নিজস্ব সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: আগামী সপ্তাহের মাঝ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) দিল্লি সফর শুরু হতে চলেছে। এই সফরে মুখ্যমন্ত্রী মূলত নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিতে আসছেন ঠিকই, সঙ্গে রাজনৈতিক দিক থেকেও এই সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে বলেই জানা গিয়েছে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেশের অ-কংগ্রেসি, অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে এবারের সফরে।
সূত্রের খবর, আগামী শনিবার তেলেঙ্গানার (Telangana) মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও, তামিলনাডুর (Tamil Nadu) মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন, পাঞ্জাবের (Punjab) মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান (Bhagwant Mann) এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের (Arvind Kejriwal) সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন মমতা। বৈঠকের মূল আলোচ্য হিসেবে সিবিআই (CBI), ইডির-র (ED) মতো কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাকে বিরোধীদের বিরুদ্ধে ‘অপব্যবহারের’ অভিযোগটি উঠে আসতে পারে।
[আরও পড়ুন: বাস্তবায়নে অস্বাভাবিক দেরি, বুলেট ট্রেন প্রকল্পের খরচ বাড়তে পারে বিপুল হারে]
কেন্দ্র সরকার তথা বিজেপি যে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাগুলিকে বিরোধীদের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ থেকে ব্যবহার করছে, সেই বিষয়টিকে জনমানসে তুলে ধরার রণকৌশল তৈরি করা হতে পারে বৈঠকে। সেক্ষেত্রে বিরোধী শিবিরের দল থেকে বিজেপিতে নাম লেখানো নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলি যে ধামাচাপা দিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেই বিষয়টিকে সামনে রাখা হতে পারে। এমন নেতাদের নামের তালিকা তৈরির কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে বলেই সূত্রের খবর।
প্রাথমিকভাবে মমতার সঙ্গে চার বিরোধী মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের কথা শোনা গেলেও, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তালিকাটা আরও দীর্ঘ হওয়ার সম্ভাবনা খারিজ করে দেওয়া যায় না। রাজধানীতে এমনও শোনা যাচ্ছে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গেও মমতা দেখা হতে পারে। সংসদে বিজেপি সদস্যদের দ্বারা হেনস্তায় তৃণমূলকে সোনিয়ার পাশে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে। সেকারণে, সোনিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ কিংবা বিরোধী মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে মমতার বৈঠকে কংগ্রেসী মুখ্যমন্ত্রীরা হাজির থাকলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না বলেই মত ওয়াকিবহালমহলের।
[আরও পড়ুন: ইডি হেফাজতে পার্থ-অর্পিতা, অভিজাত আবাসনে এখনও বহাল তবিয়তেই প্রাক্তন মন্ত্রীর পোষ্যরা]
তবে, এবার দিল্লিতে মমতা-সোনিয়া বৈঠক হলে জাতীয় ক্ষেত্রে বিরোধী ঐক্য আরও মজবুত হবে বলেই রাজনৈতিক মহলের ধারণা। সমস্ত বিরোধী দলকে জোটবদ্ধ হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য তৃণমূলনেত্রী সবসময়েই যে আহ্বান জানিয়ে থাকেন এবারের সফরে সেই বিষয়ে সলতে পাকানোর কাজই তিনি সেরে ফেলতে চাইছেন বললে অত্যুক্তি হবে না।
আবার সাম্প্রতিককালে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটদানে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মমতার দল। তাতে রাজনৈতিক মহলের একটি অংশ থেকে আলোচনা হতে থাকে যে তৃণমূল বিরোধী শিবির থেকে আলাদা রয়েছে। সেই বিষয়িটও বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর দিল্লি সফরের পরে ধামাচাপা পড়ে যাবে। উল্লেখ্য, এবারের সফরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Modi) সঙ্গে নীতি আয়োগের বৈঠকে মুখোমুখি হওয়ার কথা মমতার। তাছাড়াও দুজনের মধ্যে একান্ত বৈঠকেরও সম্ভাবনা রয়েছে।