গৌতম ব্রহ্ম: সাবধানের মার নেই। আত্মসন্তুষ্টিরও জায়গা নেই। গোটা দেশে যে দশটি রাজ্যে ‘অ্যাক্টিভ’ কোভিড রোগীর (Active Corona Patients) সংখ্যা কমছে, তার অন্যতম পশ্চিমবঙ্গ। তবু এ রাজ্যে হাসপাতালের শয্যা উপসর্গহীন বা মৃদু উপসর্গযুক্ত রোগী দিয়ে ভরাতে চায় না স্বাস্থ্য দপ্তর। এবং সেটা তারা ফের একবার মনে করিয়ে দিল কোভিড হাসপাতালগুলিকে। নির্দেশিকা জারি করে জানিয়ে দিল, উপসর্গহীন বা মৃদু্ উপসর্গযুক্ত রোগীকে হাসপাতালে ভরতি করে বেড নষ্ট করা যাবে না। পাশাপাশি, রোগী স্থিতিশীল হলেই তাঁকে হাসপাতাল থেকে সেফ হোমে (Safe Home) স্থানান্তরিত করতে হবে। অকারণে হাসপাতালবাস দীর্ঘায়িত করা যাবে না।
এখানেই শেষ নয়। হাসপাতালে শয্যাসংকট এড়াতে সেফ হোমগুলির গুরুত্ব বাড়ানোরও সিদ্ধান্ত হয়েছে। ঠিক হয়েছে, সব সেফ হোমে ২৪ ঘণ্টাই ডাক্তার-নার্স মোতায়েন থাকবেন। অ্যাডভাইসরিতে বলা হয়েছে, জিডিএমও ও আয়ুশ ডাক্তাররা মূলত এই সেফ হোমগুলির দায়িত্বে থাকবেন। বড় ভূমিকা থাকবে নার্সদেরও। অক্সিজেনের ব্যবস্থাও রাখতে হবে। হাসপাতালের মতোই নিয়মিত তাঁরা রোগীকে পর্যবেক্ষণ করবেন। পালস অক্সিমিটারে নিয়মিত অক্সিজেন মাপবেন। প্রয়োজনমতো ব্যবস্থা নেবেন।
[আরও পড়ুন : কবে চলবে লোকাল ট্রেন ও মেট্রো? রাজ্যের সম্মতির পর কেন্দ্রের দিকে তাকিয়ে রেল]
গুজরাত, দিল্লি, মহারাষ্ট্র, ত্রিপুরা, তেলেঙ্গানা, কেরল, তামিলনাড়ু, মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটক-সহ পঁচিশ রাজ্যে ধারাবাহিকভাবে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বেশ কয়েকটি রাজ্যে হাসপাতালে হাসপাতালে বেডের হাহাকার। উলটোদিকে আন্দামান, বিহার, দাদরা-নগর হাভেলি, হিমাচল, ঝাড়খণ্ড, লাদাখ, নাগাল্যান্ড, পাঞ্জাব, রাজস্থান এবং পশ্চিমবঙ্গ- এই দশ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে অ্যাক্টিভ পজিটিভ রোগীর সংখ্যা কমছে। তবু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার একতিল ঢিলেমি চায় না। উলটে যাতে সরকারচালিত কোভিড হাসপাতালগুলিতে পর্যাপ্ত বেড মজুত থাকে, সে জন্য উপসর্গহীন ও মৃদু্ উপসর্গের রোগীদের বাড়িতে বা সেফ হোমে রেখে চিকিৎসায় গুরুত্ব আরোপ করেছে। প্রসঙ্গত, নিয়ম ভেঙে প্রভাব খাটিয়ে বেশ কিছু ক্ষেত্রে কোভিড হাসপাতালের বেড উপসর্গহীন বা কম লক্ষণযুক্ত রোগী দখল করে রাখছেন বলে বারবার অভিযোগ উঠছিল। স্বাস্থ্য দপ্তর নির্ধারিত বিশেষজ্ঞ কমিটি বিভিন্ন কোভিড হাসপাতাল পর্যবেক্ষণ করেও এর ইঙ্গিত পায়। তার পরই কড়া অবস্থান স্বাস্থ্য দপ্তরের।
[আরও পড়ুন : বিরামহীন টানা ১৫০ দিন, অসম লড়াই করে মহীরূহে পরিণত হল যাদবপুরের শ্রমজীবী ক্যান্টিন]
শুক্রবার একটি অ্যাডভাইসরিতে দপ্তর জানিয়ে দিয়েছে, মৃদু্ উপসর্গযুক্তদের হাসপাতালে ভরতি করার দরকার নেই। হোম আইসোলেশনে (Home Isolation) থাকতে কারও অসুবিধা হলে তাকে সেফ হোমে রাখতে হবে। রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা ডা. দেবাশিস ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর উপসর্গ কমে গিয়ে স্থিতিশীল হলে তাঁকেও সেফ হোমে স্থানান্তরিত করতে হবে। আবার সেফ হোমে থাকা কোনও রোগীর উপসর্গ প্রকট হলে, শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তাঁকে দ্রুত নিকটবর্তী কোভিড হাসপাতালে আনতে হবে। পরামর্শ ঠিকঠাক মানা হচ্ছে কি না যাচাই করতে বিশেষজ্ঞ কমিটি কোভিড হাসপাতাল পরিদর্শনে যাবে।
The post হাসপাতালের শয্যা সংকট কাটাতে নয়া ব্যবস্থা, উপসর্গ কমলেই করোনা রোগীরা এবার সেফ হোমে appeared first on Sangbad Pratidin.