কৃ্ষ্ণকুমার দাস: সালটা ২০১২। কলকাতার চেতলা অগ্রণী ক্লাব আয়োজিত আব্দুল হাকিম মেমোরিয়াল বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়েছিলেন লভলিনা বরগোঁহাই (Lovlina Borgohain)। অসমের বক্সারের বয়স তখন ১৫ বছর। প্রতিবেশী রাজ্য থেকে এসে সকলকে তাক লাগিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল লভলিনা। রিংয়ে খুদে বক্সারের দাপট মুগ্ধ করেছিল ফিরহাদ হাকিমকেও। ৯টা বছর পেরিয়ে গিয়েছে। এবার টোকিওর মঞ্চ থেকে পদক আনতে চলেছেন সেই কলকাতার (Kolkata) সেই চেনা খুদে। আর তাতেই আবেগাপ্লুত কলকাতার পুরসভার মুখ্য প্রশাসক। লভলিনার পদক জয় নিশ্চিত হওয়ার কথা জানতে পেরেই উচ্ছ্বসিত ফিরহাদ বলে দিলেন, দেশে ফিরলেই তাঁকে সংবর্ধনা জানাবে চেতলা অগ্রণী ক্লাব।
[আরও পড়ুন: জনসংখ্যা মাত্র ৩৪ হাজার, তাতেই অলিম্পিকে পদক জিতে নজির গড়ল এই দেশ]
ফিরহাদ হাকিমের বাবা আব্দুল হাকিম পোর্টের ল অফিসারের পাশাপাশি ছিলেন একজন বক্সারও। ১৯৪২ সালে বেঙ্গল চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন তিনি। তাঁর স্মৃতির উদ্দেশেই তাই আয়োজিত হত এই চ্যাম্পিয়নশিপ। যেখানে ৯ বছর আগে খেলতে এসেছিলেন লভলিনা। দু’চোখে ছিল বড় বক্সার হওয়ার স্বপ্ন। সেবার রিংয়ে অন্যদের চিৎ করে চ্যাম্পিয়নের ট্রফি হাতে তুলেছিলেন। অসমের সেই মেয়েই আজ ভারতকে পদক এনে দিচ্ছেন।
চলতি টোকিও অলিম্পিকে সেমিফাইনালে পৌঁছতেই পদক নিশ্চিত করে ফেলেন লভলিনা। তাঁর লড়াই দেখতে মুখিয়ে রয়েছে ১৩০ কোটির দেশ। একইরকমভাবে তাঁর ম্যাচ দেখতে উৎসুক পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও। নস্ট্যালজিয়ায় ভেসে ফিরহাদ বলেন, “৯ বছর আগে মেয়েটা এখানে খেলতে এসেছিল। দারুণ পারফর্ম করেছিল। ও যে অলিম্পিকে পদক জিততে চলেছে, ভেবেই ভীষণ আনন্দ হচ্ছে। আর বারবার চেতলায় আয়োজিত সেই চ্যাম্পিয়নশিপের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। পদক নিয়ে দেশে ফিরলেই ওর সঙ্গে যোগাযোগ করব। আবার ওকে কলকাতায় আসার আমন্ত্রণ জানাব। আর যে ক্লাবে ৯ বছর আগে সেরা হয়েছিল, সেই চেতলা অগ্রণী ওকে সংবর্ধনা দেবে।”
অর্থাৎ অলিম্পিকের মঞ্চে ভারতকে গর্বিত করা মেয়েকে আরও একবার হয়তো কাছ থেকে দেখার সুযোগ পাবেন কলকাতাবাসী। বলতে পারবেন, ‘তোমাকে সেলাম।’