে ব্যর্থতা বলে কিছু নেই। কাল নতুন ভোর হবে আরও উজ্জ্বল। বিজ্ঞানীরা পাথর ভেঙে পথ তৈরির মানুষ। প্রতিটি ভারতবাসী মহাকাশবিজ্ঞানীদের জন্য গর্বিত। আমরা সবাই একসঙ্গে আমাদের বিজ্ঞানীদের পাশে রয়েছি।”
[আরও পড়ুন: ইউএপিএ আইনের সংশোধনী নিয়ে জনস্বার্থ মামলা, কেন্দ্রকে নোটিশ সুপ্রিম কোর্টের]
ল্যান্ডার বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ এখনও করা যাচ্ছে না। তবে এত সহজে হাল ছাড়তে নারাজ ইসরো। সংকেতের অপেক্ষায় রয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এই প্রসঙ্গে মোদি বলেন, “এই অভিযানের সঙ্গে অনেক মানুষ যুক্ত ছিলেন। বাধা এসেছে হয়তো কিন্তু আমরা আমাদের রাস্তা থেকে সরব না। আজ হয়তো চাঁদে আমাদের অভিযান ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু আশা হারাব না। যা হয়েছে সেটা আপনাদের নিরলস পরিশ্রমের ফল।” বিজ্ঞানীদের পাশাপাশি তাঁদের পরিবারকেও স্যালুট জানান মোদি।
বক্তৃতা শেষ করে মিশন চন্দ্রযান ২-এর টিমের সকলের সঙ্গে হাত মেলান মোদি। বেঙ্গালুরুর ট্র্যাকিং সেন্টার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ইসরোর প্রধান কে শিবনকে জড়িয়ে ধরেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কাঁধে মাথা রেখে কেঁদে ফেললেন শিবন।
The post ‘চলার পথে বাধা আসেই, তবে চাঁদকে ছোঁয়ার ইচ্ছা আরও বাড়ল’, বিজ্ঞানীদের পাশে মোদি appeared first on Sangbad Pratidin.