সুকুমার সরকার, ঢাকা: মাত্র ন’মাসে ১৬ হাজার শিশু জন্ম নিয়েছে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে। এই পরিসংখ্যান বাংলাদেশের কক্সবাজার শিবিরের। এমনিতে প্রায় ৭ লক্ষ শরণার্থীর বোঝা বইছে বাংলাদেশ। এবার বিপুল হারে জন্মহার বাড়ায় রীতিমতো উদ্বিগ্ন ঢাকা।
[মাত্র ৬২৫ জন রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে রাজি মায়ানমার ]
ইউনিসেফ-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী গড়ে প্রতিদিন ৬০টি করে শিশুর জন্ম হচ্ছে শরণার্থী শিবিরগুলিতে। সংস্থাটির এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, মায়ানমারে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বহু রোহিঙ্গা নারী। সেখানেই গর্ভধারণ করে তাঁরা। তারপর প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে হয় তাঁদের। ফলে শিবিরেই প্রসব করতে বাধ্য হন নির্যাতিতারা। তবে কলঙ্কের ভয়ে বেশির ভাগ মহিলারা এগিয়ে আসার সাহস দেখাতে পারছেন না। বাংলাদেশে ইউনিসেফ-এর প্রতিনিধি জানান, ‘রেপ চাইল্ড’ বা ধর্ষণের ফলে কত শিশু জন্ম নিয়েছে বা নেবে তার পরিসংখ্যান পাওয়া সম্ভব নয়। শরণার্থী শিবিরে মাত্র ৩ হাজার শিশুর জন্ম হয়েছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে। অর্থাৎ প্রতি ৫টি শিশুর মধ্যে মাত্র একটি শিশু স্বাস্থ্যসেবা পেয়েছে। বাকিরা পর্যাপ্ত চিকিৎসা বা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রোহিঙ্গাদের মধ্যে ধর্মীয় গোঁড়ামিও বিস্তর শিশু জন্মের অন্যতম কারণ। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শিবিরগুলিতে নিরোধ বিলি করলেও তা আদৌ ব্যবহার করছেন না রোহিঙ্গা পুরুষরা। তাদের দাবি, এতে নাকি ধর্মের অবমাননা হয়। এছাড়াও রয়েছে শিক্ষার অভাব। সব মিলিয়ে ব্যাপক বেড়ে গিয়েছে জন্মের হার। ফলে প্রবল চাপের মুখে পড়েছে প্রশাসন। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে রয়েছে প্রায় সাত লক্ষ রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু। ফলে প্রবল চাপে দেশটির অর্থনীতি। দ্রুত অবনতি ঘটছে আইনশৃঙ্খলারও। রোহিঙ্গাদের জঙ্গি যোগ নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন সে দেশের সরকার। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে রাজি হলেও টালবাহানা করছে মায়ানমার। পরিচয় যাচাই করার নামে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া থমকে দিয়েছে সু কি সরকার। এহেন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মঞ্চের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সব মিলিয়ে আরও জটিল হয়ে উঠেছে শরণার্থী সমস্যা।
[রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত পাঠাতে এবার আসরে রাষ্ট্রসংঘ]
The post ন’মাসে রোহিঙ্গা শিবিরে জন্ম ১৬ হাজার শিশুর, চরমে শরণার্থী সমস্যা appeared first on Sangbad Pratidin.