অভিরূপ দাস: বাংলার হয়ে অনূর্ধ্ব ১৯ ক্যাটাগরিতে ক্রিকেট খেলেছেন। তিনিই আবেদন করেছেন পুরসভার মজদুর সাফাই কর্মী পদে! চাকরি প্রার্থীর তালিকায় আছেন ফার্স্ট ডিভিশন ফুটবল খেলা প্লেয়ারও। কী কাজ করতে হবে? বাড়ি বাড়ি থেকে বাঁশি বাজিয়ে ময়লা সংগ্রহ, সেই ময়লা নিয়ে কম্প্যাক্টর স্টেশনে পৌঁছে দেওয়া, এমনকী রাস্তা ঝাঁট দেওয়া। চাকরিটা যাতে হয়ে যায় তার জন্য আবার ওই প্রাক্তন ক্রিকেটার, ফুটবলাররা তদ্বির করেছেন পুরসভার এক কাউন্সিলরকে। এ ঘটনায় বিস্মিত সেই কাউন্সিলর।
৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রাক্তন সিএবি কর্তা বিশ্বরূপ দে প্রশ্ন তুলেছেন, যিনি বাংলার হয়ে ক্রিকেট খেলেছেন তাঁকে দিয়ে কি আদৌ রাস্তা ঝাঁট দেওয়ানো সম্ভব? তাঁর যুক্তি, বাংলার হয়ে যিনি ক্রিকেটে প্রতিনিধিত্ব করছেন পেটের দায়ে রাস্তা ঝাঁট দিলেও মন থেকে এ কাজ তিনি করবেন না। ফলে রাস্তা সাফাইয়ের কাজটাও ঠিক মতো হবে না। শনিবার কলকাতা পুরসভায় এই প্রস্তাবটাই তোলেন বিশ্বরূপ।
[আরও পড়ুন: কলকাতার বড় মণ্ডপে কত ভিড়? জানিয়ে দেবে ডিসপ্লে বোর্ড]
দেখা গিয়েছে, ওয়েস্ট বেঙ্গল মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশনের সাফাই কর্মী নেওয়ার বিজ্ঞাপনেই লুকিয়ে গন্ডগোল। যেখানে লেখা রয়েছে, সাফাইকর্মী হিসেবে লোক নেওয়ার জন্য মেধাবী খেলোয়াড়, প্রাক্তন চাকরিজীবী, পূর্ত দপ্তরের প্রাক্তন কর্মী এবং স্বল্প দৃষ্টিশক্তিহীনদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। ২৮ মার্চ ২০২২-এর ওই বিজ্ঞাপন অনুযায়ী মোট ১০৪ জন সাফাই কর্মী নেবে পুরসভা। তার মধ্যে অসংরক্ষিত কোটায় ৪ জনকে নেওয়া হবে।
বিজ্ঞাপনে দেখা যাচ্ছে মেধাবী খেলোয়াড় অথবা মেরিটোরিয়াস স্পোর্টস পার্সন কোটায় নেওয়া হচ্ছে ৭ জনকে, অবসরপ্রাপ্ত চাকুরিজীবী কোটায় নেওয়া হবে ২৪ জনকে। স্বল্প দৃষ্ট শক্তি বা লো ভিশন কোটায় নেওয়া হবে ১ জনকে।
[আরও পড়ুন: পুরনিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে সিবিআই, সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনী]
এদিন পুর অধিবেশনে বিশ্বরূপ দে বলেন, প্রাক্তন খেলোয়াড়, স্বল্প দৃষ্টিশক্তিহীনদের নিলে প্রকৃত কাজ ঠিকমতো হবে না। ঝাঁট দেওয়ার কাজে যাঁরা দক্ষ তাঁদেরই নেওয়া হোক। প্রয়োজনে মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশনের আইন বদল করা হোক। মেয়র ফিরহাদ হাকিম উত্তরে বলেন, আইন এভাবে বদল করা সম্ভব নয়। মেয়র জানিয়েছেন, সারা জীবন একই যোগ্যতায় ক্রিকেট খেলে যাওয়া সম্ভব নয়। এক সময় যিনি ক্রিকেট অথবা ফুটবল খেলতেন পরবর্তীকালে জীবিকা নির্বাহের জন্য তাঁকে রোজগার করতেই হয়। তাই বলে রাস্তা ঝাঁট দেওয়ার কাজ? দীর্ঘ দিন ধরেই এই নিয়ম চলে আসছে, পুরসভার হাউসে আইন বদল অসম্ভব বলেই জানিয়েছেন মেয়র।