সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনার কঠিন সময়ে উর্দিধারীরা এখন ত্রাতার ভূমিকায় আমজনতার। যাঁর হাতে ওঠে Gun, এখন তাঁরই সুরেলা কণ্ঠে এবার ফুটে উঠছে সচেতনতার গান। বন্দুক-লাঠি হাতে আইন-শৃঙ্খলা সামাল দেন যে পুলিশকর্মীরা, তাঁরাই যে গান-শায়েরিতে সমান পারদর্শী, লকডাউনের আগে জানা ছিল না। করোনা পরিস্থিতিতে ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের মতো পুলিশরাও প্রথম সারিতে দাঁড়িয়ে কাজ করে চলেছেন। পুলিশদের কুর্নিশ জানাতেই কেষ্টপুর প্রফুল্ল কানন (পশ্চিম) অধিবাসীবৃন্দ পুজো কমিটির এবারের ট্যাগলাইন, ‘যে হাতে ওঠে গান, সেই কন্ঠেই ফোটে গান’। প্রফুল্ল কাননের পুজো এবার ১৮ বছরে পদার্পণ করবে।
করোনা মোকাবিলায় লকডাউনকে সফল করতে পুলিশকর্মীদের যেভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে দেখা গিয়েছে। তেমনই অন্যদিকে, পুলিশকর্মীরা রাস্তায় মাইক হাতে জনতাকে সচেতন করতেও দেখা গিয়েছে। সচেতনতার জন্য বিভিন্ন থানার ইন্সপেক্টর থেকে আইপিএস অফিসাররা রাস্তায় বেরিয়েছেন। পুজো কমিটির সম্পাদক রঞ্জিত চক্রবর্তীর কথায়, ‘এই কঠিন সময়ে পুলিশকর্মীদের আমরা অন্যভাবে চিনলাম। আমরা ঠিক করেছি, যদি সমস্ত পরিস্থিতি ঠিক থাকে কোন পেশাদার সংগীতশিল্পী দিয়ে এ বছরের থিম সং না গাইয়ে, পুলিশকর্মীদের গাওয়ানো হবে।’ বারাকপুরের সশস্ত্র পুলিশের ডিআইজি অফিসের কর্মী এএসআই অপূর্ব মজুমদার এবং নিউমার্কেট থানার ওসি দীপঙ্কর রেপতানের সঙ্গে একদফা কথা হয়েছে পুজো উদ্যোক্তাদের। অপূর্ব এবং দীপঙ্করবাবু দুজনেই জানিয়েছেন, ছোটবেলা থেকেই তাঁদের গান গাওয়ার শখ ছিল। কিন্তু কাজের চাপে সেগুলো সব সময় হয়ে ওঠে না। করোনা পরিস্থিতিতে পুলিশকর্মীরা অভিনব পদ্ধতিতে নবরূপে সচেতনতার বার্তা দেওয়ার জন্যই হাতে মাইক নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় বিভিন্ন আবাসনে গান গেয়েছেন।
দীপঙ্করবাবু বলেন, ‘হেকটিক শিডিউলের মধ্যেও চেষ্টা করি গান লেখার এবং কম্পোজ করার।’ অপূর্ববাবু এবং দীপঙ্করবাবু দুজনেই জানিয়েছেন যে, ডিপার্টমেন্ট থেকে অনুমতি পেলে প্রফুল্ল কানন অধিবাসীবৃন্দের জন্য পুজোর গান লেখা, সুর দেওয়া, গান গাওয়া সবই করবেন। ক্লাবের উদ্যোগে সম্মান জানানো হয়েছে দীপঙ্কর এবং অপূর্ববাবুকে। তবে করোনার চোখরাঙানি যেভাবে দিন দিন বাড়ছে, তাতে এবছর দুর্গাপুজো নিয়ে যথেষ্ট অনিশ্চয়তা কলকাতা ক্লাবগুলির মধ্যে। শিল্পীদের মধ্যেও দুশ্চিন্তা। রঞ্জিতবাবু এও জানান, তাঁদের মণ্ডপে প্রতিমা তৈরীর জন্য শিল্পী চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। লকডাউনের জেরে সমস্ত কাজ এখন স্থগিত। পুজোর থিম আর বাজেট কত হবে তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। তবে সরকার অনুমতি দিলেই নির্দিষ্ট বিধি-নিষেধ মেনে পুজো করা হবে। তবে কী থিম হবে, আদৌ হবে কি না জানেন না উদ্যোক্তারা।
পুজো যদি ছোট করে হয় তাহলে থিম সং গাইবেন পুলিশকর্মীরা। তবে শুধু বিনোদনমূলক কাজ নয়, সচেতনতামূলক কাজ যেমন, ওষুধ দেওয়া, খাবার পৌঁছে দেওয়া সমানভাবে সামলাচ্ছেন দীপঙ্কর-অপূর্ববাবুরা। প্রফুল্ল কানন অধিবাসীবৃন্দের তরফ থেকে বাগুইআটি থানার ৩২ জন পুলিশকর্মীদের হাতে সম্মান জানানোর জন্য তুলে দেওয়া হয় মাস্ক, স্যানিটাইজার। মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে সাহায্য প্রদান করেছে ক্লাব। সবমিলিয়ে করোনা যুদ্ধে শামিল কেষ্টপুর প্রফুল্ল কানন (পশ্চিম) অধিবাসীবৃন্দ পুজো কমিটি।
The post করোনা যোদ্ধাদের কুর্নিশ, দুর্গাপুজোর থিম সং গাইবেন দুই ‘সুরেলা’ পুলিশ appeared first on Sangbad Pratidin.