স্টাফ রিপোর্টার: ট্রেন-বাসের স্বাভাবিক চলাচল, না ভোটের জন্য মিটিং-মিছিলে ভিড়ের দাপট? ঠিক কী কারণে বাংলায় করোনা (Coronavirus ) আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে? দুই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্যকর্তারা। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় মহানগরে এক লাফে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৯৮৭ হয়েছে। চাঞ্চল্যকর তথ্য হল, এই সময়ে শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে কোভিডে মৃত্যু হয়েছে ছয় জনের। গত কয়েকদিন ধরে এই সংখ্যা তিনের মধ্যেই ঘোরাফেরা করছিল। বস্তুত সংক্রমিত ও মৃতের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হওয়ায় উদ্বেগ বেড়েছে পুরসভার অন্দরমহলে।
প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রতিদিন করোনা আক্রান্ত সন্দেহে যে পরীক্ষা হচ্ছে সেখানেও আতঙ্ক ছড়ানোর মতো রিপোর্ট এসেছে। পুরসভার স্বাস্থ্যদপ্তরের তথ্য, গত ২৪ ঘণ্টায় পুরসভার ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করাতে আসা প্রতি দশজনের মধ্যে একজনের শরীরে করোনার ভাইরাসের সন্ধান মিলেছে। দৈনিক সংক্রমণের হার ৮.৩১ শতাংশ থেকে বেড়ে এদিন একলাফে পৌঁছে গিয়েছে ১০.১০ শতাংশে। ফের কলকাতার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ফের বেডের আকাল শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ। নির্বাচনী উত্তাপ টপকে এবার শহরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগের ধাক্কা লাগল খাস কলকাতা পুরসভায়। কারণ, অনেক চেষ্টা করেও এখনও সেফ হোম চালু করা সম্ভব হয়নি। বাড়ি বাড়ি উপসর্গহীন করোনা আক্রান্তের সন্ধানে আশাকর্মীদের পৌঁছতে বললেও এখনও অধিকাংশ ওয়ার্ডে নির্বাচনী জোয়ারের ধাক্কা সামলে তা বাস্তবায়িত করা সম্ভব হয়নি।
[আরও পড়ুন: টিকার দুটি ডোজ নেওয়ার পরও করোনার থাবা শরীরে! আক্রান্ত দন্ত চিকিৎসক]
পুরসভার এক কর্তা এদিন স্বীকার করেছেন, শহরে করোনা নিয়ন্ত্রণে লাগাম দেওয়া যাচ্ছে না তার মূল কারণ, কমিশনের নির্দেশে পুরসভায় কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব দায়িত্বে নেই। আবার ওয়ার্ডে কাউন্সিলর বা ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটররা কেউই না থাকায় নাগরিকদের সঙ্গে পুরসভার কর্মীদের সেতু তৈরি হচ্ছে না। গতবছর যখন এভাবে সংক্রমণ ছড়াচ্ছিল তখন মুখ্যপ্রশাসক ফিরহাদ হাকিম-সহ ১৪৪ জন প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর ঝাঁপিয়ে পড়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করে আক্রান্তদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। সংক্রমিতদের পৃথক করে ফেলে করোনাকে কার্যত বন্দি করেছিল পুরসভা। বিপদের বার্তা হল, গত ২৪ ঘণ্টায় যেখানে নতুন করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে সেখানে সুস্থ হয়েছেন মাত্র ৩০৬ জন। কোভিড সংক্রমিতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় কলকাতায় অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছে ৫,৮৯৮ জনে। পাশের উত্তর ২৪ পরগনায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় নতুন সংক্রমিত হয়েছেন ৮৮৪ জন।