সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কংক্রিট বা ইট-পাথর দিয়ে তৈরি বাঁধ প্রকৃতির রোষে, জলের তোড়ে ভেঙেই যাবে। টাকাও জলে চলে যাবে। তাই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করবে প্রকৃতিই। তাই এই কাজে মোটা গাছের গুঁড়ি ব্যবহারের পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। বুধবার নবান্নে ‘যশ’ মোকাবিলায় বিভিন্ন দপ্তরের সাংবাদিক বৈঠকে ভাঙা বাঁধ তৈরিতে আরও প্রাকৃতিক উপায় অবলম্বনের কথা বললেন তিনি। এবার পূর্ব মেদিনীপুরেও ম্যানগ্রোভ অরণ্য তৈরির কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী। বনদপ্তরের দায়িত্বে আরও ৫ কোটি করে ম্যানগ্রোভ (Mangrove) চারা বসাতে হবে দুই ২৪ পরগনা লাগোয়া সুন্দরবন এবং দিঘায়।
‘আমফান’, ‘যশ’-এর মতো ঘূর্ণিঝড় বুঝিয়ে দিয়েছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কাছে কতটা অসহায় মানুষ, মানুষের তৈরির যাবতীয় কৃত্রিম সৃষ্টি। তা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমফানের পর পরিবেশ রক্ষায় বেশ খানিকটা পদক্ষেপ করেছিল কলকাতা পুরসভা। বৃক্ষরোপন ছিল তার মধ্যে অন্যতম। তারও আগে ৫ কোটি ম্যানগ্রোভ চারা বসানো হয়েছিল সুন্দরবনেও। কিন্তু আমফানে সব নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এ নিয়ে বুধবারের সাংবাদিক বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। বললেন, ”আমফানে উপড়ে যাওয়া গাছগুলো কোথায় গেল? তিনদিনের মধ্যেই রিপোর্ট চাই। রিপোর্ট দেওয়া হবে বলে, বসে থাকবেন না। তিনদিনের মধ্যেই দেবেন।”
[আরও পড়ুন: হাসপাতাল থেকে ছুটি পেলেও বাড়ি যাবেন না বুদ্ধদেব, থাকবেন সেফ হোমে]
এবার ‘যশ’ (Cylcone Yaas) তছনছ করেছে রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকা। সেসব জায়গায় এবার একই উপায়ে পরিবেশ সংরক্ষণের পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। গাছ লাগানো, গাছের গুঁড়ি দিয়ে বাঁধের কাজ করা – এমনই একগুচ্ছ কাজ দ্রুত করে ফেলার নির্দেশ দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ২৬ তারিখ ফের ভরা কোটাল। তার আগে ‘যশে’ ভেঙে যাওয়া সমস্ত বাঁধ অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে মেরামতি করতে হবে। ঘাসের মতো একপ্রকার গাছের গুঁড়ি ব্যবহার হোক। এই ক্ষতির কথা বলতে গিয়ে দিঘার বোল্ডার এবং বাঁধ কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা এঁকে বোঝালেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ”প্রতিবার কোনও না কোনও দুর্যোগে বাঁধ ভাঙছে। টাকা নষ্ট হচ্ছে জলের মতো। জলকে আমরা কী বাঁধব, জলই তো আমাদের বেঁধে ফেলছে।” তাই অযথা টাকা খরচ নয়, যথাযথভাবে পরিকল্পনামাফিক এ সবের পিছনে অর্থব্যয় করার কথা বারবার উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে হলে প্রকৃতির যত্নই যে সবচেয়ে বড় অস্ত্র হতে পারে, ‘যশ’ বিধ্বস্ত এলাকার পুনর্গঠনে এই ফর্মুলাই উঠে আসছে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শে।