সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বয়স মাত্র ৩৭। এরই মধ্যে বলিউডে দারুণ অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। সিনেসমালোচক থেকে দর্শকমহলের কলমে ঝকঝকে মার্কশিট। ‘টুয়েলভথ ফেল’ দিয়ে বক্স অফিসের অঙ্কেও ফুলমার্কস নিয়ে পাশ করেছেন। টেলিপর্দা থেকে অভিনয় সফর শুরু করা সেই ছেলেটি বড়পর্দাতেও অভিনেতা হিসেবে নিজের জাত চিনিয়েছেন। যাঁর হাতে ধরা দিয়েছে জাতীয় পুরস্কারও। কিন্তু হঠাৎ অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন বিক্রান্ত মাসে। আর জানা মাত্রই অনুরাগীরা হতাশ।
তা কেমন ছিল এই অভিনেতার বলিউড সফর?
বিক্রান্তের অভিনয় কেরিয়ার শুরু ২০০৭ সালে। ধারাবাহিকের নাম 'ধুম মাচাও ধুম'। তবে ২০০৯ সালের 'বালিকা বধূ' সিরিয়াল থেকেই নজর কাড়েন সবচেয়ে বেশি। এরপর ছোটপর্দায় একের পর এক ধারাবাহিক। 'গুমরাহ', 'কুবুল হ্যায়', 'ইয়ে হ্যায় আশিকি'। ঠিক এই সময় বলিউড থেকে ডাক। ২০১৩ সালে প্রথম ছবি 'লুটেরা'।
২০১৩ থেকে ২০২৪। বিক্রান্ত খুব অল্প সময়ের মধ্যে দর্শক থেকে সমালোচকদের প্রশংসা পেয়েছেন। পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কারও। ঝুলিতে ২২ টি বলিউড ছবি।
আ ডেথ ইন দ্য গঞ্জ ছবিতে বিক্রান্ত।
বিক্রান্তের সেরা পাঁচ সিনেমা
আ ডেথ ইন দ্য গঞ্জ
পরিচালক কঙ্গনা সেনশর্মার 'আ ডেথ ইন দ্য গঞ্জ' ছবিতে সত্তু চরিত্রে দেখা গিয়েছিল বিক্রান্তকে। আবেগপ্রবণ এক যুবকের চরিত্রে অভিনয় করে চমকে দিয়েছিলেন বিক্রান্ত। বলা ভালো এই ছবি থেকেই আলাদা করে দর্শকদের নজরে পড়েছিলেন তিনি।
টুয়েলভথ ফেল ছবিতে বিক্রান্ত।
ছপক
প্রথম থেকেই বিক্রান্তের অভিনয় বলিউডের হিরোদের থেকে আলাদা। তাঁর অনুরাগীরা মনে করেন, বিক্রান্ত অভিনেতা। বলিউড হিরে নন। বিক্রান্ত নিজেও সেটা বিশ্বাস করেন। আর তাই তো দীপিকা পাড়ুকোনের মতো স্ট্রং অভিনেত্রীর বিপরীতে, খুব অল্প স্ক্রিন টাইমেও নজর কেড়ে নেন বিক্রান্ত। পরিচালক মেঘনা গুলজারে 'ছপক' ছবি জলজ্যান্ত প্রমাণ।
হাসিন দিলরুবা
তবে ইমেজ ভাঙতে বিক্রান্ত ওস্তাদ। যাঁরা মনে করেন, বিক্রান্ত আর যাই করুন না কেন, রোমান্টিক চরিত্রে অভিনয় করতে পারবেন না। তাঁদের ভুল ভাঙালেন বিক্রান্ত নিজেই। তাপসী পান্নুর বিপরীতে সই করলেন 'হাসিন দিলরুবা'। বিক্রান্ত বুঝিয়ে দিলেন পর্দার রোমান্সেও পটু তিনি!
হাসিন দিলরুবা ছবিতে বিক্রান্ত।
টুয়েলভথ ফেল এবং সেক্টর ৩৬
চরিত্রের জন্য যেকোনও চ্যালেঞ্জই নিতে পারেন বিক্রান্ত। তার প্রমাণ 'টুয়েলভথ ফেল' এবং 'সেক্টর ৩৬'। দুটি ছবিই একেবারে ভিন্ন ধারার। তবে চরিত্রে জন্য যে চ্যালেঞ্জ তিনি নিয়েছিলেন, তা দুটি ছবিতেই একেবারে স্পষ্ট। দুটি ছবিই সত্য ঘটনার অবলম্বনে। বিধু বিনোদ চোপড়ার 'টুয়েলভথ ফেল' আইপিএস অফিসার মনোজ কুমার শর্মার বায়োপিক। অন্যদিকে, 'সেক্টর ৩৬' নিঠারি হত্যার আদলে তৈরি হয়েছিল। এই ছবিতে আপাদমস্তক নিজেকে বদলে নিয়েছিলেন বিক্রান্ত। এই ছবিতে কম সংলাপে, যেন চোখ দিয়েই অভিনয় সেরেছিলেন তিনি।
সেক্টর ৩৬ ছবিতে বিক্রান্ত।
তবে শুধু সিনেমাই নয়, বহু সিরিজে নজর কেড়েছিলেন বিক্রান্ত। যার মধ্যে রয়েছে 'মির্জাপুর' ও 'মেড ইন হেভেন'।
অবসর ঘোষণা করে বিক্রান্ত ইনস্টাগ্রামে লিখেছিলেন, ‘গত কয়েক বছরের এই সফর সত্যিই অসাধারণ। এভাবে পাশে থাকার জন্য আপনাদের প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তবে যত অগ্রসর হচ্ছি, বুঝতে পারছি যে, এবার ঘরে ফেরার সময় হয়েছে। নিজেকে নতুন করে গড়ে তোলার সময় হয়েছে। একজন স্বামী কিংবা বাবা হিসেবে বা একজন অভিনেতা হিসেবেও। তাই ২০২৫ সালে আমরা শেষবারের জন্য একবার দেখা করব। যতক্ষণ না সময় সঠিক সময় আসবে।’ সেই পোস্টেই অভিনেতার সংযোজন, ‘শেষ ২টো সিনেমা এবং আরও কত স্মৃতি। সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ সবকিছুর জন্য। চিরকাল ঋণী থাকব।’ বিক্রান্ত মাসের এই পোস্ট দাবানল গতিতে ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই মনখারাপ ভক্তদের। কিছুতেই তাঁর অভিনয় থেকে বাণপ্রস্থে যাওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না অনেকে।