দীপঙ্কর মণ্ডল, কলকাতা: দেশের অভ্যন্তরীণ তথ্য বিদেশি গোয়েন্দাদের হাতে পাচার হওয়ার অভিযোগ শোনা যায়। কিন্তু শিক্ষা বিষয়ক গোপন তথ্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিতে পৌঁছে যাওয়া! এ রাজ্যে অন্তত এমন অভিযোগ আগে ওঠেনি। সম্প্রতি এমন বেনজির অপরাধের কথা প্রকাশ্যে এসেছে। রাজ্যের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভরতির জয়েন্ট এন্ট্রান্সের সমস্ত তথ্য চলে গিয়েছে বেসরকারি হাতে। কারিগরি শিক্ষা দপ্তর থেকেই যে এই কীর্তি হয়েছে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই শিক্ষা মহলের। এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আমলারা। অফিসারদের ডেকে সতর্ক করা হয়েছে। পলিটেকনিক পড়ানো হয় এমন বেসরকারি কলেজগুলিকেও দপ্তরে ডাকা হচ্ছে। কীভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের গোপন তথ্য ব্যক্তি মালিকানায় চলা প্রতিষ্ঠানে পাচার হচ্ছে তা নিয়ে তদন্তও শুরু হয়েছে৷
[পর্ণশ্রীতে যৌন নিগ্রহের শিকার ২ বছরের শিশু, গ্রেপ্তার মামা]
চলতি মাসের শুরুতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবেশিকা পরীক্ষার (জেক্সপো) ফল প্রকাশ হয়। খুব সহজে সরকারি কলেজে ভরতি হতে পারবে এমন ছাত্র-ছাত্রীদের মোবাইলে বেসরকারি কলেজ থেকে মেসেজ আসতে থাকে। বিভিন্ন কোর্সে টাকার বিনিময়ে ভরতির অফার পায় পড়ুয়ারা। কাউন্সেলিংয়ের আগে কীভাবে এমন বার্তা আসছে তা নিয়ে দিশাহারা হয়ে যায় পড়ুয়ারা। কিছু না বুঝেই অনেকে বেসরকারি কলেজে ভরতিও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ঘটনা হল, হয়তো সেই নির্দিষ্ট ছাত্র বা ছাত্রী সরকারি কলেজে পড়ার সুযোগ পেত। যেখানে বিনা পয়সায় পড়া যেত সেখানে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে পড়ুয়াদের। সরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এমন দুর্নীতির খবর দপ্তরে যায়। নড়েচড়ে বসেন কর্তারা। কারিগরি শিক্ষা দপ্তরের অভ্যন্তরীণ তদন্তে জানা গিয়েছে, প্রাইভেট পলিটেকনিকগুলির সঙ্গে অফিসারদের একটি অংশের সম্পর্ক আছে। নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়েই যে গরিব ছাত্র-ছাত্রীদের তথ্য বেসরকারি হাতে গিয়েছে তা নিয়ে নিশ্চিত দপ্তর।
[তাপ্পি দেওয়া টায়ারে পরপর ব্রেকডাউন গাড়ি, যানজট সরাতে নাজেহাল পুলিশ]
কারিগরি শিক্ষা দপ্তরে দুর্নীতির অভিযোগ এই প্রথম নয়। আগেও প্রশ্ন ফাঁস-সহ বহু কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে। আইটিআই প্রবেশিকা পরীক্ষায় এক ছাত্রর ছবির জায়গায় অ্যাডমিটে কুকুরের মুখ পাওয়া গিয়েছিল। তা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়। প্রশ্ন ফাঁসের পরিপ্রেক্ষিতে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বহু কাণ্ডের পর এবার তথ্য পাচারের অভিযোগ। কোনও অফিসার এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলতে চাননি। তবে সবাই স্বীকার করেছেন, সরকারি তথ্য পাচার হয়েছে। তা যে গুরুতর অপরাধ তাও মেনে নিয়েছেন সবাই। দপ্তরের মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুও এই বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি। তবে মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, তথ্য পাচারের ঘটনায় তিনি তীব্র প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন৷
[জল খাওয়ার অছিলায় বাড়িতে ঢুকে নাবালিকাকে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার আত্মীয়]
The post শিক্ষাক্ষেত্রে গোপন সরকারি তথ্য পাচার বেসরকারি হাতে, তদন্তে রাজ্য appeared first on Sangbad Pratidin.