shono
Advertisement

অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মীর ‘দায়িত্বজ্ঞানহীনতায়’বিজ্ঞানীর মৃত্যু, ভর্ৎসনা আদালতের, খারিজ জামিনের আরজি

বিচারক অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুন-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজুর নির্দেশ দিয়েছেন।
Posted: 12:59 PM Jan 16, 2022Updated: 01:19 PM Jan 16, 2022

গোবিন্দ রায়: এক সময় তাবড় তাবড় গুণ্ডা বদমাইশকে ঠান্ডা করেছেন। শৃঙ্খলাভঙ্গ হলেই শ্রীঘরে ঢুকিয়েছেন বহু বেয়াড়াকে। গোটা কর্মজীবনে যিনি সাধারণকে শৃঙ্খলা রক্ষার পাঠ দিয়ে এসেছেন, এমন এক ডাকসাইটে পুলিশ অফিসারই কিনা শেষে চূড়ান্ত দায়িত্বজ্ঞানহীনের কাজ করে বসলেন! যার জেরে বেঘোরে প্রাণ হারাতে হল এক বিজ্ঞানীকে। অবসরপ্রাপ্ত ওই পুলিশ আধিকারিকের এহেন দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণে রীতিমতো বিস্মিত আদালত।

Advertisement

ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তির লাইসেন্স হয় না জেনেও গাড়ি চালানোর শেখার শখ হয়েছিল অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মী মনোরঞ্জনবাবুর। আর শখের খেসারত দিতে হল এক বিজ্ঞানীকে। গত ডিসেম্বরের শেষে এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়ায় পঞ্চসায়র থানা এলাকায়।

[আরও পড়ুন: Tsunami: জেগে উঠেছে সমুদ্রগর্ভের ‘ঘুমন্ত দানব’, সুনামির আশঙ্কায় কাঁটা আমেরিকা-রাশিয়া-সহ একাধিক দেশ]

সম্প্রতি জামিনের আবেদন জানিয়ে আলিপুর আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মনোরঞ্জন ঘোষ (৬২) নামে ওই পুলিশ আধিকারিক। কিন্তু তাঁর কর্মকাণ্ডে বিস্ময় প্রকাশ করে জামিনের আরজি খারিজ করে দেন আলিপুরের অতিরিক্ত মুখ্য জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। একই সঙ্গে তাকে হাজতবাসেরও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। আদালতের পর্যবেক্ষণ, “একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্তা হয়েও সজ্ঞানে দায়িত্বজ্ঞানহীনতার যে পরিচয় তিনি দিয়েছেন, তাতে এটা স্পষ্ট যে এই ব্যক্তি ছাড়া পেলে এমন কাজ আবার করবেন।”

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, সুনীলকুমার গড়াই (৫৫) অ্যাটোমিক মিনারেলস ডিরেক্টোরেট ফর এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড রিসার্চে কর্মরত গবেষক ছিলেন। থাকতেন বিশাখাপত্তনমে। নরেন্দ্রপুর ও নিউ গড়িয়া কো-অপারেটিভ সোসাইটিতে তাঁর ফ্ল্যাট রয়েছে। শীতের ছুটিতে কলকাতায় এসেছিলেন সুনীলাবু। গত ২৭ ডিসেম্বর বাজার করে বাড়ি ফেরার সময় সুনীলবাবুকে ওই পুলিশ কর্মীর গাড়ি পিষে দেয়। সেই মামলায় জেল হেফাজতে থাকাকালীন জামিনের আবেদন জানান অভিযুক্ত।

[আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee: সদ্যোজাতর হৃদযন্ত্রে সমস্যা, পাশে দাঁড়ানোর আর্তি বামমনস্ক শিল্পীর, এগিয়ে এল অভিষেকের টিম]

মামলার শুনানিতে সুনীলবাবুর পরিবারের তরফে আইনজীবী ইন্দ্রদীপ পাল জানান, “দীর্ঘদিন পুলিশে চাকরি করেছেন মনোরঞ্জন ঘোষ। আইন জানা সত্ত্বেও আইন ভেঙেছেন। গাড়ি চালাতে না জেনে কোনও চালক বা প্রশিক্ষক ছাড়াই বড় রাস্তায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন। যা ট্রাফিক আইনে অপরাধ। এছাড়াও, মোটর ভেহিকেলস আইন অনুযায়ী ৬০ বছর বয়স থেকে লাইসেন্স পাওয়া যায় না, জেনেও প্রশিক্ষণ না নিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন। যিনি মারা যান তিনিই পরিবারের এক মাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি ছিলেন।” তাঁর এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে জামিন খারিজ করে হাজতবাসের নির্দেশ দেয় আদালত। পাশাপাশি, পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে শুধুমাত্র গাফিলতির যে লঘু ধারা দায়ের হয়েছিল তার পরিবর্তন করে বিচারক অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুন-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজুর নির্দেশ দিয়েছেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement