স্টাফ রিপোর্টার: প্রথম দফাতেই চার লক্ষেরও বেশি পড়ুয়াকে আসন বরাদ্দ (অ্যালটমেন্ট) করা হল কেন্দ্রীয় ভর্তির পোর্টালে। শুক্রবার পোর্টালে প্রকাশিত হয়েছে রাজ্যের সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত ৪৬১ টি কলেজের ৭২৩০ টি স্নাতক কোর্সের মেধাতালিকা। মেধার ভিত্তিতে আবেদনকারীদের পছন্দকে অগ্রাধিকার দিয়ে মোট ৪ লক্ষ ২২ হাজার ২৪৫ জন 'ইউনিক' ছাত্রছাত্রীকে আসন বরাদ্দ করা হয়েছে।
'ইউনিক' অর্থাৎ মেধার ভিত্তিতে যে পড়ুয়াদের সংরক্ষিত এবং অসংরক্ষিত ক্যাটেগরি, দুটি ভাগেই আসন বরাদ্দ করা হয়েছে, তাঁদেরকে একবারই গণনা করা হয়েছে। সেই হিসাবে আসল আসন বরাদ্দের সংখ্যা আরও বেশি। বরাদ্দকৃত কোর্স তথা আসনের জন্য নির্ধারিত ফি জমা করে কেন্দ্রীয় পোর্টালে এদিন থেকেই পড়ুয়ারা ভর্তি (প্রভিশনাল) হওয়া শুরু করেছে। জানা গিয়েছে, এদিন সন্ধে ৬ টা পর্যন্ত ১০ হাজারের বেশি ছাত্রছাত্রী পোর্টালের মাধ্যমে ভর্তি হয়েছেন। আগামী ১৮ জুলাই পর্যন্ত চলবে ভর্তি প্রক্রিয়া।
[আরও পড়ুন: সেপটিক ট্যাঙ্কে নামাই কাল, সাতসকালে বিষাক্ত গ্যাসের বলি ডেবরার ৩!]
উচ্চশিক্ষা দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় ভর্তির পোর্টালে আবেদন জানিয়েছিলেন ৫ লক্ষ ২৭ হাজার ৬৬৩ ছাত্রছাত্রী। তাঁদের মধ্যে ১ লক্ষ ৫ হাজার ৪১৮ জনকে এই দফায় আসন বরাদ্দ করা যায়নি। অর্থাৎ এখনই কোনও কলেজে (College) ভর্তি হতে পারবেন না ওই পড়ুয়ারা। স্বাভাবিকভাবেই তাঁদের কলেজে ভর্তির সুযোগ নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। উচ্চশিক্ষা দপ্তরের (higher education department west bengal) এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, কেন্দ্রীয় ভর্তির পোর্টালের নিয়ম অনুযায়ী, একজন পড়ুয়া একটিই আসনে ভর্তি হবেন। তাই সংরক্ষিত ক্যাটাগরির যে ছাত্রছাত্রীদের দুটি করে আসন বরাদ্দ করা হয়েছে, তাঁরা একটি বেছে নিয়ে সেখানেই ভর্তি হবেন। ফলে, ফাঁকা হয়ে যাবে দ্বিতীয় বরাদ্দকৃত আসনটি। এই হিসাবে আপগ্রেড রাউন্ডেই নতুন করে আরও অন্ততপক্ষে ৬০ হাজার পড়ুয়াকে আসন বরাদ্দ করার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই আধিকারিক। বাকিরাও ভর্তি প্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপগুলিতে সুযোগ পেয়ে যাবেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
কিন্তু কেন এত পড়ুয়াকে আসন বরাদ্দ করা গেল না? উচ্চশিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এর নেপথ্যে পড়ুয়াদের পছন্দ, বিষয়/কোর্সের চাহিদা-সহ একাধিক কারণ রয়েছে। প্রথমত, যে কোনও পড়ুয়ার লক্ষ্য থাকে, তথাকথিত 'ভালো' কলেজে ভর্তি হওয়ার। সে ক্ষেত্রে পছন্দের তালিকার কলেজগুলির আসন পূরণ হয়ে যাওয়ায় আবেদনকারীদের একটা অংশকে অ্যাটলমেন্ট দেওয়া যায়নি। আবার অ্যালটমেন্ট না পাওয়ার মধ্যে কমার্স, মাইক্রো-বায়োলজি, জুলজি, ইংরেজি, ভূগোলের মতো বিষয়গুলি নিয়ে পড়তে ইচ্ছুকরাও রয়েছেন। ওই বিষয়গুলির চাহিদা বেশি থাকাই এর কারণ। কিছু ক্ষেত্রে সতর্কভাবে পছন্দের তালিকা তৈরি না করাও পড়ুয়ার অ্যালটমেন্ট না পাওয়ার কারণ হতে পারে। মূলত, সাইবার ক্যাফে বা অন্য কারও সাহায্য নিয়ে আবেদনের সময় পড়ুয়া নিজের মেধার ভিত্তিতে কোন কলেজে ভর্তির সুযোগ পেতে পারেন, তা বিবেচনা না করেই পছন্দের তালিকা প্রস্তুত করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে, প্রথম ধাপে অ্যালটমেন্ট না পেলেও ওই সকল পড়ুয়া রয়েছেন মেধাতালিকায়। পরবর্তীতে তাঁদের পছন্দের তালিকার কোর্স/কলেজে আসন খালি হলেই তাঁরা ভর্তির সুযোগ পাবেন।
উচ্চশিক্ষা দপ্তর আগেই জানিয়ে দিয়েছিল, প্রথম ধাপেই অ্যালটমেন্ট পাওয়া পড়ুয়াদের যে কোনও কলেজে নির্ধারিত ফি জমা করে ভর্তি হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে কলেজে আসন বরাদ্দ করা হয়েছে, তা অপছন্দের হলে ভর্তির সময়েই পড়ুয়াকে আপগ্রেডেশনের অপশন দেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে আপগ্রেড রাউন্ডে ওই পড়ুয়ার পছন্দের তালিকার উপরের দিকের কলেজ ও কোর্সে আসন ফাঁকা হলে, তাঁকে সেই আসনে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে।
তবে শুক্রবার প্রথম ধাপেই যারা নিজেদের পছন্দের তালিকার একেবারে শীর্ষে থাকা কলেজ/কোর্সে অ্যালটমেন্ট পেয়েছে, তাদের আর আপগ্রেডেশনের সুযোগ থাকছে না। ১৮ জুলাই প্রথম ধাপের ভর্তি সম্পন্ন হবে। ২৩ জুলাই আপগ্রেড রাউন্ডের মেধাতালিকা প্রকাশ করা হবে ও পড়ুয়াদের আসন বরাদ্দ করা হবে। তার ভিত্তিতে ফি জমা দিয়ে ভর্তি হওয়ার প্রক্রিয়া চলবে ২৩ থেকে ২৬ জুলাই পর্যন্ত।