স্টাফ রিপোর্টার: একের পর এক অভিযোগ উঠছে আর জি কর ঘিরে। বহিষ্কৃত ডা.সৌরভ পালের এমডি-র থিয়োরির খাতা পুনর্মূল্যায়ন হবে। আর জি করের রেডিওথেরাপির হাউজ স্টাফ সৌরভ পালকে শনিবার বহিষ্কার করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। শুধুমাত্র সৌরভ নন। অন্তত চারজন হাউজ স্টাফ গতবছর এমডি পাস করেছেন। আর জি করেই বিভিন্ন ফ্যাকাল্টিতে কর্মরত। তাঁদের খাতাও পুনর্মূল্যায়ন করার যাবতীয় কাজ সেরে ফেলেছেন কলেজ অধ্যক্ষ ডা.মানস বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার তিনি বলেন,‘‘অভিযোগ যখন উঠেছে, তখন সন্দেহ নিরসন করতেই হবে।’’
গত বছর আর জি করে বিভিন্ন ফ্যাকাল্টির ‘পিজিটি’দের এমডি পরীক্ষা হয়। অভিযোগ, স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে ইনভিজিলেটর ছিলেন আরেক বিতর্কিত ডা.বিরূপাক্ষ বিশ্বাস। যদিও সেই অভিযোগ পুরোদমে অস্বীকার করেছেন বিরূপাক্ষ। কিন্তু কলেজের একাধিক অধ্যাপকের দাবি, বিরূপাক্ষর মদতেই অবাধ টোকাটুকি হয়েছিল এমডি-র বিভিন্ন ফ্যাকাল্টির উত্তরপত্রে। এর মধ্যেই আরও একটি নতুন অভিযোগ ঘিরে ফের সরগরম আর জি করের অভ্যন্তরীণ প্রশাসন। অভিযোগ উঠেছে, আর জি করে ক্যানসার চিকিৎসার পরিকাঠামো থাকলেও শহরের বড় হাসপাতালে নিয়ম করে রোগী পাঠানো হত। এই ক্ষেত্রে রক্ষাকবচ ছিল রাজ্য সরকারের অত্যন্ত জনপ্রিয় স্বাস্থ্যসাথী কার্ড। এই ক্ষেত্রে অভিযোগের তির স্টু়ডেন্টস ডিন ডা.শান্তনু আচার্যর দিকে। বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছ অঙ্কোলজির কয়েকজন পিজিটি ও অধ্যাপকের বক্তব্য থেকে।
অভিযোগ, সন্দীপ জমানায় বৃহস্পতিবার আর জি করের অঙ্কোলজির আউটডোর হত। এখনও সেই নিয়ম চালু। কিন্তু তখন প্রথম দফায় যেসব রোগী হাসপাতালের আউটডোরে দেখাতে আসেন, পরের তারিখে তাঁদের একটা বড় অংশের আর আউটডোরে দেখা যায় না। রাজ্যের প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজের মতো আর জি করেও আউটডোর রোগীদের যাবতীয় তথ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে প্রেসক্রিপশনে কিউ আর কোড চালু হয়েছে। কলেজের বর্তমান প্রশাসন সেইসব তথ্য খতিয়ে দেখে রীতিমতো বিস্মিত। একটি নির্দিষ্ট দিনের ই-প্রেসক্রিপশনে রোগীদের একটা বড় অংশকে পরের নির্দিষ্ট আউটডোরে পাওয়া যেত না। অভিযোগ, প্রায় প্রতিমাসের কয়েকটি শনিবারে দুপুর দুটোর পর আউটডোর বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু ফের কিছুক্ষণ পর আউটডোরের ঘর খোলা হত। রোগীদের আনাগোনা দেখা যেত। সরকারি হাসপাতালের মধ্যেই রমরমিয়ে চলত ‘প্রাইভেট প্র্যাকটিস’!
বস্তুত, ক্যানসার বেসরকারি হাসপাতালে দ্রুত চিকিৎসা ও আধুনিক পরীক্ষার ‘টোপ’ দিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হত। তবে হাসপাতালের অঙ্কোলজির বিশেষজ্ঞ এবং ডিন ও অফ স্টুডেন্ট ডা. শান্তনু আচার্য অভিযোগ করেছেন, তাঁর সঙ্গে সন্দীপ ঘোষের অহি-নকুল সম্পর্ক। অঙ্কোলজির বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে সন্দীপ ঘোষের হৃদ্যতা এমন জায়গায় গিয়েছিল যে, কেউ মুখ খুলতে পারত না। স্বাস্থ্যভবনের নির্দেশ, অভিযোগের সত্যতা পেলে জিরো টলারেন্স নীতি নেওয়া হবে।