সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অরুণাচল প্রদেশে ভারতীয় সেনার বিরুদ্ধে ফের সীমান্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলল চিন। তবে ভারতের পক্ষ থেকে বেজিংয়ের ওই অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
গত ১৫ মার্চ অরুণাচলের কিবিথুতে দাইমাই পোস্টে দু’দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে বর্ডার পার্সোনাল মিটিংয়ে (বিপিএম) বেজিং ভারতীয় সেনার বিরুদ্ধে সীমান্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে। চিন দাবি করে, ভারতীয় সেনা সীমান্ত লঙ্ঘন করে চিনের ভূখণ্ডে ঢুকে পড়েছে। তবে ভারতীয় সেনার তরফে সঙ্গে সঙ্গেই চিনের ওই অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়। সেনাবাহিনী সাফ জানিয়ে দেয়, অরুণাচল প্রদেশের আপার সুবনসিরি অঞ্চলের আসাফিলা এলাকা ভারতের অন্তর্গত। সেনাবাহিনী নিয়মিত ওই এলাকায় টহলদারি চালায়। কাজেই চিনের তোলা সীমান্ত লঙ্ঘনের অভিযোগের কোনও সারবত্তা নেই।
[পিএনবি কেলেঙ্কারিতে মোদি-মেহুলের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা]
ভারতীয় সেনার এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেছেন, “চিনের এই প্রতিবাদ বা অভিযোগ বিস্ময়কর। বরং এর আগে ওই এলাকায় চিনের লালফৌজ একাধিকবার আগ্রাসন ঘটানোর চেষ্টা চালিয়েছে। সেই সময় ভারত প্রতিবাদ জানিয়েছিল। দু’দেশের মধ্যে লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (এলএসি) নিয়ে ভিন্নমত থাকায় বিপিএম ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। বর্ডার পার্সোনাল মিটিংয়ে উভয় দেশই একে অন্যের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের অভিযোগ দায়ের করতে পারে।” তবে চিনের লালফৌজের অভিযোগ, আসাফিলা এলাকায় ভারত যেভাবে নিরন্তর টহলদারি চালায় তাতে উভয় দেশের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হতে পারে। অন্যদিকে ভারতীয় সেনার দাবি, তারা প্রকৃত সীমান্তরেখা সম্পর্কে সম্যক ওয়াকিবহাল। কাজেই সীমান্ত লঙ্ঘন করার কোনও প্রশ্নও ওঠে না। নিজেদের সীমান্তের মধ্য থেকেই এই নজরদারি চালায় সেনাবাহিনী। উল্লেখ্য, ২০১৭-র ডিসেম্বর মাসের বেশ কয়েকটি দিন বিপুল সংখ্যক ভারতীয় সেনা আসাফিলা এলাকায় নজরদারি চালিয়েছিল। চিন সেই বিষয়টিও বিপিএম বৈঠকে তোলে। প্রসঙ্গত, ভারত-চিন সীমান্তে কোনও সমস্যা দেখা দিলে সেই সমস্যা মেটাতে বর্ডার পার্সোনাল মিটিং হয়ে থাকে।
সম্প্রতি নয়াদিল্লি ও বেজিং একে অন্যের বিরুদ্ধে একাধিকবার সীমান্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে। গত বছর ডোকলাম নিয়ে দু’দেশের সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটেছিল। ডোকলাম নিয়ে পরিস্থিতি এতটাই ঘোরালো হয়েছিল যে, শান্তি ফেরাতে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বিষয়টি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে হয়। তবে ডোকলামের ঘটনার পর ভারতীয় সেনা আগের তুলনায় অনেক সতর্ক হয়েছে। এক উচ্চপদস্থ সেনা আধিকারিক জানিয়েছেন, “আমরা যে কোনও ধরনের পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত আছি।” ডোকলামের ঘটনার প্রেক্ষিতে সম্প্রতি অরুণাচল প্রদেশে চিন সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় সেনার সংখ্যা প্রচুর বাড়ানো হয়েছে। ২৪ ঘণ্টাই চলছে নজরদারির কাজ। সংবেদনশীল ওই এলাকায় হেলিকপ্টারেও নজরদারি চালাচ্ছে সেনা। সেনা নজরদারি বাড়ানো হলেও কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার কূটনৈতিক পথে চিনের সঙ্গে এই সীমান্ত সমস্যা মেটাতে নিয়মিত আলোচনা চালাচ্ছে। কারণ পাকিস্তানকে সব দিক থেকে মদত দিয়ে থাকে চিন। জঙ্গিরা ইসলামাবাদের মাটি থেকেই ভারতে নাশকতা চালায়। তাই পাকিস্তানকে একঘরে করতেই ভারত দ্রুত যাবতীয় মতপার্থক্য দূর করে বেজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চায়।
[‘সাধারণ মানুষ জল পাচ্ছে না, তখন কীসের আইপিএল সেলিব্রেশন?’]
The post অরুণাচলে সীমান্ত লঙ্ঘন করছে ভারতীয় সেনা, অভিযোগ চিনের appeared first on Sangbad Pratidin.