নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: একশো দিনের কাজ প্রকল্পে বাংলার প্রাপ্য টাকা অবিলম্বে মিটিয়ে দেওয়ার দাবিকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের সামনে একযোগে সরব হল তৃণমূল কংগ্রেস ও কংগ্রেস। বুধবার লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ইস্যুটি উত্থাপন করেন। তখনই তাঁকে সমর্থনে এগিয়ে আসেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী। তিনিও নিজের আসন থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বাংলার প্রাপ্য মেটানোর দাবি করেছেন।
লোকসভায় অর্থমন্ত্রী একশো দিনের কাজ প্রকল্প নিয়ে বলতে গিয়ে বলেন, “বাংলা থেকে অনেক সদস্যই অভিযোগ করেছেন যে, আমরা তাঁদের বিল আটকে রেখেছি। পশ্চিমবঙ্গের মনরেগা তহবিল ২০২২-এর মার্চ থেকে আটকে রয়েছে। কারণ, বিভিন্ন জনের কাছ থেকে এ বিষয়ে অভিযোগ জমা পড়েছে। মনরেগা আইন অনুযায়ী, কেন্দ্র সরকারের কাছে অভিযোগ জমা পড়লে তা ততদিন আটকে রাখা হবে যতদিন না সংশ্লিষ্ট রাজ্যের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যা পাওয়া যায়।” এরপরেই সুদীপবাবু অর্থমন্ত্রীকে জানান, এই বিষয়ে সব কিছু নিয়েই আলোচনা হয়েছে। এক সময় নির্মলা ও সুদীপের মধ্যে বাদানুবাদের মধ্যেই অধীরবাবু উঠে দাঁড়িয়ে অভিযোগ করেন, ইচ্ছাকৃতভাবেই কেন্দ্র বাংলার প্রাপ্য অর্থ আটকে রেখেছে।
[আরও পড়ুন: ‘দায় বিরোধী দলনেতারও’, আসানসোল কাণ্ডে শুভেন্দুকে নিশানা দিলীপের]
বস্তুত, একশো দিনের কাজে বাংলার প্রাপ্য নিয়ে তৃণমূল ও কংগ্রেসের এই ইস্যুতে পাশাপাশি আসা, সংসদে বিরোধী ঐক্যেরই উদাহরণ। সংসদের চলতি অধিবেশন থেকেই বিরোধী শিবিরে তৃণমূলের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি রয়েছে। কংগ্রেস সভাপতি তথা রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গের ডাকা প্রথম বৈঠকেই উপস্থিত ছিলেন সুদীপ। এদিন সকালে দ্বিতীয় বৈঠকে হাজির না থাকলেও চিকিৎসাজনিত কারণেই তিনি যে বৈঠকে হাজির থাকতে পারবেন না সেকথা সুদীপ আগে থেকেই খাড়গেকে জানিয়ে দিয়েছিলেন এবং বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত হয়, সেটাও জানাতে বলেছিলেন বলেই জানা গিয়েছে।
কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিরোধীরা সরকারের দিকে নিশানা সাধার জন্য ২২টি বিষয় ঠিক করেছে। তৃণমূলের তরফ থেকে পাঁচটি বিষয়ের উপর বিশেষ জোর দেওয়া হবে, যার মধ্যে বাংলার আর্থিক বঞ্চনা, বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি, কেন্দ্রীয় সংস্থার অপব্যবহার ও মেঘালয় রয়েছে। প্রতিটি দলেরই নিজস্ব বিষয় থাকলেও একে অন্যের বিষয়ে সমর্থন করবে বলেও ঠিক হয়েছে। সেইমতোই এদিন বাংলার প্রাপ্যর বিষয়ে সুদীপের পাশে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে অধীরকে।