ব্রতদীপ ভট্টাচার্য: কথায় বলে মরা হাতি লাখ টাকা। এখন খেলার টিকিটও তাই। যদি সে টিকিট হয় রবিবারের মতো কোনও হাই ভোল্টেজ ম্যাচের। গত রবিবার অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল যুবভারতী স্টেডিয়ামে বসে চাক্ষুষ করেছেন ৬৬ হাজার ৬৮৪ মানুষ। কেউ কেউ আবার টিকিট পেয়েও মাঠে যাননি। তাঁরা যদি সেই টিকিট ইতিমধ্যে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে থাকেন, তা হলে বিলক্ষণ হাত কামড়াতে হবে। কারণ ৮০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা দামের ওই টিকিটের দর এখন হাজার ডলারও হতে পারে।
[বন্ধ হল JioPhone-এর উৎপাদন, এবার অ্যান্ড্রয়েড আনছে রিলায়েন্স]
সেটা কীভাবে সম্ভব? শুনতে অবাক লাগলেও এটাই বাস্তব। ব্যাঙ্ক নোট, কয়েন, ডাকটিকিটের মতো খেলার টিকিট সংগ্রহ ও এখন ‘হবি’-র তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। ফুটবল বিশ্বকাপের ফাইনালই হোক বা ক্রিকেটের কোনও হাই ভোল্টেজ ম্যাচ। দেশ-বিদেশের সংগ্রহকদের কাছে এধরনের আন্তর্জাতিক খেলার টিকিটের ব্যাপক চাহিদা। যা হাতে পাওয়ার তাগিদে কয়েক হাজার টাকা খরচ করতেও পিছপা হন না তাঁরা। খেলার টিকিট সংগ্রহকদের থেকে জানা যাচ্ছে, বিশ্বজুড়ে অনলাইনে খেলার টিকিটের নিলাম চলে। যত বিরল টিকিট তার তত দাম। দিন দিন সংগ্রাহকদের সংখ্যা বাড়ছে। সঙ্গে বাড়ছে চাহিদাও। এই চাহিদা মেটাতে একটি অনলাইন শপিং সাইট পুরনো খেলার টিকিটের জন্য একটি পৃথক বিভাগও তৈরি করে ফেলেছে। যেখানে ১৯৯৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের ফাইনালের একটি টিকিটের দাম উঠেছে দেড় হাজার ডলার।
[১ টাকায় ফেডারেশনকে ১৫ একর জমি দিচ্ছে রাজ্য]
অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপের টিকিট সংগ্রহ করতে বাংলাদেশের গাজিপুর থেকে কলকাতায় এসেছিলেন মহম্মদ হারুন ওর রশিদ। পেশায় চাকরিজীবী, আর নেশায় সংগ্রাহক। ব্যাঙ্ক নোট, কয়েন ও ডাকটিকিটের তাক লাগানো সংগ্রহ তাঁর। কয়েক বছর আগে থেকে খেলার টিকিট সংগ্রহ শুরু করেছেন। হারুন বলেন, “বাংলাদেশে আয়োজিত প্রায় সব ক’টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচের টিকিট আমার কালেকশনে রয়েছে। কলকাতায় বিশ্বকাপের ফাইনাল হবে জানতে পেরেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিলাম। আমার কাছে খেলা দেখাটা মূল উদ্দেশ্য নয়। টিকিটটি সংগ্রহ করাই প্রধান।” বারাসতের বাসিন্দা পিয়ালি ভট্টাচার্যও টিকিট সংগ্রহ করার নেশায় মেতেছেন। অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল আর ফাইনালে মাঠে যাননি। তবে টিকিট জোগাড় করেছেন। এছাড়া ইডেন গার্ডেন্সে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে রোহিত শর্মার ২৬৪ রানের সেই ঐতিহাসিক ম্যাচ, মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে শচিন তেণ্ডুলকরের শেষ ম্যাচের মতো প্রায় শ’খানেক খেলার টিকিট তাঁর সংগ্রহের তালিকায় রয়েছে। পিয়ালিদেবীর কথায়, “আমার স্বামী খেলা দেখতে পছন্দ করেন। আমিও মাঝে মাঝে যাই। না গেলেও প্রতিটা টিকিটই যত্ন করে রেখে দিই। এছাড়া সোশ্যাল সাইটে বিভিন্ন রাজ্যের সংগ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে টিকিট আদান-প্রদান হয়।” এখন তাঁর লক্ষ্য ২০০৭ সালের টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ২০১১ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালের টিকিট নিজের সংগ্রহশালায় নিয়ে আসা।
[ফের নয়া কীর্তি, এবার শচীনের ১৯ বছরের পুরানো রেকর্ড ভাঙলেন বিরাট]
অনূর্ধ্ব ১৭ ফুটবল বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচটি ফুটবলের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। দু’গোলে পিছিয়ে থেকে পাঁচ গোল দিয়ে ইংল্যান্ডের কাপ জয় নজির হয়ে থাকবে আগামিদিনেও। তাই এই ম্যাচের টিকিট গোটা বিশ্বের সংগ্রহকদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই সংগ্রহকরা বলছেন, ফাইনালের টিকিট থেকে থাকলে না ফেলাই ভাল। ভাগ্য সাথ দিলে ১০০ টাকার টিকিটে ১০০ ডলারও পাওয়া যেতে পারে।
The post যুব বিশ্বকাপ শেষ, তারপরও ম্যাচের টিকিট বিকোচ্ছে ‘লাখ’ টাকায়! appeared first on Sangbad Pratidin.