সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুক্রবারই আগাম জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান কুণাল কামরাকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত রক্ষাকবচ দিয়েছে মাদ্রাজ হাই কোর্ট। তার দিন দুয়েক কাটতে না কাটতেই সোম সকালে কৌতুকশিল্পীর দাদরের বাড়িতে হানা দিল মুম্বই পুলিশের একটি টিম। পুলিশি অভিযান শেষে কী জানালেন কুণাল কামরা?
কৌতুকছলে মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিণ্ডেকে ‘গদ্দার’ তকমা সেঁটে মহাবিপাকে কুণাল কামরা। শিণ্ডে সমর্থকদের কোপের মুখে পড়েছেন কৌতুক শিল্পী। মুম্বইয়ের খার এলাকার যে হোটেলের ভিতর ‘হ্যাবিট্যাট’ নামের স্টুডিওয় শো করেছিলেন তিনি, সেখানেও কার্যত ধ্বংসলীলা চালায় শিবসেনা সমর্থকরা। শুধু তাই নয়, মার্চের ২৪ তারিখ খার থানায় এফআইআর দায়ের করেন শিবসেনা বিধায়ক মুর্জি প্যাটেল। তার ভিত্তিতেই কুণালকে একাধিকবার সমন পাঠানো হয়েছিল মুম্বই পুলিশের তরফে। তবে নানাবিধ কারণ দেখিয়ে থানায় হাজিরা দেননি তিনি। তাই শেষমেশ কুণাল কামরার দুয়ারেই পৌঁছে গেল পুলিশ। তবে পুলিশ যেতে না যেতেই ফের স্বমহিমায় কুণাল কামরা। পালটা কটাক্ষ করতে পিছপা হলেন না।
কুণাল একটি ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, 'বিগত দশ বছর আমি যে বাড়িতে থাকি না, সেখানে যাওয়া সময়ের অপচয় আর প্রশাসনের অপব্যবহার ছাড়া আর কিছুই নয়!' এদিকে কৌতুকশিল্পীর পোস্ট দেখে হেসে গড়িয়েছেন তাঁর ভক্তরা। তাঁদের প্রশ্ন, 'মুম্বই পুলিশ অভিযানের আগে এটুকুও খবর রাখেনি যে কুণাল কামরা ওই বাড়িতে আর থাকেন না?' অন্যদিকে, বলিউড মাধ্যম সূত্রে খবর, বর্তমানে তামিলনাড়ুর বাসিন্দা হলেও কুণাল কামরার কি দাদরের বাড়িতে যাতায়াত রয়েছে? সেটা জানতেই খর থানার পুলিশ গিয়েছিল। তবে সেখানে কাউকে না পেয়ে হতাশ হয়েই ফিরতে হয়েছে ওই টিমকে।
সম্প্রতি মুম্বইয়ের এক হোটেলে কৌতুক পরিবেশনের সময় শিব সেনার দ্বিখণ্ডিত হওয়াকে ব্যাঙ্গ করেন কুণাল। নাম না করে একনাথ শিণ্ডেকে 'গদ্দার' বলেন। জনপ্রিয় হিন্দি গানের প্যারোডির সেই ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই তেতে ওঠেন শিণ্ডে সমর্থকরা। শিল্পীর ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, কমপক্ষে '৫০০টি হুমকি ফোন' পেয়েছেন তিনি। যে হোটেলে এই শো রেকর্ড করা হয়েছিল, রবিবার সেখানে হামলা চালায় শিব সেনা (শিণ্ডে) সমর্থকরা। পাশাপাশি মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবিসেরও রোষের মুখে পড়েছেন কুণাল। ফড়ণবিসের দাবি, অবিলম্বে কুণালের ক্ষমা চাওয়া উচিত। যদিও নিজের বক্তব্যে অনড় কুণাল জানিয়েছেন, ক্ষমা তিনি চাইবেন না। বরং আইনের পথে হেঁটে পরিস্থিতির মোকাবিলা করবেন।
ইতিমধ্যেই দু'বার মুম্বই পুলিশের তরফে সমন পাঠানো হয়েছে কৌতুকশিল্পীকে। এর মধ্যেই আরও একটি ভিডিওতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণকে নিশানা করার অভিযোগ উঠেছে কুণালের বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে রক্ষাকবচ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন কুণাল। কর্মসূত্রে মুম্বইয়ে থাকলেও আদপে তিনি তামিলনাড়ুর বাসিন্দা। তাই মাদ্রাজ হাই কোর্টেরই দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কৌতুকশিল্পীর আশঙ্কা, মুম্বই থেকে ফিরলেই গ্রেপ্তার করা হতে পারে তাঁকে। অবশেষে তাঁর আগাম জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে আদালতের তরফে জানানো হয়, "আবেদনকারী সংবাদপত্রের রিপোর্ট (তাঁর মন্তব্যের জন্য তাঁকে যে হুমকি দেওয়া হয়েছে) জমা দিয়েছেন। ওঁকে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে বন্ড দেওয়ার শর্তসাপেক্ষে আগাম জামিন দেওয়া হল।"