স্টাফ রিপোর্টার: আট বছরের শিশুর পায়ে কিছু ফুটেছিল। তার বদলে উরুতে রক্ত জমাটের চিকিৎসা করলেন ডাক্তার! গোটা ঘটনায় হতবাক বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ! ওই চিকিৎসককে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল সরিয়ে দিয়েছে নিজেদের চিকিৎসক তালিকা থেকে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের বাসিন্দা বিজয় বিশ্বাসের ছেলে অরিত্র বিশ্বাস হাঁটতে পারছিল না ঠিকমতো। বিজয়বাবুর কথায়, ছেলের পায়ে কোনও ফরেন পার্টিকল ঢুকেছিল। ঠিকমতো হাঁটতে পারছিল না। ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতালে ভরতি করেন ছেলেকে। সেখানেই বাঁধে বিপত্তি। অভিযোগ, ডা. সুদয় মুখোপাধ্যায় ফরেন পার্টিকল বের না করে ডান দিকের থাইয়ে রক্ত জমাট বাঁধার চিকিৎসা শুরু করেন।
[আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee: মমতার আশঙ্কায় সিলমোহর, অভিষেককে ফের সমন পাঠাল ইডি]
বিজয়বাবুর বক্তব্য, চিকিৎসককে বলা সত্ত্বেও লাভ হয়নি। ডান দিকের থাইয়ে চিকিৎসা করে ছেড়ে দেওয়া হয় অরিত্রকে। গোটা বিষয়টি নিয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনে নালিশ ঠোকেন বিজয়। ডেকে পাঠানো হয় আমরি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের চেয়ারম্যান প্রাক্তন বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, হাসপাতাল স্বীকার করেছে এটা চিকিৎসকের ভুল। ওই চিকিৎসককে হাসপাতালের তালিকা থেকে ছেঁটে ফেলা হয়েছে। সোমবার বিকেলে আমরি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারাও জানিয়েছে হাসপাতালের ঢাকুরিয়া এবং সল্টলেক দুই শাখা থেকেই নাম কাটা গিয়েছে ড. সুদয় মুখোপাধ্যায়ের। হাসপাতাল কথা দিয়েছে বিনামূল্যে তারা অরিত্রর পায়ের ফরেন পার্টিকেল বের করে দেবে।
বিজয়বাবুর মতো এতটা সৌভাগ্য হয়নি পদ্মা দের। আরামবাগের বাসিন্দা এই প্রৌঢ়া পেসমেকার বদলানোর জন্য ভরতি হয়েছিলেন বি এম বিড়লা হাসপাতালে। সেখানে ডা. অঞ্জন শিসোদিয়া তাঁর পুরনো পেসমেকার বদলে দেন। তারপরেই গন্ডগোলের শুরু। ওই জায়গায় যন্ত্রণা শুরু হয়। পুঁজ জমে যায়। অভিযোগ, যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে বারোবার আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালে এসেছেন বছর ষাটের প্রৌঢ়া। তাতেও মেলেনি সুরাহা। শেষমেশ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে চেন্নাই পাড়ি দেন পদ্মাদেবী। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, পুরনো পেসমেকারের দুটো যন্ত্রাংশ এখনও তাঁর শরীরের মধ্যে ঢুকে রয়েছে। তা থেকেই এই কষ্ট।
[আরও পড়ুন: কলকাতা দেশের নিরাপদতম শহর, অপরাধের তালিকায় শীর্ষে দিল্লি]
রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের সামনে তুলে ধরেছেন তিনি। চিকিৎসক নিজের ভুল মানতে নারাজ। চেন্নাইয়ের হাসপাতালের কাগজপত্র দেখতে চেয়েছেন তিনি। স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, আগে ওই প্রৌঢ়াকে চেন্নাইয়ে চিকিৎসার টাকা-সহ যাতায়াতের খরচও দিতে হবে। প্রায় তিন লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে।