অর্ণব আইচ: কোকেন কাণ্ডে এবার কলকাতা পুলিশের জেরার মুখে সিআইএসএফ জওয়ানরাও। তাঁদের ব্যাপারে তথ্য চেয়ে ইতিমধ্যেই লালবাজারের পক্ষ থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে সিআইএসএফকে (CISF)। এবার সেই উত্তরের অপেক্ষায় লালবাজার।
পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, নিউ আলিপুর থেকে কোকেন উদ্ধার হওয়ার আগের দিন বিজেপি নেতা রাকেশ সিং গাড়ি করে নিউ আলিপুরে অমৃতরাজকে নিয়ে রেইকিতে বেরিয়েছিলেন। এ ছাড়াও অন্য সঙ্গী আরিয়ানকে নিয়েও আলাদাভাবে নিউ আলিপুরে রেইকি করেন রাকেশ সিং। কীভাবে বিজেপির যুবনেত্রী পামেলা গোস্বামীর গাড়িতে কোকেন রাখা হবে, তার ছক তখনই কষা হয়। কিন্তু তদন্ত করে গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে, দু’বারই রেইকির সময় গাড়িতে ছিলেন অন্তত দু’জন করে সিআইএসএফ কর্মী।
[আরও পড়ুন : এবার কফি হাউসেও গেরুয়া সমর্থকদের ‘তাণ্ডব’! শহরে নিন্দার ঝড়, পালটা দিল বিজেপিও]
পামেলা গোস্বামীর গাড়িতে মাদক রেখেছিল রাকেশ সিংয়ের সঙ্গী অমৃতরাজ। পামেলাও তার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান। তদন্তে জানা যায়, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে যখন রাকেশ সিং অমৃতরাজকে নিয়ে নিউ আলিপুরে রেইকিতে বের হন, তখন গাড়ির চালকের সিটে ছিলেন অমৃত। সে নিজেই গাড়ি চালাচ্ছিল। অমৃতের পাশে ছিলেন রাকেশ। পিছনের সিটে ছিলেন দু’জন নিরাপত্তারক্ষী। ওই দুই নিরাপত্তারক্ষী যে সিআইএসএফ জওয়ান, তদন্তে সেই ব্যাপারে গোয়েন্দারা নিশ্চিত হন। সিসিটিভির ফুটেজেও সেই তথ্য ধরা পড়ে। সেই কারণে ওই নিরাপত্তারক্ষীদের বক্তব্য তদন্তে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে সিআইএসএফ কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানতে চাওয়া হয়, রাকেশ সিংয়ের কতজন কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন? তাঁদের নাম ও বিবরণও জানতে চাওয়া হয়। লালবাজারের এক আধিকারিক জানান, সিআইএসএফের একটি বিশেষ শাখা রয়েছে, যেটি ভিআইপিদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়টি দেখভাল করে। মূলত ওই শাখার কাছেই চিঠি পাঠানো হয়। কিন্তু ওই চিঠির কোনও উত্তর এখনও সিআইএসএফ কর্তৃপক্ষ দেয়নি। যদিও গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, তাঁরা ওই চিঠির অপেক্ষায় রয়েছেন। কারণ, ওই সূত্র ধরেই রাকেশ সিংয়ের নিরাপত্তারক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তাঁদের কাছ থেকেই জানতে চাওয়া হবে যে, গত ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি রাকেশ সিংয়ের গাড়িতে কোন সিআইএসএফ জওয়ানরা ছিলেন। সেইমতো তাঁদের আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
[আরও পড়ুন : বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামাল দিতে আসরে শাহ-নাড্ডা, ভোররাত অবধি বৈঠকে বিজেপি নেতৃত্ব]
গোয়েন্দাদের এক আধিকারিক জানান, তাঁরা রাকেশ সিংয়ের বাড়িতে কর্তব্যরত প্রত্যেক সিআইএসএফ জওয়ানকে জেরা করতে চান। রাকেশের বাড়িতে যাঁরা যাতায়াত করতেন, তাঁদের সম্পর্কে কিছু তথ্য সিসিটিভির মাধ্যমে পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শী হিসাবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ওই জওয়ানদের জেরা করলে আরও কিছু তথ্য মিলতে পারে। ইতিমধ্যেই পুলিশের হাতে ধৃত রাকেশ সিংয়ের দুই সঙ্গীকে জেরা করে এই ব্যাপারে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। সেই তথ্যগুলি সিআইএসএফ জওয়ানদের বক্তব্যের সঙ্গেও মেলানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।