সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মারধর ও নিগ্রহে অভিযুক্ত টিএমসিপি ছাত্রনেতা শাহিদ খানের শাস্তির দাবিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হলেন রিষড়ার বিধানচন্দ্র কলেজের আক্রান্ত ছাত্রী। শুক্রবার সকালে হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে যান আক্রান্ত ছাত্রী ও তাঁর পরিবার। বলেন, ‘দিদিকে বলব এই ঘটনায় অভিযুক্তদের যেন কড়া শাস্তি হয়।’ ছাত্রীর পরিবারের আশঙ্কা, অভিযুক্ত ছাত্রনেতা ও তার বাবা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ নষ্ট বা বিকৃত করতে পারে। পুলিশ ও প্রশাসনের সক্রিয়তা বাড়াতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ছাত্রীর পরিবার আবেদন জানাবে। শাহিদের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন ওই ছাত্রী, নিজের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তাও চাইবেন ‘দিদি’র কাছে।
[বাংলায় পকেট কার্টুনের স্রষ্টা চণ্ডী লাহিড়ী প্রয়াত, শোকাহত শিল্পীমহল]
কলেজে ছাত্র সংসদের কমন রুমের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে শিউরে ওঠে গোটা রাজ্য। ওই ছাত্রীকে প্রথমে গলা ধাক্কা, তারপরে লাথি এবং শেষে সপাটে চড় মারছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জিএস। অশ্রাব্য খিস্তি-খেউড় করতে করতে মেয়েটিকে ঘরছাড়া করার আগে বুকে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টাও বাদ গেল না! ফুটেজটি পুরনো হলেও প্রকাশ্যে এসেছে সম্প্রতি। রিষড়ার কলেজে ছাত্র সংসদের কমন রুমে ঘটনাটি ঘটেছে গত ৪ ডিসেম্বর। বৃহস্পতিবারই তা প্রকাশ্যে আসে। কলেজেরই ছাত্র নেতার হাতে ওই ছাত্রীকে নিগ্রহের হাড় হিম করা ফুটেজ দিনভর চলে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে। যা দেখে শিক্ষামহল থেকে প্রশাসন, নিন্দার ঝড় উঠেছে সর্বত্র। অভিযুক্ত ছাত্র বিধান কলেজের টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) শাহিদ হাসান। তার বাবা তৃণমূল পরিচালিত রিষড়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান। শাসক দলের এহেন ঘনিষ্ঠতার সুবাদে পুলিশ তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগও উঠেছে। যদিও পুলিশ তা মানতে নারাজ। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও আশ্বাস দিয়েছেন, কেউ দোষ করে থাকলে পার পাবে না।
[মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আমরির বিরুদ্ধে মেডিক্যাল কাউন্সিলে ঐত্রীর পরিবার]
ঠিক কী হয়েছিল ৪ তারিখ?
বিধান কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রীটি নিজেও টিএমসিপি করেন। তাঁর অভিযোগ, জিএস শাহিদ হাসান খান হামেশাই তাঁকে কুপ্রস্তাব দিত। সাড়া না দেওয়ায় সে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল। ৪ তারিখ কমনরুমে সেই ক্ষোভেরই বিস্ফোরণ হয়েছে। ছাত্রীটির দাবি, সেদিন শাহিদ নিজের বিশ্বস্ত কয়েকজন বাদে অন্যদের ঘর থেকে বের করে দিয়ে তাঁর মুখোমুখি হয়। “প্রথমে ও আমার মোবাইল দেখতে চাইল। আমি দিইনি। ও আরও রেগে যায়।” – বলেন তিনি। মেয়েটির অভিযোগ, এরপরই শাহিদ তাঁকে শারীরিক নিগ্রহ শুরু করে, গালে সজোরে চড় মারে। হেলমেট ও ব্যাগ ছুড়ে মারে তাঁর দিকে। এমনকী, টেবিলের উপর পাতা কাচ তুলে মারতে যায়। সম্মানহানির চেষ্টাও করে। তিনি যখন নিজেকে বাঁচাতে ব্যস্ত, তখন ঘাড়ে ধাক্কা দিতে দিতে পেটে লাথি মেরে ঘরের বাইরে বের করে দেয়। তরুণীর আক্ষেপ, তাঁকে এভাবে হেনস্তা হতে দেখেও গোড়ায় কেউ এগিয়ে আসেনি। শেষমেশ পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে উঠছে দেখে শাহিদের দু’একজন সাঙ্গোপাঙ্গ তাকে আটকায়। নিগৃহীতার কথায়, “তারপরেও ও অবশ্য বেশ ক’বার আমার পেটে লাথি মেরেছে।” এখানেই শেষ নয়। আক্রান্ত ছাত্রীর দাবি, মারধরের পর শাহিদরা তাঁকে হুমকি দিয়ে বলে, ঘটনা বাইরে ফাঁস হলে ফল মারাত্মক হবে।
শিউরে উঠবেন এই সিসিটিভি ফুটেজ দেখলে:
The post অভিযুক্তর শাস্তির দাবিতে মমতার দ্বারস্থ রিষড়ার আক্রান্ত ছাত্রী appeared first on Sangbad Pratidin.