সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চিনা ফৌজের লড়াইয়ের পর কেটে গিয়েছে বেশ কয়েক মাস। গত বছরের জুন মাসে দুই পড়শি দেশের মধ্যে ঘটা ভয়াবহ সীমান্ত সংঘাতের জেরে জড়ো হওয়া যুদ্ধের মেঘ কিছুতেই কাটছে না। বিনা প্ররোচনায় আগ্রাসন যে চিনই চালিয়েছিল, তা সাফ করে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রক জানিয়েছে, লাদাখে একতরফাভাবে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বদলে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছিল চিন (China)। দ্বিপাক্ষিক চুক্তি মতে ভারত-চিন সীমান্তে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার না করার চুক্তি থাকায় ‘অপ্রচলিত অস্ত্র’ নিয়ে হামলা চালায় লালফৌজের জওয়ানরা।
[আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশের লাভ জেহাদ বিরোধী আইন কি আদৌ বৈধ? খতিয়ে দেখবে সুপ্রিম কোর্ট]
গত বছরের মার্চ মাস থেকেই লাদাখ সীমান্তে রীতিমতো আগ্রাসী হয়ে ওঠে চিন। ভারতীয় জমিতে লালফৌজের অনুপ্রবেশের ফলে সংঘর্ষে রক্তাক্ত হয়ে ওঠে গালওয়ান উপত্যকা। সীমান্ত রক্ষায় প্রাণ বিসর্জন দিতে হয় ২০জন ভারতীয় জওয়ানকে। বিস্তর ক্ষতির সম্মুখীন হলেও, সেই কথা চেপে যায় পড়শি দেশটি। শুধু তাই নয়, প্যাংগং হ্রদের উত্তরে ফিঙ্গার ৪ থেকে ৮ পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার এলাকা দখল করে রেখেছে চিন। পালটা গত আগস্ট মাসে হ্রদটির দক্ষিণ পারের পাহাড় চুড়োগুলির দখল নেয় ভারতীয় ফৌজ। চিনের দাবি, ভারত প্রথম দক্ষিণ পার থেকে ফৌজ সরাক। পালটা ভারত সাফ জানিয়েছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় (LAC) গত এপ্রিল-মে মাসের অবস্থানে ফিরে যাক লালফৌজ। এহেন পরিস্থিতিতে ২০২০ সালে সীমান্তে চিনা গতিবিধি নিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রকের রিপোর্টে সাফ বলা হয়েছে, “সম্পূর্ণ বিনা প্ররোচনায় একতরফাভাবে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বদলে দেওয়ার চেষ্টায় আগ্রাসন চালায় চিন। অপ্রচলিত অস্ত্র ব্যবহার করে সে দেশের সৈনিকরা। তবে পূর্ব লাদাখে আমাদের অবস্থান ও জমি রক্ষায় লালফৌজকে কড়া জবাব দেওয়া হয়েছে।”
উল্লেখ্য, গালওয়ান উপত্যকায় ভারতীয় জওয়ানদের উপর দা, পেরেক বসানো লাঠি, বল্লমের মতো প্রাণঘাতী ও সেনায় অপ্রচলিত হাতিয়ার ব্যবহার করেছিল চিনা জওয়ানরা। এবার সরকারিভাবে সেই কথা জানাল প্রতিরক্ষামন্ত্রক। এদিকে, সীমান্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে বেশ কয়েকদফা বৈঠক করেছে ভারত ও চিন। কিন্তু ফল কিছুই মেলেনি। সম্প্রতি প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ স্পষ্ট জানিয়েছেন যে গত কয়েক মাস ধরে চিনের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনার পরও কোনও অগ্রগতি হয়নি। সীমান্ত সমস্যার সমাধান হওয়া তো দূরের কথা, নিজেদের এলাকায় পরিকাঠামো তৈরির কাজ করছে ড্রাগন। তাই এখনই লাদাখ সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহার করাটা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। ফলে আপাতত লাদাখে পরিস্থিতি যে উদ্বেগজনক তা বলাই বাহুল্য।