সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কবিতার বদলে কবিতা উৎসবকে ঘিরে জমজমাট বিতর্ক! কবিতা আকাদেমির এক সিদ্ধান্ত পছন্দ হয়নি সাহিত্য মহলের একাংশের। তা নিয়ে বাদানুবাদে উষ্ণ সমাজমাধ্যম। একসঙ্গে দু’জন নয়, আবৃত্তিকার দম্পতিদের কোনও এক জন (স্বামী বা স্ত্রী) একক পারফরম্যান্স করতে পারবেন আসন্ন উৎসবে। কবিতা আকাদেমির এই সিদ্ধান্তে আপত্তি করছেন অনেকে। যদিও এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেসবুক পোস্টে ব্যাখ্যা দেন কবিতা আকাদেমির সভাপতি কবি সুবোধ সরকার। কিন্ত আপত্তি ঠিক কোথায়?
আগামী ৪-৬ জানুয়ারি কবিতা উৎসব। বিতর্ক দানা বাধে ওই উৎসবে আবৃত্তিকার দম্পতি সুমন্ত্র এবং তাঁর স্ত্রী রঞ্জনা সেনগুপ্তকে আমন্ত্রণ নিয়ে। সুমন্ত্রর দাবি, কবিতা আকাদেমির তরফে বলা হয়, যে কোনও একজন একক পারফরম্যান্স করতে পারবেন। সুমন্ত্র জানান, সেক্ষেত্রে স্ত্রীই পারফরম্য়ান্স করবেন। যদিও সুমন্ত্র প্রশ্ন তোলেন, কেন শিল্পী হিসেবে না দেখে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে দেখা হচ্ছে তাঁদের? এখানে ফুরোয়নি বিতর্ক। এই ঘটনায় পড়ে রাজনীতির ছায়াও।
[আরও পড়ুন: কলকাতায় ভাগবত, দুর্গাপুরে দত্তাত্রেয়, হিন্দুত্বের হাওয়া তুলতে লোকসভার আগে তৎপর RSS?]
কবিতা অকাদেমির সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে ফেসবুকে লম্বা পোস্ট করেন কবি এবং অধ্যাপক অংশুমান কর। তাঁর মতে উৎসব কমিটি অংশগ্রহণের যে ‘মানদণ্ড’ তৈরি করেছে তা ‘হাস্যকর’। আরও দাবি করেন, সরকার বিরোধী অবস্থান নেওয়ায় ‘শাস্তি’ দেওয়া হয়েছে সুমন্ত্রকে। লেখেন, “বোঝাই যাচ্ছে যে, দীর্ঘদিন ধরে নানা বিষয়ে সরকার বিরোধী অবস্থান নেওয়ার ‘শাস্তি’ দেওয়া হল সুমন্ত্রদাকে। কবিতা উৎসব নিয়েও তাঁর ক্ষোভের কথা অতীতে সমাজ মাধ্যমেই জানিয়েছিলেন সুমন্ত্র সেনগুপ্ত। এসব যে পশ্চিমবঙ্গ কবিতা আকাদেমির কর্তাব্যক্তিরা ভালোভাবে নেননি বুঝিয়ে দেওয়া হল তা।”
যদিও রাজনীতির প্রসঙ্গটি উড়িয়ে দিয়েছেন খোদ সুমন্ত্র। তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য নন, অতএব, দুয়ে দুয়ে চার করার পক্ষপতি নন, জানিয়েছেন অবৃত্তি শিল্পী। শনিবার ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, “রাজনীতি আমার নিজস্ব আমার ব্যক্তিগত। কবিতা একাডেমির চেয়ারম্যান আমার শ্রদ্ধেয়।” পাশাপাশি প্রশ্ন তোলেন, “স্বামী স্ত্রী হিসেবে কি আমি ও রঞ্জনা সেনগুপ্ত আমন্ত্রণ পেয়েছি এতকাল?… স্বর্গীয় পার্থ ঘোষ গৌরী ঘোষ বেঁচে থাকলে কি হত? আমি জানি না। প্রত্যেকে তো তার মুন্সিয়ানায় সুযোগ পায়।”
[আরও পড়ুন: বাংলা থেকে অযোধ্যায় পদ্ম কর্মীদের জন্য বিশেষ ট্রেন, ‘ঘর ঘর যাত্রা’ বঙ্গেও]
যদিও সুমন্ত্রের পোস্টের আগেই বিতর্ক থামাতে ফেসবুক পোস্টে ব্যাখ্যা দেন সুবোধ। তাঁর বক্তব্য, “বিগত কয়েক বছর ধরে আবৃত্তি সমাজ থেকে আপত্তি উঠছিল যে একই পরিবার থেকে একাধিক সদস্য কেন? এর পরেই কমিটি সিদ্ধান্ত নেয়, “স্বামী স্ত্রীর যে কোনও একজন অংশ নেবেন।” সুবিধের আরও দাবি, “কমিটির পক্ষ থেকে তাঁদের (আবৃত্তি শিল্পী) কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তাঁরা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কে এ বছর একক আবৃত্তি করবেন আর কে দল পরিচালনা করবেন। এই সিদ্ধান্ত কমিটি নেয়নি, নিয়েছেন সেই পরিবারের প্রধান।”