shono
Advertisement
Biswanath Basu

'কোনও আক্ষেপ নেই, চোখের নিমেষে কেটে গেল বছরগুলো...', অভিনয় জীবনের রজতজয়ন্তীতে স্মৃতিচারণা বিশ্বনাথ বসুর

আজ আমার অদ্ভুত লাগছে। বিদেশে বেড়াতে এসেও সেটা উপভোগ করছি।
Published By: Arani BhattacharyaPosted: 09:35 PM Jun 01, 2025Updated: 09:35 PM Jun 01, 2025

অরণী ভট্টাচার্যঃ চোখের নিমেষে কেটে গেল ২৫টা বছর। এই ২৫ বছরের অভিনয় জীবনে দর্শক তাঁকে পেয়েছে নানা স্বাদের চরিত্রে। কার কথা বলছি ভাবছেন? তিনি আর কেউ নন, জনপ্রিয় অভিনেতা বিশ্বনাথ বসু। রবিবারই ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর অভিনয় জীবনের রজতজয়ন্তী। এই বিশেষ দিনে সুদূর ইটালিতে সপরিবারে ঘুরছেন তিনি। তাঁর মাঝেই সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালের সঙ্গে ভাগ করে নিলেন তাঁর পঁচিশ বছরের এই দীর্ঘ জার্নির গল্প। 

Advertisement

আজ পিছনে ফিরে তাকালে কী মনে পড়ে? "মনে পড়ে, জুলাই মাস... সেদিন বৃষ্টি হচ্ছিল। গ্রামের বাড়ি থেকে বন্ধু রবিনের গাড়ি করে আমি, মা-বাবা ও ভাই ব্যারাকপুরে এসে উঠেছিলাম।সেখান থেকে টলিউডে পা রাখা।সেই শুরু আমার জার্নি।দেখতে দেখতে এতগুলো বছর! ২০০টির বেশি ছবি করেছি। এতগুলো সিরিয়াল করেছি। 'সুবর্ণলতা'র মতো ধারাবাহিকে কাজ করেছি। আজ বড়ই অদ্ভুত লাগছে। আমার কোনও খেদ নেই। বিদেশে বেড়াতে এসেও উপভোগ করছি বিষয়টা। বিদেশেও বাঙালি দর্শক আমাকে ভালোবাসায় ভরিয়ে দিয়েছে। আতিথেয়তা, ভালোবাসা কোনও কিছুর অভাববোধ করছি না। তবে হ্যাঁ, আক্ষেপ একটাই, তনুবাবুর সঙ্গে (তরুণ মজুমদার) কাজের খুব ইচ্ছা ছিল। সেটা করা হল না। এটাই আমার অভিনয় জীবনের সবথেকে বড় আক্ষেপ। কারণ, আমি তনুবাবুর ছবি দেখে বড় হয়েছি। তাঁর ঘরানার ছবির চরিত্রদের সঙ্গে নিজের মিল খুঁজে পাই। তাই খুব চেয়েছিলাম তাঁর সঙ্গে কাজ করতে। ঋতুদার সঙ্গেও কাজ করিনি কিন্তু তাতে কখনও এমন মনে হয়নি। কারণ, আমার মনে হয়েছে যে তাঁর ছবির সঙ্গে আমার ওয়েভলেন্থ হয়তো মিলত না। তবে তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছিল একবার। এটুকুই আক্ষেপ। বাকি শুধুই প্রাপ্তি।''

বিশ্বনাথ বসু, ছবি: ইনস্টাগ্রাম

গ্রামের ছেলে বলেই কি প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষেরর মনটা পড়ে ফেলতে পারেন? "হ্যাঁ, ঠিকই। গ্রামের মানুষ খুবই সাধারণ হয়। খুব স্বচ্ছ হয় তাঁদের মন। সারাদিনের খাটনির পর একটু বিনোদনের জন্য পর্দার সামনে বসে। এ রাজ্যে ৯০ শতাংশই গ্রাম। ২৫ বছর নিয়মিত যাতায়াত গ্রামে আমার।"

