সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: দূষণে দিল্লিকেও টপকে গেল দুর্গাপুর! মঙ্গলবার দুপুরে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে বাতাসে গুণগত মানের সূচক (একিউআই) ছিল ৪৫৩.৮। যেখানে দিল্লির AQI কমে ৩৯৪। দুর্গাপুরের বাতাসে ১০ মাইক্রোমিটার (পিএম ১০) ধূলিকণার পরিমাণও বেশি। যদিও এদিন বাতাসের বেগ একটু বেশি থাকায় কমেছে ২.৫ মাইক্রোমিটার (পিএম২.৫) ধূলিকণার পরিমাণ। উদ্বিগ্ন দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ অসহনীয় দূষণ বাগে আনতে রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা-সহ একাধিক বেসরকারি কারখানার বিরুদ্ধে সত্ত্বর ব্যবস্থা গ্রহণের পদ্ধতি শুরু করেছে।
ছবি: উদয়ণ গুহরায়।
মঙ্গলবার দুপুর দুটো নাগাদ দেশের মধ্যে সবথেকে দূষিত শহরের তালিকায় প্রথম স্থানে চলে যায় দুর্গাপুর। বেশ কিছুদিন ধরেই দিল্লির দূষণের মাত্রা নিয়ে সরগরম ছিল গোটা দেশ। এমনকি কেন্দ্রীয় রাজনীতিতেও উঠে এসেছিল রাজাধানীর দূষণ। এবার সেই দিল্লিকেও হার মানালো দুর্গাপুর। এদিন দুপুর দুটোয় রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ডিজিটাল অ্যানালাইজারে সিটি সেন্টারের AQI ৪৫৩.৮। বিধাননগরে ৪০৫ ও দুর্গাপুর ইস্পাত নগরীতে ৩৯০। যেখানে ওই সময়ে দিল্লির সাদিপুরে সর্বোচ্চ AQI ৩৯৪। মুম্বইতে ১১৯। কোলকাতা ১৪৮। হাওড়া ৩৮৬। হরিয়ানায় ২৬৯। আসানসোল ৩৭৭। চন্ডীগড় ২৬৯। একিউআইয়ের স্বাভাবিক পরিমাণ ১০০ থেকে ১৫০।
ছবি: উদয়ন গুহরায়।
গত ১০ নভেম্বর থেকে অভাবনীয়ভাবে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে বাড়তে থাকে দূষণ। ওই দিন দুর্গাপুরের AQI ছিল ৭৬। তার পর থেকেই বাড়তে বাড়তে মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ স্থানে। দুর্গাপুরের ক্রমবর্ধমান দূষণ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার ও বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। এদিন দুপুরে দুর্গাপুরের বাতাসে প্রতি ঘন মিটারে ১০ মাইক্রোমিটার (পিএম ১০) ধূলিকণার পরিমাণ ছিল ২৫২। স্বাভাবিক পরিমাণ ১৫। অন্যদিকে প্রতি ঘনমিটারে ২.৫ মাইক্রোমিটার ধূলিকণার পরিমাণ ছিল ১১২। স্বাভাবিক পরিমাণ ৫। এই পরিমাণ এদিন একটু কমেছে। ১৬ নভেম্বর এর পরিমাণ ছিল ১৪২। এদিন বাতাসের বেগ প্রতি ঘন্টায় ৮ কিলোমিটার হওয়ায় বাতাসে ওই ছোট ধূলিকণার পরিমাণ কমেছে। দুর্গাপুর ইস্পাত নগরীতে এই রকমের দূষণ মাত্রা আগে কোনওদিন দেখা যায়নি বলেই দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের দাবি।
অভাবনীয় দূষণ গ্রাসে আক্রান্ত দুর্গাপুরকে বাঁচাতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের দুর্গাপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের মুখ্য বাস্তুকার অরূপ দে বলেন, "নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে দূষণ ছড়ানোর অভিযোগে কাঁকসার বামুনাড়া শিল্পতালুকের দুটি ইন্ডাকশন ফার্নেস কারখানার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ইস্পাত কারখানা ও আরও দুটি বেসরকারি লৌহ ইস্পাত কারখানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের পদ্ধতি শুরু হয়েছে। শিল্প এলাকায় কৃত্রিম ওয়াটার স্প্রিকলিং শুরু হয়েছে। এই ওয়াটার স্প্রিকলিং আরো বাড়ানো হবে।"