সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অবশেষে শ্রীলঙ্কা ছাড়ল চিনের ‘নজরদারি জাহাজ’ ‘ইউয়ান ওয়াং ৫’। হামবানটোটা বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ছ’দিন পর সোমবার নোঙর তুলে জাহাজটি। সূত্রের খবর, এই অত্যাধুনিক জাহাজটির পরবর্তী গন্তব্য হচ্ছে চিনের জিয়াং ইন বন্দর। গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে ভারত।
হামবানটোটা বন্দরের হারবার মাস্টার নির্মল সিলভা জানিয়েছেন, গতকাল বিকেল চারটে নাগাদ বন্দর ছাড়ে চিনা জাহাজটি। এই অত্যাধুনিক জাহাজটি পরবর্তী গন্তব্য হচ্ছে চিনের জিয়াং ইন বন্দর। শ্রীলঙ্কার প্রশাসন জানিয়েছে, ১৬ থেকে ২২ আগস্ট জাহাজটি হামবানটোটায় ছিল। সে সময় জাহাজের কর্মীবদল হয়নি। এবং চিনা দূতাবাসের অনরোধ মতো জাহাজটিকে সমস্ত সহায়তা দেওয়া হয়েছে। বলে রাখা ভাল, হামবানটোটা বন্দর চিনা ঋণে তৈরি। সেই বিপুল পরিমাণের অর্থ ফেরত দিতে না পারায় বন্দরটি ৯৯ বছরের জন্য বেজিংকে লিজ দিয়েছে কলম্বো। ভারতের উদ্বেগ, এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সেখানে সামরিক ঘাঁটি তৈরি করবে চিন।
[আরও পড়ুন: সন্ত্রাসবাদ থেকে সীমান্ত বিবাদ, রাষ্ট্রসংঘে চিনের দ্বিচারিতা নিয়ে সরব ভারত]
উল্লেখ্য, প্রাথমিকভাবে স্থির হয়েছিল, ১১ আগস্ট ‘ইউয়ান ওয়াং ৫’ চিন (China) নিয়ন্ত্রিত হামবানটোটা বন্দরে নোঙর করবে। কিন্তু ভারতের আপত্তিতে তা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য পিছিয়ে দিতে বলে শ্রীলঙ্কা। ভারত মহাসাগরে চিনের উপস্থিতি এবং শ্রীলঙ্কার উপর বেজিংয়ের প্রভাব বৃদ্ধি নিয়ে সন্দিহান ভারত। কিন্তু শ্রীলঙ্কার বন্দরমন্ত্রী নির্মল পি সিলভা জানিয়েছিলেন, বিদেশমন্ত্রকের ছাড়পত্রে বলা হয়েছে, ১৬ থেকে ২২ আগস্ট জাহাজটি হামবানটোটায় থাকবে। সেইমতো জাহাজটিকে নোঙর করার ছাড়পত্র দেয় দ্বীপরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রক।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, আর্থিক দুরবস্থার কবলে পড়া শ্রীলঙ্কার দিকে সাহাজ্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ভারত (India)। কয়েকদিন আগেই দ্বীপরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে সমুদ্রে নজরদারি চালানোর বিমান দেওয়া হয় শ্রীলঙ্কাকে। একটি ডরনিয়ার বিমান তুলে দেওয়া হয় দ্বীপরাষ্ট্রের হাতে। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিংহের উপস্থিতিতে সেদেশের হাতে এই বিমানটি তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু উপহার পেয়েও কলম্বোর গলেনি তা স্পষ্ট।
নয়াদিল্লির আশঙ্কা, এই জাহাজে মজুত অত্যাধুনিক ও শক্তিশালী সেন্সর ও রাডারের মাধ্যমে ভারতীয় সেনাবাহিনীর উপর নজরারি চালাবে লালফৌজ। ভারতীয় ফৌজের ইউনিট ফর্মেশন, মিসাইল সাইট, যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিনের সুলুক সন্ধান পেতেই এই জাহাজ পাঠিয়েছে চিন। তাই কোনওমতেই এই জাহাজটিকে শ্রীলঙ্কা জায়গা দিক তা চাইছিল না নয়াদিল্লি।