অভিনয়ের ইচ্ছা কবে থেকে? "এই জগৎটা খুব টানত। ছোট থেকেই ইচ্ছে ছিল। তবে 'শত্রু' সিনেমাটা দেখার পর সেই ইচ্ছে কয়েকগুণ বেড়ে যায়। বাড়িতে এই ছবির আলোচনা শুনে মনে হত, আমিও অভিনয় করব। আসলে এমন কোনও কাজ করার ইচ্ছা ছিল যাতে মানুষ আমাকে চিনবে।''

২৫ বছর কাটিয়ে আজ কি মনে হয় যে দক্ষতা থাকলে ইন্ডাস্ট্রিতে কেউ কাউকে নিচে নামাতে পারে না? "একদমই। আসলে টালিগঞ্জে আমার কাজ করতে আসার প্রথম শর্ত ছিল আমি ভালো কাজ করব। আমি অভিনয় করব, এটাই প্রথম ও শেষ শর্ত। এছাড়া আর কোনও শর্ত থাকতে পারে না। আমি এই ইন্ডাস্ট্রি পরিবারের সঙ্গে সুখে দুখে থাকব, আগলে রাখব। এবং সবটাই ইন্ডাস্ট্রির প্রয়োজনে। আবার আমার ইন্ডাস্ট্রিকে কেউ ছোট করলে বুক চিতিয়ে দাঁড়াব। তোমাকে পড়ে থাকতে হবে তোমার কাজের প্রতি। ডেডিকেটেড থাকতে হবে তবেই সময় একদিন সঙ্গ দেবে। তোমারও সময় হবে।''

সস্ত্রীক বিশ্বনাথ বসু, ছবি: ইনস্টাগ্রাম


আজ কোনও বিশেষ সেলিব্রেশন হল? "দেবিকা গতকাল রান্না করেছিল ফ্রায়েড রাইস আর চিলি চিকেন। কারণ কাল ছোট ছেলের জন্মদিন ছিল। কেক কাটা হয়েছিল। তবে আজ আর কিছু না। আজ যেন আমি ভাসছি। ছেলেরাও অনেক প্রশ্ন করছে। সেই প্রথমদিন যেদিন শুটিং করেছিলাম, টালিগঞ্জে গিয়েছিলাম সেসব মনে পড়ছে। ১৯৯৭ সালে প্রথম টালিগঞ্জে গিয়েছিলাম। কাজ পেতে কিছু বছর সময় লেগেছিল। এসব কিছুই মনে পড়ছে। আমার সঙ্গে সঙ্গে আমার ছেলেরাও খুব এক্সাইটেড। আমি কখনও স্টার হতে চাইনি। আমি চেয়েছি আমাকে মানুষ বলুক আপনার অমুক চরিত্রটা খুব ভালো লেগেছে।''

সংসার আর কাজ, একসঙ্গে কীভাবে সামলালেন? ''সংসার আর কাজ দুটোকে সবসময় ব্যালেন্স করা সম্ভব হয় না। জোয়ারভাটা চলেই। আমি জীবনটাকে খুব সিম্পল ভাবে চাই। কাউকে আঘাত দিতে চাই না। ভাই-বোন বা মা-বাবার সঙ্গে ঝগড়া হলে যেভাবে মিটিয়ে নিই সংসারেও সেটা করতে হয়। সরি বলাটা খুব দরকার। সেটাতেই সবটা ব্যালান্স থাকে।"

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • গ্রামের বাড়ি থেকে বন্ধু রবিনের গাড়ি করে আমি, মা-বাবা ও ভাই ব্যারাকপুরে এসে উঠেছিলাম।
  • ২০০টির বেশি ছবি করেছি। এতোগুলো সিরিয়াল করেছি। 'সুবর্ণলতা'র মতো ধারাবাহিকে কাজ করেছি।
  • আক্ষেপ একটাই, তনু বাবুর সঙ্গে কাজের খুব ইচ্ছা ছিল। সেটা করা হল না।
Advertisement