shono
Advertisement

উপসর্গ ছাড়াই করোনা পজিটিভ পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের গাড়ির চালক, সুস্থও

পুরভবনে ফিরহাদের ঘরের বাইরে ডিউটি দেওয়া দু’জনের শরীরেও অ্যান্টিবডি ৬-এর উপর।
Posted: 10:40 PM Oct 08, 2020Updated: 10:40 PM Oct 08, 2020

কৃষ্ণকুমার দাস: করোনা আক্রান্ত হলেও যে উপসর্গহীনরা অনেকে টের পাচ্ছেন না, তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের গাড়ির সরকারি চালক। অ্যান্টিবডি পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, তাঁর শরীরে অ্যান্টিবডির ইউনিট ৯, সেখানে স্বয়ং মন্ত্রীর মাত্র ০.২৩। যাঁদের শরীরে করোনার ভাইরাস একবার ঢুকেছে তাঁদের ন্যূনতম ১.৪ ইউনিটের বেশি অ্যান্টিবডি থাকছে। এর অর্থ পুরমন্ত্রীর শরীরে এখনও পর্যন্ত করোনার ভাইরাস প্রবেশ করতে পারেনি। কিন্তু পুরমন্ত্রীর গাড়ির চালকের শরীরে ৯ ইউনিট থাকায় বিস্মিত পুরসভার স্বাস্থ্যবিভাগ।

Advertisement

কোভিড পরিস্থিতিতে একদিনের জন্যও যেমন রাস্তায় বের হওয়া বন্ধ করেনি ফিরহাদ, তেমনই সরকারি গাড়ির চালকও কোনও ছুটি নেননি। স্বভাবতই কবে যে তিনি আক্রান্ত হয়েছেন, কবে আবার ‘করোনাজয়ী’ হয়েছেন তা জানতে পারেননি বলে স্বীকার করেন স্বয়ং পুরমন্ত্রীর গাড়ির চালক। এখানেই শেষ নয়, পুরভবনে ফিরহাদের ঘরের বাইরে ডিউটি দেন এমন দু’জনেরও শরীরে অ্যান্টিবডি ৬-এর উপরে। অর্থাৎ এঁরাও নিজেদের অজান্তে করোনা পজিটিভ হয়েছিলেন, পরে নেগেটিভও হয়ে গিয়েছেন।  সর্বাধিক অ্যান্টিবডি ইউনিট ১০ এর বেশি পাওয়া গিয়েছে পুরসভার মুখ্য স্বাস্থ্যকর্তা সৌমিত্র ঘোষের শরীরে। তিনি অবশ্য করোনার উপসর্গ নিয়ে অসুস্থ ছিলেন দীর্ঘদিন। অ্যান্টিবডি পরীক্ষার এই তথ্যের কথা স্বীকারও করেছেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।

[আরও পড়ুন: পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি, পালটা লাঠিচার্জ, বিজেপির নবান্ন অভিযানে অগ্নিগর্ভ রাজপথ]
           

উৎসব শুরুর ঠিক আগে কলকাতায় পুজো দেখার জন্য ‘মাস্ক মাস্ট’ নিয়ে পরামর্শ দিলেন কলকাতায় সংক্রমণ বৃদ্ধিতে উদ্বিগ্ন পুরমন্ত্রী ও মুখ্যপ্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। জানালেন, “মণ্ডপে আসুন শারিরীক দূরত্ব মেনে, ঠাকুর দেখুন মাস্ক পরে।” পুজোর কেনাকাটার জেরে শহরে ও নানা জেলায় সংক্রমিতের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। ফের হাসপাতালগুলিতে কোভিড রোগীর সংখ্যা উপচে পড়ছে। বিশেষ করে কলকাতায় সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে যেখানে দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা এক ধাক্কায় ৪৩১ নেমেছিল, সেখানে বৃহস্পতিবার ফের আক্রান্তের সংখ্যা ৭৬৫ হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় ১১জনের মৃত্যু হলেও পুরসভার দাবি, অনেকেই বিভিন্ন জেলা থেকে চিকিৎসা করাতে এসে শহরে মারা গেলেন। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ তথ্য হল, গত তিনদিন ধরে দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা সাতশোর উপরে থাকলেও কলকাতায় কনটেনমেন্ট জোন মাত্র একটিই। অবশ্য এদিন নদিয়া জেলায় কনটেনমেন্ট জোন সংখ্যা ৫৭৭ এবং পূর্ব বর্ধমানে ৫৬৩টি।
           
শহরে ও জেলায় এখন আক্রান্তের একটা বড় অংশই উপসর্গহীন। শুধু তাই নয়, মৃদু উপসর্গের রোগীরাও করোনা পরীক্ষা করার ক্ষেত্রে অনীহা দেখাচ্ছেন বলে পুরসভার চিকিৎসকরা দাবি করেছেন।  অনেক পরিবারে একজনের করোনা পজিটিভ ধরা পড়লে অন্য সদস্যরা আর কেউই পরীক্ষা করাতে আসছেন না। ওই সদস্যরা নিজেদের ইচ্ছামতো বাইরে ঘুরছেন, দোকান-বাজার, এমনকী পুজোর শপিং করছেন। আর শপিং করার সময় অধিকাংশ মানুষ মাস্ক পরছেন না বলে উপসর্গহীনরা অন্যদের সংক্রমিত করছেন বলে শহরে ফের করোনা রোগী রেকর্ডহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্বাস্থ্যবিভাগের তরফে এমনই তথ্য পুরসভার মুখ্যপ্রশাসক ও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কাছে এসেছে। উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, “বাংলায় একটাই বড় উৎসব দুর্গাপুজো, সেটাকে কোনওমতে ছেড়ে দেওয়া যাবে না। আমরা সবাই সেই আনন্দ উৎসবে যাব। সবাইকে দেখতে হবে, আমার জন্য যেন অন্যের শরীরে করোনা না ছড়িয়ে পড়ে।”

[আরও পড়ুন: কোভিড আবহেই শহরে ককলিয়ার ইমপ্লান্ট, দু’বছর পর ঢাকের আওয়াজ শুনবেন সুনীলবাবু]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement