কিংশুক প্রামাণিক: এই মুহূর্তে জাতীয় রাজনীতি যে খাতে প্রবাহিত তাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অথবা তাঁর দলকে টার্গেট নয়। কংগ্রেসের একমাত্র লক্ষ্য বিজেপিকে হারানো। এই মর্মে বাংলায় দলীয় মুখপাত্রদের নির্দেশিকা দিল কংগ্রেস হাই কমান্ড। জনসভা, সাংবাদিক বৈঠক ও টক শোয়ে রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে বলা যেতেই পারে, কিন্তু অযথা তৃণমূলকে (TMC) আক্রমণ করা যাবে না। যতদূর সম্ভব টার্গেট হবে বিজেপি। জাতীয় স্তরে কংগ্রেসের মুখপাত্রদের প্রধান জয়রাম রমেশ প্রদেশ নেতৃত্ব ও রাজ্য মুখপাত্রদের একথা জানিয়ে দিয়েছেন। একই সঙ্গে বলা হয়েছে, বাংলায় বিজেপি যাতে গত লোকসভার মতো কোনও সুবিধা করতে না পারে সেদিকে নজর দিতে হবে।
এদিকে, ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতিকে মান্যতা দিতেই সরে যেতে হচ্ছে অধীর চৌধুরীকে (Adhir Ranjan Chowdhury)। তাঁর জায়গায় প্রদেশ সভাপতি হওয়ার জন্য কয়েকটি নাম থাকলেও প্রবীণ নেতা দেবপ্রসাদ রায় (Deba prasad Roy) এগিয়ে। অধীর, দলনেতা হিসাবে সংসদে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান রয়েছেন। ফলে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ তাঁকে ছাড়তে হচ্ছে বলে কংগ্রেস(Congress) সূত্রে খবর।
[আরও পড়ুন: ভোজ্য তেলের দাম লিটারে ১০ টাকা কমাতে হবে, সংস্থাগুলিকে নির্দেশিকা কেন্দ্রের]
কংগ্রেস যে মমতা (Mamata Banerjee) সম্পর্কে অনেক নরম মনোভাব নিয়ে চলছে, সেটা বোঝা গিয়েছিল রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গোল টেবিল বৈঠকে। মমতা সেই বৈঠক ডাকেন। সোনিয়া গান্ধী তাঁকে সমর্থন করেন। পাঠিয়ে দেন তিন প্রতিনিধি মল্লিকার্জুন খাড়গে, জয়রাম রমেশ, রণদীপ সুরজেওয়ালাকে। ওই বৈঠকে রাহুল গান্ধীকে (Rahul Gandhi) এজেন্সির জেরার বিরুদ্ধে সরব হয়ে মমতাও বার্তা দেন। কংগ্রেস হাইকমান্ড যে বিষয়টিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে, সেটা এবার বোঝা গেল জয়রাম রমেশের বার্তায়। প্রদেশের এক মুখপাত্র বলেন, ‘‘প্রায় দশজন আমরা মুখপাত্রর পদে রয়েছি। দিল্লি জানিয়ে দিয়েছে, এখন আক্রমণের লক্ষ্য হবে বিজেপি (BJP)। কারণ, বাংলায় বিধানসভা ভোট হয়ে গিয়েছে। সামনে লোকসভা ভোট। ফলে তৃণমূলকে শত্রু করে এগোনোর সময় এটা নয়। রাজ্যের রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে কংগ্রেস তার মতামত বলতেই পারে। কিন্তু অন্য বিষয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে মেপে। মুখ্যমন্ত্রীকেও অযথা আক্রমণ করা যাবে না।’’
[আরও পড়ুন: সংকটাপন্ন লালু, পাটনা থেকে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে নিয়ে যাওয়া হল দিল্লি, হাসপাতালে গিয়ে দেখা নীতীশের]
বস্তুত, রাষ্ট্রপতি ভোট বিরোধীদের অনেকটাই কাছে এনেছে। কনস্টিটিউশন ক্লাবের গোল টেবিল বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, জোটকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। মমতা ইতিপূর্বে বারবার বলেছেন, দিল্লিতে যাই হোক, বাংলায় সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি (BJP) একজোট হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ভোটে লড়ে। সেই অভিযোগ থেকে তাহলে কি বেরিয়ে আসতে চাইছে হাইকমান্ড? সম্ভবত।