সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্যসভা নির্বাচন ঘিরে টানটান নাটক। ক্রস ভোটিংয়ের গেরোয় পড়েছে কংগ্রেস ও বিজেপি দু’দলই। তবে শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, রাজস্থানে বাজিমাত করেছে কংগ্রেস। পরাজিত বিজেপি সমর্থিত নির্দল প্রার্থী তথা মিডিয়া ব্যারন সুভাষ চন্দ্রা।
শুক্রবার রাজ্যসভার ১৬টি আসনের জন্য নির্বাচন হয় রাজস্থান, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকে। রাজস্থানের মোট চারটি আসনের মধ্যে কংগ্রেস (Congress) জয়ী হয়েছে তিনটিতে। বিজেপি (BJP) পেয়েছে একটি আসন। কংগ্রেসের হয়ে এবার রাজ্যসভায় যাচ্ছেন প্রমোদ তিওয়ারি, মুকুল ওয়াসনিক ও রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা। চতুর্থ আসনে জয়ী হয়েছেন বিজেপি প্রার্থী ঘনশ্যাম তিওয়ারি।
[আরও পড়ুন: গুজরাট সফরে নিজের স্কুল শিক্ষকের সঙ্গে দেখা করলেন মোদি, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ছবি]
ফলাফল ঘোষণার পরই বিজেপিকে কটাক্ষ করে টুইট করেছেন কংগ্রেস শাসিত রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। তিনি লেখেন, “শুরু থেকেই স্পষ্ট ছিল যে কংগ্রেস জিতবে। নির্দল প্রার্থীকে সমর্থন করে বিজেপি ঘোড়া কেনাবেচার চেষ্টা করেছিল।” তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, ক্রস ভোটিংয়ের আশঙ্কা এবং বিজেপির মদত থাকলেও পরাজিত হয়েছেন জি গ্রুপের চেয়ারম্যান সুভাষ চন্দ্রা।
এদিন রাজস্থানে চারটি আসনের জন্য ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। সে রাজ্যের বিধানসভার অঙ্ক অনুযায়ী দু’টি আসনে কংগ্রেসের জয় নিশ্চিত ছিল। আর বিজেপির জয় নিশ্চিত ছিল একটি আসনে। লড়াই ছিল মূলত চতুর্থ আসনের জন্য। কংগ্রেসের (Congress) তৃতীয় প্রার্থী এবং নির্দল প্রার্থী সুভাষ চন্দ্রার মধ্যে। রাজস্থান বিধানসভার অঙ্ক অনুযায়ী, এই পর্বে একজন প্রার্থীকে জেতাতে ৪১ জন বিধায়কের সমর্থন প্রয়োজন। রাজ্যে কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা ১০৮। সেই সঙ্গে ১৩ জন নির্দল, দু’জন সিপিএম এবং একজন আরএলডি বিধায়ক কংগ্রেসকে সমর্থন করছে বলে দাবি করে হাত শিবির। শেষপর্যন্ত ভারতীয় ট্রাইবাল পার্টির দুই বিধায়কও তাঁদের সমর্থন করছে বলে দাবি কংগ্রেসের। যদিও নির্দলরা কাকে ভোট দিয়েছেন স্পষ্ট নয়। এদিকে বিজেপির চাপ আরও বেড়ে যায় তাঁদেরই দলের দুই বিধায়ক ক্রস ভোট করায়।
এদিকে, টানটান লড়াই চলছে হরিয়ানা ও মহারাষ্ট্র। ক্রস ভোটিংয়ের জেরে তৈরি হওয়া জটিলতা এবং অভিযোগ পালটা অভিযোগে ভোটগণনায় দেরি হচ্ছে। কর্ণাটকে চারটি আসনের মধ্যে তিনটি পেয়েছে বিজেপি। একটি গিয়েছে কংগ্রেসের ঝুলিতে। এদিন কর্ণাটকের এক জেডি (এস) বিধায়ক কংগ্রেস প্রার্থীর পক্ষে ভোট দেন। কুমারস্বামীর দলের বিধায়ক কে শ্রীনিবাস গৌড়ার বক্তব্য, তিনি কংগ্রেসকে ভালবাসেন তাই ভোট দিয়েছেন। দলের আরও এক বিধায়কের বিরুদ্ধেও ক্রস ভোটিংয়ের অভিযোগ রয়েছে। কুমারস্বামীর কথায়, “৩২ জন বিধায়কের মধ্যে ৩০ জন আমাদের সঙ্গে আছেন।”
হরিয়ানায় ব্যাকফুটে রয়েছে বিরোধী দল কংগ্রেস। ইতিমধ্যে দলের এক বিধায়ক বিজেপির পক্ষে ভোট দিয়েছেন। আরও একজনের ভোট বাতিল হয়েছে। নির্দল বিধায়করাও বিজেপি প্রার্থীর পক্ষে ভোট দিয়েছেন বলে খবর। হরিয়ানা নিয়ে মহা দুশ্চিন্তায় কংগ্রেস। সেরাজ্যের দুটি আসনে ভোট হচ্ছে। কংগ্রেস এবং বিজেপির একটি একটি করে আসন জেতার কথা। কিন্তু বিজেপি আবার নির্দল প্রার্থী কার্তিকেয় শর্মাকে সমর্থন করছে। হরিয়ানায় জয়ের জন্য ৩০জন বিধায়ক দরকার। বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ৪০। আর কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা ৩১। সেক্ষেত্রে বিজেপির প্রথম প্রার্থীর জয় নিশ্চিত। দ্বিতীয় আসনটিতে লড়াই কংগ্রেসের অজয় মাকেন এবং বিজেপি সমর্থিত কার্তিকেয় শর্মার মধ্যে।
মহারাষ্ট্রে অবশ্য এখনও কোনও ক্রস ভোটিংয়ের খবর পাওয়া যায়নি। তবে তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই প্রথমবার শিব সেনা জোটকে সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আসাদুদ্দিন ওয়েইসির এআইএমআইএম। সেরাজ্যের ৬ আসনের মধ্যে শাসক জোটের ৩ এবং বিজেপির দুই প্রার্থীর জয় নিশ্চিত। এআইএমআইএম (AIMIM) এবং সিপিএমের সমর্থন পাওয়ায় ষষ্ঠ আসনটিতেও এগিয়ে শিব সেনা জোটই।