shono
Advertisement

এবার ভারতীয় সেনার উপর হামলা চালিয়ে ডোকলামের দখল পেতে চায় চিন!

আলোচনা নয়, এবার 'অ্যাকশন' চায় বেজিং।
Posted: 03:21 PM Aug 05, 2017Updated: 09:51 AM Aug 05, 2017

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ডোকলাম সীমান্তে প্রহরারত ভারতীয় জওয়ানদের হঠাতে এবার চূড়ান্ত পন্থাই অবলম্বন করতে চলেছে চিন। জওয়ানদের উপর হামলা চালিয়ে ডোকলাম থেকে তাঁদের সরাতে চায় বেজিং। কারণ, আলোচনার মধ্যে দিয়ে বা মৌখিক চাপে ওই বিতর্কিত এলাকা থেকে সেনা সরাবে না ভারত, বিলক্ষণ বুঝেছে চিন। চিনের একটি সরকারি সংবাদপত্রে প্রকাশিত এক খবরকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ‘আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ডোকলাম থেকে ভারতীয় সেনাকে বহিষ্কার করা হবে।’ তবে বড়মাপের কোনও যুদ্ধ নয়, ছোট ছোট যুদ্ধে জওয়ানদের জড়িয়ে ফেলে তাঁদের বিতারিত করতে চায় চিনা সেনা।

Advertisement

[ফের চিনের আগ্রাসন, উত্তরাখণ্ডের বারাহোতিতে অনুপ্রবেশ চিনা সেনার]

গত ১৬ জুন থেকে সিকিম সীমান্তের কাছে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে রয়েছে ভারত ও চিনের সেনা। দু’পক্ষই অস্ত্রের মুখ নামিয়ে ‘নন কমব্যাট মোড’-এ দাঁড়িয়ে থাকলেও ছোটখাটো অশান্তি যে একেবারেই হচ্ছে না, এমনটা নয়। ভুটানে ত্রিমুখী সীমান্তের একেবারে কাছে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া গাড়ি, পদাতিক বাহিনীর জন্য সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু করে চিন। কিন্তু ভারত আগাগোড়া সেই প্রকল্পের বিরোধিতা করে এসেছে। প্রথম থেকেই ভারত পাশে পেয়েছে জাপান, আমেরিকাকে। চিনা প্রকল্পের বিরোধিতা করেছে ভুটানও। ভারত আবার জানিয়ে দিয়েছে, ভুটান মিত্ররাষ্ট্র হওয়ায় তাদের যে কোনও সমস্যায় বুক চিতিয়ে দাঁড়াবে ভারতীয় সেনা। এতেই প্রমাদ গুনছে চিন। ভারতকে রুখতে চিনা সেনা ডোকলামে ব্যাপক সেনা মোতায়েন করেছে। চিনের সরকারি বাহিনী ‘পিপলস লিবারেশন আর্মি’ বা পিএলএ-র প্রতিষ্ঠা দিবসে ব্যাপক শক্তি প্রদর্শন করেছেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। পালটা ভারতও আমেরিকা ও জাপানের নৌসেনাকে নিয়ে বৃহত্তম নৌমহড়া চালিয়েছে।

[চিনা হামলা ঠেকাতে উত্তর-পূর্বে নেই ‘আকাশ’ মিসাইল, ক্যাগের রিপোর্টে শোরগোল]

পালটা প্রতিক্রিয়ায় চিনা প্রতিরক্ষামন্ত্রকের মুখপাত্র রেন গোকিয়াং স্পষ্ট জানিয়েছেন, বেজিংয়ের সংযম ও ধৈর্য শেষ সীমায় পৌঁছেছে। ডোকলাম মালভূমিতে ভারতীয় সেনা চিনা ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশ করেছে। সেই থেকে সমস্যা মেটাতে চিন ভদ্রতা, সৌজন্য, সদিচ্ছা দেখিয়েছে। কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে গিয়েছে। ভারতকে বার বার বোঝানোর চেষ্টা করেছে, চিনা ভূখণ্ড থেকে সেনা সরাতে হবে। কিন্তু ভারত নানা অছিলায় দর কষাকষি করেই যাচ্ছে। এই অবস্থায় ভারতের মতো প্রতিবেশীকে সম্মান জানিয়ে নিজেদের প্রচণ্ড সংযত রেখেছে চিনা সেনারা। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, আঞ্চলিক শান্তি ও ভারত-চিন সহযোগিতার কথা মাথায় রেখেই অসীম ধৈর্য্যের সঙ্গে নিজেদের সংযত রেখেছে পিপলস লিবারেশন আর্মি। কিন্তু এবার চিনা সেনাদের ধৈর্য্য ও সংযম তলানিতে পৌঁছেছে। এবার অন্য ভাষায় কথা বলার সময় এসেছে।”

[ভারত মহাসাগরে চিনা রণতরীর উপস্থিতিতে বাড়ছে ধোঁয়াশা]

গোকিয়াংয়ের এই বক্তব্য গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করেছে চিনা সংবাদ সংস্থা। রেন বলেছেন, প্রতিবেশীদের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এবার বুঝিয়ে দেওয়ার সময় এসেছে যে, চিনা ফৌজ তাদের সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ডকে রক্ষা করতে জানে। কিন্তু ভারত চিনের সঙ্গে এখন ‘দেরি করানোর কৌশল খেলছে’। ভারতের এই ‘ডিলেয়িং ট্যাকটিক’ কিন্তু ভারতের বিরুদ্ধেই বু্যমেরাং হতে পারে। শীত এলেই বরফ পড়বে। তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে চলে যাবে। তখন দুই পক্ষই বাধ্য হয়ে সেনা সরিয়ে নেবে। ভারত যেন এরকম কোনও বিভ্রান্তির মধ্যে না থাকে। কারণ যে কোনও সময় নিজেদের ভূখণ্ড উদ্ধার করার মতো আত্মবিশ্বাস ও সামর্থ্য চিনের সেনাদের খুব ভালই আছে। জবাবে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রকের মুখপাত্র গোপাল বাগলে জানিয়েছেন, দুই পক্ষের কাছেই গ্রহণযোগ্য হবে এমন সমাধানসূত্র খুঁজতে ভারত চিনের সঙ্গে কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা চালাচ্ছে। কারণ ভারত মনে করে কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমেই ডোকলামের সমাধান সম্ভব। একইসঙ্গে ভুটান সরকারের সঙ্গেও প্রতি মুহূর্তে যোগাযোগ রেখে চলেছে ভারত।

[চিনের সঙ্গে বিরোধ, বিশ্বের সবচেয়ে ঘাতক সাবমেরিন নিয়ে তৈরি ভারত]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement