'বাংলায় দুই ভাই খুব শীঘ্র আসব', 'খাকি: দ্য বেঙ্গল চ্যাপ্টার'-এর মঞ্চেই প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ইঙ্গিত দিলেন জিতের সঙ্গে বাংলা ছবি করার। শম্পালী মৌলিক
মেগা ইভেন্ট। হাইভোল্টেজ তারকা। জমে গেল নীরজ পাণ্ডের 'খাকি: দ্য বেঙ্গল চ্যাপ্টার'-এর ট্রেলার লঞ্চের অনুষ্ঠান। নেটফ্লিক্স-এর এই শো নিয়ে শুরু থেকেই চর্চা ছিল। কারণ, সিংহভাগ শুটিং হয়েছে মহানগরে। 'খাকি'-র প্রথম সিজনের ফোকাস ছিল বিহার, এবার বাংলা। ট্রেলার জানান দিল অ্যাকশন থ্রিলার দর্শক টানবে। নীরজ শো ক্রিয়েটর আর পরিচালনায় দেবাত্ম মণ্ডল ও তুষারকান্তি রায়। বুধবার সন্ধেরাতে রয়্যাল ক্যালকাটা টার্ফ ক্লাবের মতো ভেনু বেছে নেওয়াতেই স্পষ্ট, মুম্বইয়ের মেজাজ মিশে যাবে কলকাতার প্রেক্ষাপটে। নেটফ্লিক্স ইন্ডিয়ার তরফে সিরিজ হেড তানিয়া বামি, আর পুরো কাস্ট উপস্থিত ছিলেন। রাজকীয় কায়দায় প্রথমে আবির্ভূত হলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, তারপর একে একে নীরজ পাণ্ডে, জিৎ, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, চিত্রাঙ্গদা সিং, ঋত্বিক ভৌমিক, আদিল জাফর খান, পুজা চোপড়া প্রমুখ। মিমো চক্রবর্তী, শুভাশিস মুখোপাধ্যায়, শ্রুতি দাস সিরিজে থাকলেও ইভেন্টে দেখা গেল না।
অনুষ্ঠান সঞ্চলনায় ছিলেন আরজে প্রভীন। এর সঙ্গে প্রসেনজিৎ এবং জিৎ-এর অনুরাগীদের তীব্র উল্লাস মনোযোগ কেড়ে নিতে অত্যন্ত কার্যকরী ছিল। শুরুতে নীরজ জানালেন, এ শহরের স্মৃতি বলতে প্রথমেই স্কুল পালানোর কথা মনে হয়। বিহার চ্যাপ্টারের সাফল্যের পর কলকাতা 'অবভিয়াস' ছিল। কারণ, প্রাণের শহর। জিৎ বললেন, "লোকজনের যা প্রতিক্রিয়া তাতে ভালো লাগছে। এই সিরিজ যেন আমার পরিচিতি বাড়িয়ে দেয়, আশা করব।' এই প্রথম জিতের ওয়েবের কাজ তাও আবার হিন্দিতে এবং নেটফ্লিক্সের মতো প্ল্যাটফর্মে। সেই সঙ্গে প্রথমবার বুম্বাদার সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করলেন।
প্রসেনজিৎ শুরু থেকেই স্ট্রেট ব্যাটে এবং নির্ভার উচ্চারণে স্পষ্ট করলেন তাঁর আত্মবিশ্বাস এবং বিনয়। বলে দিলেন, "১৪/১৫ বছর ধরে আলাদা কিছু করার চেষ্টা করছি, ঠিক ভুল জানি না। নীরজ আমাকে ফোন করেছিল। পরে জিতের সঙ্গে ফোনে কথা হয়, ওকে বলেছিলাম, 'আয় খুকু আয়'-এর পর এমন কিছু করতে চাই যাতে রাতে ঘুম না হয়। সত্যি বলতে এমন চরিত্র আমি গত ৪০ বছরে করিনি। আমার চরিত্রটা আপাতদৃষ্টিতে রাজনীতিকের। বাকিটা সকলে ২০ মার্চ দেখবেন।" এর কিছু পরেই এল মোক্ষম প্রশ্ন, বাংলায় যা হয়নি, একটা হিন্দি প্রোজেক্ট তাহলে করে দেখাল? প্রসেনজিৎ-জিৎকে একসঙ্গে পর্দায় এনে দিল। প্রসেনজিৎ সপাটে উত্তর দিলেন, 'বাংলায় হয়নি তবে প্রতিমাসে একবার করে জিতের সঙ্গে ফোনে কথা হত। এটা ডেস্টিনি। আমি জিতের প্রযোজনায় কাজ করেছি (আয় খুকু আয়)। অনেক দিনের সম্পর্ক আমাদের। স্ক্রিনে একসঙ্গে না হলেও, ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিলই। আর স্ক্রিনে যখন একসঙ্গে এলাম, এখানেই শুট হয়েছে। এবং সেটা ইতিহাস তৈরি করবে।' জিতের কাছে সে প্রসঙ্গ যেতেই বললেন, 'বুম্বাদার সঙ্গে কাজ এভাবেই হওয়ার ছিল।' বাংলায় কি হবে? প্রসেনজিৎ মুহূর্তে উত্তর দিলেন, 'বাংলায় আমরা করব। বাংলায় আমরা দুই ভাই খুব শিগগির আসব। বি রেডি।' ব্যস, ক্লাইম্যাক্স তৈরি হয়ে গেল ওখানেই। দুই মহাতারকার একসঙ্গে ছবি করার প্রতিশ্রুতি 'খাকি সিজন টু'-এর মঞ্চেই পাওয়া গেল।
সিরিজের সঙ্গে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের যোগের গুঞ্জন প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করতে নীরজ মুচকি হেসে রহস্য জিইয়ে রেখে বললেন, 'কিপ লুকিং'। জানা গেল, পুজা চোপড়া এখানে জিতের বিপরীতে। তাঁর জন্ম কলকাতাতেই। চিত্রাঙ্গদা এই শহরেই 'বব বিশ্বাস' শুট করেছেন। তার পরে 'খাকি সিজন টু'-ও, ফলে গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়েছে এই শহরের সঙ্গে। শাশ্বত ট্রেলারেই অত্যন্ত উজ্জ্বল, অকপটে বললেন, "বাঘা' চরিত্র পাওয়াই ছিল সবচেয়ে বড় থ্রিল। আমি নীরজের যে কোনও কাজে একটা দৃশ্য অন্তত করতে চেয়েছিলাম।" পরমব্রতও এই সিরিজের কাজ নিয়ে আশাবাদী। আর ঋত্বিক-আদিলের বন্ডিং নিয়ে শুরুতে টেনশন থাকলেও চোখ টানবে নিশ্চিত। সব মিলিয়ে প্রসেনজিৎ-জিতের দ্বৈরথ, রাজনীতি, ভিন্ন মোড়কে বাংলার অপরাধ জগতের কাহিনি উত্তেজনা ছড়াবে এই সিজনে, এখনই বলে দেওয়া যায়।
