অর্ণব আইচ: কথায় আছে, অর্থই অনর্থের মূল। গড়িয়াহাটের জোড়া খুনের ঘটনায় মোটিভ হিসেবে উঠে আসছে সেই অর্থের কথাই। পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত বলছে, বিপুল অর্থের কারণেই প্রাণ খোয়াতে হল সুবীর চাকীকে। আর আততায়ীকে চিনে ফেলায় খুন হতে হয়েছে তাঁর চালককেও।
সোমবার সন্ধেয় গড়িয়াহাট কাণ্ডের প্রাথমিক ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পুলিশের হাতে এসেছে বলে খবর। আর সেখান থেকে জানা গিয়েছে, সুবীর ও রবীন-দুজনকেই ধারাল অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপ দেওয়া হয়েছিল। দুজনের শরীরেই একাধিক গভীর ক্ষত রয়েছে। খুনিকে খুঁজতে তদন্তভার হাতে নিয়েছে লালবাজারের হোমিসাইড শাখা। খতিয়ে দেখা হচ্ছে বাড়ি এবং তার আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ।
[আরও পড়ুন: কলকাতার রাস্তায় পড়ে চাদরে মোড়া চিতাবাঘের চামড়া, মিলল লেজও]
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, আর্থিক কারণেই এই হত্যা। সুবীরবাবু গড়িয়াহাটে তাঁর পৈতৃক বাড়ি বিক্রির পরিকল্পনা করেছিলেন। বাড়ি দেখতে একাধিক খরিদ্দার এসেছে এর আগে। তবে অধিকাংশ সময়ই তিনি গাড়ির চালক রবীনকেই পাঠাতেন বাড়ি দেখাতে। এবার কেন তিনি নিজে বাড়ি দেখাতে এলেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে এই ঘটনা একাধিক প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, বাড়ি বিক্রি সংক্রান্ত আর্থিক লেনদেন নিয়েই সমস্যার সূত্রপাত। তদন্তকারীদের একাংশের মতে, সুবীরের পরিচিত কেউই এই ঘটনায় জড়িত। চালক চিনতে পেরেছিলেন বলেই হয়তো তাঁকে খুন হতে হয়েছে। তবে পুরোটাই এখনও পুলিশের অনুমান। কোনও অকাট্য প্রমাণ তাঁদের হাতে আসেনি বলেই খবর।
অনেকগুলি প্রশ্নের উত্তর এখনও অজানা। কারণ, ওই বাড়িতে যাওয়ার মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে খুন হয়েছেন সুবীরবাবু ও তাঁর চালক। তাহলে কি আততায়ীরা আগে থেকেই জানত যে তাঁরা আসবেন? সেই মতো পরিকল্পনামাফিক খুন করা হয়েছে তাঁদের? এ সব প্রশ্নের উত্তর যদিও দেননি লালবাজারের গোয়েন্দারা।
[আরও পড়ুন: ‘সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দিন’, সাম্প্রদায়িক হিংসা নিয়ে বাংলাদেশ প্রশাসনকে আরজি কলকাতার ইসকনের]
তবে সুবীর যে শুধুমাত্র উচ্চবিত্ত ছিলেন তা নয়, উচ্চশিক্ষিতও ছিলেন তিনি। তাঁর স্কুল জীবন কেটেছে সেন্ট জেভিয়ার্সে। এর পর খড়গপুর আইআইটি এবং পরে জোকা আইআইএম থেকে পাশ করেছিলেন তিনি। বিদেশে গিয়েছিলেন কোর্স করতে। বেসরকারি এক ব্যাটারি তৈরির সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর ছিলেন সুবীরবাবু। গড়িয়াহাটের ৭৮ কাঁকুলিয়া রোডের ওই দোতলা বাড়িটির মালিক ছিলেন তিনি। আগে ওই বাড়িটির দোতলায় থাকতেন। তবে এখন আর তিনি ওই বাড়িতে থাকেন না। বর্তমানে নিউটাউনের একটি বহুতলে থাকতেন সুবীর। দোতলা বাড়ির নীচতলাটি একটি বেসরকারি সংস্থাকে ভাড়া দিয়েছিলেন তিনি।