কলহার মুখোপাধ্যায়: পার্শ্বশিক্ষকদের (Parateachers) নবান্ন অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার। সুবোধ মল্লিক স্কোয়্যার থেকে মিছিল নবান্নের (Nabanna) দিকে এগোনোর পথেই আন্দোলনকারীদের আটকে দিল পুলিশ। ব্যারিকেড ভেঙে তাঁরা এগোনোর চেষ্টা করলে দু’পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয় আরও পুলিশ বাহিনী। অভিযোগ, পুলিশের বাধার মুখে পড়ে আহত হয়েছেন পার্শ্বশিক্ষক ঐক্য মঞ্চের কয়েকজন সদস্য। অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অনেকে। ৭ জনকে ভরতি করা হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ১২ জন মহিলা-সহ মোট ৭২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরিস্থিতি যে এমন হবে, আঁচ করা গিয়েছিল খানিকটা। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, শুক্রবার দুপুরে সুবোধ মল্লিক স্কোয়্যারে পার্শ্বশিক্ষক ঐক্য মঞ্চের সদস্যরা জমায়েত শুরু করার পরই বাধা দেয় পুলিশ। তা অগ্রাহ্য করেই শুরু হয় তাঁদের নবান্ন অভিযান। তাঁদের মিছিল আটকাতে পুলিশ ব্যারিকেড করে দেয়। তা ভেঙে এগোতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে মঞ্চের সদস্যদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। মিছিলকারীদের উপর পুলিশ লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ। তাতেই বেশ কয়েকজন আহত হন।কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে রাস্তায় বসে পড়েন। তাঁদের শুশ্রূষা করে ফের আন্দোলনমুখী করে তোলেন সহকর্মীরা। কয়েকজনকে ব্যাপক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ধর্মতলা চত্বরে।
[আরও পড়ুন: অক্সিজেনের খোঁজে ব্রিগেডের সভায় সাতাত্তরের বুদ্ধদেবকে চায় বামেরা!]
বেতন কাঠামো নির্দিষ্ট করার দাবিতে পার্শ্বশিক্ষকদের আন্দোলন চলছিলই। রাজ্য সরকারের কাছে বারবার এ নিয়ে দরবার করেও মেলেনি সুরাহা। তাই নতুন বছরের প্রথমদিক থেকেই তাঁরা আন্দোলন আরও জোরদার করেন। ১৮ জানুয়ারি থেকে সল্টলেকে বিকাশ ভবনের অদূরে মঞ্চ বেঁধে শুরু হয় অবস্থান বিক্ষোভ। শীতের মধ্যে খোলা জায়গায় এভাবে অবস্থান চালিয়ে যাওয়ায় অসুস্থও হয়ে পড়েন অনেকে। কিন্তু আন্দোলন থেকে সরে আসেননি কেউ। শুক্রবার তাঁরা নবান্ন অভিযানের সিদ্ধান্ত নেন। সেইমতো সুবোধ মল্লিক স্কোয়্যার থেকে মিছিল করে নবান্নমুখী হওয়ার সময়েই ধুন্ধুমার বেধে যায়।
[আরও পড়ুন: কয়লা কাণ্ডে এবার পৃথকভাবে তদন্তে নামছে সিআইডি, তৈরি হচ্ছে বিশেষ দল]
এদিন বিকেলে আবার ভোট অন অ্যাকাউন্ট পেশের জন্য বিধানসভায় যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। তা জানার পরই আন্দোলনকারীরা সিদ্ধান্ত বদলে নবান্নের বদলে বিধানসভায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চান। তা পুলিশকে জানান তাঁরা। রীতিমতো হুঁশিয়ারির সুরেই বলেন, এতে বাধা পেলে ব্যারিকেড ভেঙেই তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করবেন। ফলে তাঁদের অভিযানের জেরে বিধানসভা সংলগ্ন এলাকাতেও আরেকপ্রস্ত উত্তেজনা ছড়ানোর আশঙ্কা থাকছেই।