সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গুজরাট (Gujarat) সরকার বিলকিস বানোর (Bilkis Bano) ১১ ধর্ষককে মুক্তি দেওয়ার পর থেকেই দেশজুড়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। গতকাল ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়া নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিলকিসের স্বামী ইয়াকুব রসুল। এবার উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছে, বিলকিস বানোর ধর্ষণে সাজাপ্রাপ্তরা ঘন ঘন প্যারোলে ছাড়া পেয়েছিল। ছাড়া পেয়ে প্রত্যেকবার সাক্ষীদের ভয় দেখাত বলেও অভিযোগ।
জেল থেকে বেরনো ধর্ষকদের বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে মালা পরিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া নিয়ে যখন বিতর্ক, তার মধ্যেই জানা গিয়েছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। উল্লেখ্য, বিলকিস বানো ধর্ষণ মামলায় সাজাপ্রাপ্তরা ছিল গোধরা উপসংশোধনাগারে (Godhra Sub Jail)। তারা বহুবার জামিনের আবেদন করলেও আদালত মঞ্জুর করেনি। তবে অসংখ্যবার প্যারোলে ছাড়া পেয়েছিল। ঠিক কোন কোন কারণে প্যারোলে ছাড়া পেত ১১ ধর্ষক?
[আরও পড়ুন: হাতে করে অমিত শাহর জুতো এগিয়ে দিলেন তেলেঙ্গানার বিজেপি সভাপতি! তুঙ্গে বিতর্ক]
কখনও ছেলের বিয়ে, কখনও বা মায়ের হাঁটু প্রতিস্থাপনের মতো কারণ দর্শিয়ে প্যারোলের আবেদন করত সাজাপ্রাপ্তরা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেই আবেদন মঞ্জুর হত। জানা গিয়েছে, চলতি বছরের এপ্রিল মাসেও ১১ সাজাপ্রাপ্তের অন্যতম রাধেশ্যাম শাহ গুজরাট হাই কোর্টে ২৮ দিনের প্যারোলের আবেদন করে। যদিও তা মঞ্জুর করেনি আদালত। সেই সময় বিচারপতি এএস সুপেহিয়া জানিয়ে দেন, রাধেশ্যাম ইতিমধ্যেই ৬০ দিন প্যারোলে কাটিয়েছে। তা ছিল চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত। এই কারণে আদালতের পক্ষে নতুন করে প্যারোল মঞ্জুর করা সম্ভব না।
[আরও পড়ুন: প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে সাপ ধরে ‘হিরো’, পরে সেই বিষধরের ছোবলেই প্রাণ গেল ব্যক্তির]
এর আগে ২০১১ সালে রাধেশ্যাম মায়ের হাঁটু প্রতিস্থাপনের জন্য ৩ মাসের অস্থায়ী জামিনের আবেদন করেছিল। সেই আবেদনও খারিজ হয় তার আগে দোষী মুক্তি পেয়েছিল বলে। একইভাবে বিলকিস বানো ধর্ষণ মামলায় অন্য সাজাপ্রাপ্তরাও প্যারোলে একাধিকবার মুক্ত হয়েছে। সেই সময়ই তারা মামলার সাক্ষীদের হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ। ২০১৭ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে মামলার একাধিক সাক্ষী এই বিষয়ে গুজরাট পুলিশ ও রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে স্বারকলিপি জমা দিয়েছিলেন। যদিও বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন মাথা ঘামায়নি বলে অভিযোগ। প্যারেলে ছাড়া পেয়ে এক সাজাপ্রাপ্ত বিজেপির সভায় যোগ দিয়েছিল বলেও অভিযোগ উঠেছিল মাঝখানে।
প্রসঙ্গত, গতকাল বিলকিসের স্বামী ইয়াকুব রসুল বলেছিলেন, “একজন দোষীও যখন প্যারোলে ছাড়া পেত, ভয়ে সিঁটিয়ে থাকতাম আমরা। ১১ জনের মুক্তির পর আমাদের মনের অবস্থা কেমন, বুঝে নিন আপনারা।”