সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৯৮৪ সালের ‘অপারেশন মেঘদূতে’র (Operation Meghdoot) কথা অনেকেরই মনে আছে। তাৎপর্যপূর্ণ সেই সামরিক অভিযানের মাধ্যমেই পাকিস্তানের (Pakistan) হাত থেকে সিয়াচেন (Siachen) হিমবাহ ছিনিয়ে নিতে পেরেছিল ভারত। পৃথিবীর সর্বোচ্চ যুদ্ধক্ষেত্রে ভারতের সেই সাফল্যের পিছনে ছিল এক অসমসাহসী মানুষের অবদান। বছরের শেষ দিনে ভারত হারাল সেই দক্ষ পর্বতারোহীকে। কর্নেল নরেন্দ্র কুমার (Colonel Narendra Kumar) । ‘বুল’ নামেই তাঁকে সকলে চিনত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইট করে তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন।
ঠিক কী অবদান ছিল সদ্যপ্রয়াত নরেন্দ্র কুমারের? ১৯৮৪ সালের ‘অপারেশন মেঘদূতে’র অনেক আগে সিয়াচেনে পা রেখেছিলেন তিনি। মূলত তাঁর তৈরি করা ম্যাপ ও ভিডিও দেখেই ভারতীয় সেনা পরিকল্পনা করেছিল ‘অপারেশন মেঘদূতে’র। সেই সময় পাকিস্তানও পরিকল্পনা করেছিল সিয়াচেন দখলের। কিন্তু নরেন্দ্রর তৎপরতায় ভারত ইসলামাবাদের ‘অপারেশন আবাদিল’-কে ব্যর্থ করে দিয়ে আগেই বরফে মোড়া সিয়াচেনে উড়িয়ে দিয়েছিল তেরঙা।
[আরও পড়ুন: নতুন বছরের শুরুতে সামান্য স্বস্তি! কমল করোনার দৈনিক সংক্রমণ ও মৃত্যু]
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অশীতিপর নরেন্দ্র কুমার জানিয়েছিলেন, কেমন ছিল সিয়াচেনে পা রাখার সেই অভিজ্ঞতা। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের মাথার উপরে পাকিস্তানিরা উড়ছিল। রঙিন ধোঁয়া ছেড়ে ওরা বোঝাতে চাইছিল, আমাদের উপরে নজর রাখা হচ্ছে। সেই সময় আমরা নিরস্ত্র ছিলাম। ফলে ভয় পাচ্ছিলাম।’’ তবে পাকিস্তানিরা তাঁদের লক্ষ করলেও বুঝতে পারেনি, ভারত সালতোরো পর্বতশৃঙ্গের দখল নিতে চলেছে। প্রসঙ্গত, ওই শৃঙ্গের দখল নেওয়া মানেই কার্যত সিয়াচেনের দখল হাতে চলে আসা। আর এভাবেই ভারত এক ইতিহাস তৈরি করেছিল আটের দশকের সেই সময়ে।
৮৭ বছরের কর্নেল নরেন্দ্র কুমার কিছুদিন ধরেই বয়সজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন। বৃহস্পতিবার তাঁর প্রয়াণের পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইট করে জানান, তাঁর মৃত্যুতে অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। প্রয়াত ‘পদ্মশ্রী’ পর্বতারোহীর পরিবারের প্রতি তাঁর সমবেদনা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।