দুলাল দে: এরকমটা হওয়ারই ছিল। আর তাই হল। দু’বছরের চুক্তি থাকার পরেও এক তরফা চুক্তি ভেঙে দেওয়ায় কোয়েস ইস্টবেঙ্গল এফসি কর্তৃপক্ষকে আইনজীবীর চিঠি ধরালেন স্প্যানিশ ফুটবলার খাইমে কোলাডো।
দু’মাসের বেতন বাকি রেখে কিছুদিন আগে কোয়েস ফুটবল এফসির পক্ষ থেকে সবাইকে চিঠি পাঠিয়ে বলা হয়েছিল, একমাসের বেতন কাটা এবং চুক্তি ছিন্ন করা মেনে নিলে এপ্রিল মাসের বেতন দিয়ে দেওয়া হবে। সেই মতো কিছু ফুটবলার কোয়েসের পাঠানো চুক্তিপত্রে সই করে এপ্রিল মাসের বেতন নিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু কোলাডো এবং ডিকার মতো ফুটবলার যাঁদের সঙ্গে কোয়েস ইস্টবেঙ্গল এফসির দু’বছরের চুক্তি রয়েছে, তাঁরা এখনও সেই চুক্তিপত্রে সই করেননি। অবশ্য
কোয়েসের পাঠানো চুক্তিপত্রে সইয়ের শেষদিনও চলে গিয়েছে। কোলাডো এবং ডিকা ছাড়া কোয়েসের পাঠানো চুক্তিপত্রে সই করেননি জনি অ্যাকোস্টা, কাশেম, সামাদ, হাওকিপ-সহ আরও বেশ কয়েকজন।
এতদিন কোয়েসের পাঠানো চুক্তিতে সই করবেন না করবেন না করেও, শেষপর্যন্ত এক মাসের বেতন ছেড়ে দেওয়ার সম্মতিপত্রে সই করে দিয়ে এপ্রিলের বেতন নিয়ে নিয়েছেন কোচ মারিও। বুঝে গিয়েছেন, সামনের মরশুমে তাঁর কোচ হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তাই যা বেতন পাচ্ছেন, সেটা হাতছাড়া করতে চাইছেন না। কিন্তু ডিকা, কোলাডোরা চুক্তি নিয়ে শেষ দেখতে চাইছেন। কারণ, দু’জনের সঙ্গেই সামনের মরশুমেও চুক্তি রয়েছে ইস্টবেঙ্গলের।
[আরও পড়ুন: প্রতীক্ষার অবসান, করোনাকে উপেক্ষা করে জুনেই অস্ট্রেলিয়ায় ফিরছে ক্রিকেট]
ফুটবলারদের সঙ্গে কোয়েস ইস্টবেঙ্গল এফসির চুক্তি ছিল, সেরকম বড় কিছু প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটলে একমাসের বেতন কাটতে পারে কর্তৃপক্ষ। সেই কারণেই সব ফুটবলারের মে মাসের বেতন কেটে দিয়েছে কোয়েস। তাই যারা এখনও কোয়েসের সঙ্গে চুক্তিছিন্ন করার সম্মতিপত্রে সই করেননি, তাঁদেরও এপ্রিল মাসের বেতন দিয়ে দেবে কোয়েস। কিন্তু মে মাসের বেতন কিছুতেই দেওয়া হবে না। যে সব ফুটবলার ভাবছেন, চু্ক্তি ছিন্ন কিংবা বেতন কাটা নিয়ে ফেডারেশন বা ফিফার দ্বারস্থ হবেন, লাভ হবে না। কারণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বেতন কাটার কথা চুক্তিপত্রে আগেই ছিল।
কিন্তু কোলাডো আর ডিকার কথা আলাদা। এঁদের দু’জনেরই পরের মরশুমেও চুক্তি রয়েছে। তাই কোলাডোর আইনজীবী চিঠি দিয়ে বলেছেন, পরের মরশুমের চুক্তির ক্ষতিপূরণ কে দেবে? আর এখানেই ভয় ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের। পরিস্থিতিটা শেষে কাটসুমির মতো হয়ে না যায়। কোয়েস চলে যাওয়ার পর যদি কোনও ফুটবলারের বেতন সমস্যা থেকে থাকে, তাহলে তা ক্লাবকেই মেটাতে হবে। তবে লাল-হলুদ কর্তারা আশাবাদী কাটসুমির মতো কোলাডোর ক্ষেত্রে হবে না।
[আরও পড়ুন: দূরত্ব বজায় রেখে দর্শকশূন্য গ্যালারিকে কুর্নিশ! বুন্দেশলিগা ফিরতেই আবেগে ভাসছে ফুটবলবিশ্ব]
কিংফিশার ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে দীর্ঘ চুক্তি থাকা কাটসুমিকে রাখতে চায়নি কোয়েস ইস্টবেঙ্গল এফসি। ছেড়ে দিয়ে তাই জরিমানা গুনতে হয়েছে। তবে করোনা আক্রান্ত পৃথিবীতে ক্লাবগুলির সমস্যা নিশ্চয়ই বুঝবে ফিফা আর ফেডারেশন। বিদেশি ফুটবলার রিক্রুটের ক্ষেত্রে অবশ্য ধীরে চলো নীতি নিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। আইএসএলের ব্যাপারে শেষপর্যন্ত অপেক্ষা করতে চাইছেন লাল-হলুদ কর্তারা। যদি শেষপর্যন্ত কিছু হয়, এই আশায় অপেক্ষা করতে চাইছেন তাঁরা। যদি শেষমেশ
আই লিগেই খেলতে হয়, তাহলে জনি অ্যাকোস্টাকে হয়তো সই করিয়ে নেওয়া হবে। যদি কোনওমতে আইএসএল খেলার সুযোগ হয়, (যা এই মুহূর্তে প্রায় অসম্ভব) তখন আইএসএলের মানের বিদেশি খুঁজবে ইস্টবেঙ্গল। তাই এখন ভারতীয় ফুটবলার রিক্রুট করা হচ্ছে ক্লাব।
The post লকডাউনের মাঝেই বেতন বিতর্ক, কোয়েস ইস্টবেঙ্গলকে আইনজীবীর চিঠি ধরালেন কোলাডো appeared first on Sangbad Pratidin.