অভিরূপ দাস: কোভিড পজিটিভ ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা শিখা মাধবচন্দ্র ঘটক। চিকিৎসা না পেয়ে ১২ ঘন্টা পরে ছিলেন বাড়িতেই। শেষে এলাকার কাউন্সিলর খবর পেয়ে অ্যাম্বুল্যান্স পাঠান। একমাত্র মেয়ে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরের শহরে। বাড়িতে আর কেউ নেই। শ্বাসকষ্ট নিয়ে কেষ্টপুরের বাড়িতে পরে থাকলেন দীর্ঘক্ষণ। অভিযোগ শ্বাসকষ্ট বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌছে গেলে যাদবপুরের বাসিন্দা সহেলি ভট্টাচার্য ফোন করেন উডল্যান্ড হাসপাতালের কোভিড হোম কেয়ারের হেল্প লাইন নম্বরে। একাধিক বার সেই ফোন বেজে গিয়েছে। সাহায্য মেলেনি। ২৩ জুলাইয়ের ঘটনায় প্রশ্নের মুখে বেসরকারি ওই হাসপাতালের হোম কেয়ার পরিষেবা।
একমাত্র মেয়ে জামাই থাকেন জাপানে। স্বামী মারা গিয়েছেন কয়েক বছর আগে। কেষ্টপুরের রবীন্দ্রপল্লির বাসিন্দা শিখা মাধবচন্দ্র ঘটক একাই থাকতেন। তিনি কোভিড পজিটিভ হওয়ার পর, খবর পৌছতে এমনিতেই দীর্ঘ সময় চলে যায়। কেষ্টপুর থেকে যাদবপুরে খবর পৌছল কী করে? সহেলির কথায়, ওই প্রৌঢ়ার মেয়ে কর্মসূত্রে জাপানে থাকেন। ওনার মেয়ের বন্ধু থাকেন বেঙ্গালুরুতে। সে আবার আমারও চেনাজানা। প্রথমে সে-ই খবরটা পায়। ফোনে আমায় পুরো বিষয়টা জানায়। বলে, “জেঠিমা কোভিড পজিটিভ একটু হেল্প কর।” লকডাউনের মধ্যে কেষ্টপুরে পৌছনো সম্ভব ছিল না। সহেলি জানিয়েছেন, খবর পেয়ে বাগুইআটি থানায় যোগাযোগ করি। তাঁরা বলে স্বাস্থ্যদপ্তরে যোগাযোগ করতে। সময় যত যাচ্ছিল তত বাড়ছিল প্রৌঢ়ার শ্বাসকষ্ট। শ্বাসকষ্টের দরুন একসময় অসংলগ্ন কথা বলতে শুরু করেন শিখাদেবী।
[আরও পড়ুন: করোনাতঙ্কে ছুঁলেন না পরিজন ও পড়শিরা, ঘরের মেঝেয় ৬ ঘণ্টা পড়ে থেকে মৃত্যু অসুস্থ বৃদ্ধার]
বাধ্য হয়েই সোশ্যাল সাইটে ভাইরাল হওয়া উডল্যান্ডের কোভিড চিকিৎসার “হোম কেয়ার হেল্প লাইনে” ফোন করেন সহেলি। এক দুবার নয়। টানা ১২ বার। কিন্তু সেই ফোন কেউ তোলেনি। সুদূর জাপান থেকে প্রৌঢ়ার মেয়ের প্রশ্ন, “এমন হেল্পলাইন রাখার মানে কী? যেখানে ফোন করলেও কেউ আসছেন না।” এরপর সম্পূর্ণ ঘটনা সোশ্যাল সাইটে লিখে পোস্ট করেন সহেলি। বাড়িতে একা এক প্রৌঢ়া শ্বাসকষ্টে ছটফট করছেন শুনে অনেকেই সাড়া দেন। সোশ্যাল সাইটেই তা দেখতে পান বিরাটির এক বাসিন্দা। খবর দেন কেষ্টপুরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আশা নন্দীকে। নিজেই দায়িত্ব নিয়ে প্রৌঢ়ার বাড়িতে অ্যাম্বুল্যান্স পাঠান কাউন্সিলর। কেষ্টপুরেরই একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে ভর্তি করা হয়েছে প্রৌঢ়াকে। আপাতত তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। এর মধ্যে দুবার খোঁজ নিয়েছেন কাউন্সিলর। তাঁর কথায়, ”অনেকেই এই এলাকায় একা থাকেন। ছেলেমেয়ে বিদেশে। আমি নিজের মোবাইল নম্বরটা হেল্পলাইনের নম্বরের মতো ব্যবহার করতে বলেছি।”
The post ১২ বার ফোন করলেও তুলল না উডল্যান্ড, কোভিড রোগীকে বাঁচাতে অ্যাম্বুল্যান্স পাঠালেন কাউন্সিলর appeared first on Sangbad Pratidin.