বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: একের পর এক বিদ্রোহীর আত্মসমর্পণ। গান্ধী পরিবারের চালে ধরাশায়ী দলের জি-২৩ (G-23)। প্রথমে গোলাম নবি আজাদ ও পরে কপিল সিব্বলের মতো হেভিওয়েটরা দল ছাড়লেও বিদ্রোহীদের বাকি অংশ গান্ধী পরিবারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে পাশে দাঁড়াচ্ছেন। সভাপতি নির্বাচনে গান্ধী পরিবারের প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার সিদ্ধান্তকে আগেই স্বাগত জানিয়েছিল বিদ্রোহীদের একাংশ। এবার সরাসরি গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ মল্লিকার্জুন খাড়গেকে প্রকাশ্যে সমর্থন জানালেন বিদ্রোহীদের অন্যতম মুখ মনীশ তিওয়ারি। তিনি জানিয়েছেন, খাড়গে সভাপতি নির্বাচিত হলে দলের অভ্যন্তরে স্থিতাবস্থা ফিরবে। যা দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য় করবে বলে মনে করছে কংগ্রেসের (Congress) এই বিদ্রোহী নেতা।
মল্লিকার্জুন খাড়গের পিছনে গান্ধী পরিবারের প্রচ্ছন্ন সমর্থন রয়েছে। তবু হাল ছাড়ছেন না শশী থারুর (Shashi Tharoor)। সমর্থন আদায়ে দেশজুড়ে চড়কিপাক খাচ্ছেন তিনি। তবে থারুরও ভাল জানেন, গান্ধী পরিবারের সমর্থন কার পিছনে রয়েছে। দলের আভ্যন্তরীণ ভোটে গান্ধী পরিবারের সমর্থন যার সঙ্গে থাকবে তাঁর জয় যে নিশ্চিত দিনের আলোর মতো তা স্পষ্ট। ফলে খাড়গের জয় এখন সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু চেষ্টা কসুর করছেন না শশী থারুরও। নিজের মতো করে কৌশলী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।
[আরও পড়ুন: লন্ডনে খেলা দেখতে যাওয়ার বিপুল খরচ এল কোথা থেকে? জেরার মুখে সৌমেন্দু]
এদিকে, দীর্ঘদিন ধরেই দলের মধ্যে গণতন্ত্র ফেরানো ও সভাপতি নির্বাচনের দাবিতে সরব হয়েছিলেন বিদ্রোহীরা। সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর কাছে যে দাবি সনদ তুলে দেওয়া হয়েছিল তাতে সই করেন ২৩ জন হেভিওয়েট নেতা। দলের সর্বোচ্চ পদে নির্বাচন ঘোষণার পাশাপাশি গান্ধী পরিবারের কেউ চেয়ারের দৌড়ে থাকবে না বলে ঘোষণা করেন সোনিয়া গান্ধী। গান্ধী পরিবারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায় বিদ্রোহীদের একাংশ। তারপরেও আনন্দ শর্মা বা মনীশ তিওয়ারিরা সভাপতি ভোটকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সময় বিরূপ মন্তব্য করায় অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছিল কংগ্রেসকে। তবে গান্ধী পরিবার সমর্থিত প্রার্থী রাজ্যসভার সাংসদ মল্লিকার্জুন খাড়গের সমর্থনে মুখ খুলে বিদ্রোহের পথ থেকে সরে এলেন আরেক সংসদ ও জি-২৩ গোষ্ঠীর অন্যতম সদস্য মনীশ তিওয়ারি। তিনি জানান, খাড়গের অভিজ্ঞতা কংগ্রেসের জন্য খুবই প্রয়োজন। খাড়গে সেটা করবেন বলে, মনে করেন তিনি। এদিনই প্রবীণ এই নেতাকে সমর্থন জানিয়ে ভিডিও বার্তা দেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। গান্ধী পরিবারের প্রার্থী খাড়গেকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানান তিনি।
তবে কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচন নিয়ে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। অভিযোগ, মল্লিকার্জুন খাড়গে প্রচারে গেলে যেভাবে প্রদেশ নেতৃত্ব প্রচারে উদ্যোগী হচ্ছে থারুরের ক্ষেত্রে সেই উৎসাহ দেখাচ্ছে না প্রদেশ নেতারা। ফলে বাংলা-সহ বহু রাজ্যেই প্রচারের যাননি ত্রিবান্দ্রমের এই কংগ্রেস সাংসদ। অথচ দলের নির্বাচন কমিটির তরফে দু’জনকেই সমান গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল প্রদেশ নেতৃত্বকে। থারুরকে নিয়ে বেশি নাচানাচি করলে পাছে গান্ধী পরিবারের রোষানলে পড়তে হয় তাই রাজ্য নেতারা এড়িয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ।