সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'নির্বাচন শেষ হয়েছে। এখন রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ভুলে দেশ গঠনে মনযোগ দেওয়া উচিৎ সকলের।' নয়া সরকারকে এমনই বার্তা দিলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। এক্ষেত্রে তাঁর বার্তা, 'প্রতিযোগিতা মানে যুদ্ধ নয়। বিরোধী শিবিরকেও সমান গুরুত্ব দিক সরকার।' গত কয়েক বছর ধরে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। এহেন পরিস্থিতিতে নয়া সরকারকে আরএসএস প্রধানের এই বার্তা নিশ্চিতভাবেই তাৎপর্যপূর্ণ।
নাগপুরে সংঘের সদর দপ্তরে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মোহন ভাগবত বলেন, "নির্বাচন হল ঐকমত্য গড়ে তোলার একটি প্রক্রিয়া। সংসদে দুটি দিক রয়েছে একটি শাসক ও অন্যটি প্রতিপক্ষ। সেখানে যে কোনও প্রশ্নের উভয় দিক বিবেচনা করা হয়। যাতে আমরা সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছই। আমি বিরোধী পক্ষ বলি না, আমি বলি প্রতিপক্ষ। প্রতিপক্ষ বিরোধী নয়। তাদের বিরোধী মনে করাও উচিত নয়।" নয়া সরকারকে বার্তা দিয়ে তিনি আরও বলেন, "এক জন প্রকৃত সেবক তিনিই হন যিনি কোনও অহংকার ছাড়াই কাজ করেন। তখনই তিনি নিজেকে সেবক বলার অধিকারী হন।"
[আরও পড়ুন: যত গর্জাল তত বর্ষাল না! ‘অপ্রাপ্তিতেও’ কোন মন্ত্রে বশ নীতীশ-নায়ডু]
আরএসএস প্রধান বলেন, "সঙ্ঘ প্রতিটি নির্বাচনে জনমতকে পরিমার্জিত করার জন্য কাজ করে, এবারও তা করেছে। কিন্তু সংঘ কখনও ফলাফলের বিশ্লেষণে জড়ায় না। সংসদে বিভিন্ন বিষয়ে ঐকমত্য গড়ে তুলতে হবে। আমাদের ঐতিহ্যই হল ঐকমত্যের বিকাশ। নির্বাচন একটি প্রতিযোগিতা মাত্র, যুদ্ধ নয়।" সরকার গঠনের পর মোদি সরকারের উদ্দেশে ভাগবতের এহেন বার্তাকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ, ২৪-এর নির্বাচনের আগের লাগাতার শাসকদলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ তুলেছে বিরোধী শিবির।
[আরও পড়ুন: ক্যানসারে আক্রান্ত মিঠু, চলছে কেমো, স্ত্রীকে নিয়ে মুখ খুললেন ‘ফেলুদা’ সব্যসাচী]
বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, সিবিআই, ইডি, আয়কর দপ্তরের মতো একের পর এক কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে কুক্ষিগত করে নিজেদের স্বার্থে তা বিরোধীদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছে বিজেপি। ভোটের আগে ফ্রিজ করা হয়েছে কংগ্রেসের অ্যাকাউন্ট। জেলে পোরা হয়েছে বিরোধী শিবিরের বহু নেতৃত্বকে। জনমানসে ভাবমূর্তি নষ্ট করতে তলব করা হয়েছে বিরোধী নেতাদের। শুধু তাই নয়, সংসদের অন্দরেও সংখ্যার জোরে কানে তোলা হয়নি বিরোধীদের কথা। এহেন পরিস্থিতির মাঝে নয়া সরকার গঠনের পর মোহন ভাগবতের এই বার্তায় রাজনৈতিক মহলের দাবি, নতুন সরকার যাতে অতীতের দম্ভ ও একনায়ক মানসিকতা ছেড়ে যাতে গণতন্ত্রের মূল্যবোধকে গুরুত্ব দেয় সেই বার্তাই দিলেন আরএসএস প্রধান।