সুকুমার সরকার, ঢাকা: ৪৫ বছর পর ধরা পড়ল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম খুনি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদ। সোমবার রাত তিনটার সময় ঢাকার মিরপুরের সাড়ে ১১ নম্বর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আর মঙ্গলবার বেলা ১১ টার সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের জনসংযোগ আধিকারিক শরিফ মাহমুদ অপু মাজেদের গ্রেপ্তারির খবর সাংবাদিকদের দেন। আর দুপুর পৌনে একটার সময় তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে তোলা হলে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
এতদিন বঙ্গবন্ধুর খুনের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আবদুল মাজেদ ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল বলে খবর পাওয়া যাচ্ছিল। তাকে সেখান থেকে পাঠানো হয়েছে কি না জানতে চাইলে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তাকে বাংলাদেশেই পেয়েছি। হয়তো করোনার ভয়ে চলে এসেছে।’ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে মাজেদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পলাতক ছ’জন খুনির মধ্যে অন্যতম। পলাতক বাকি পাঁচ খুনিরা হল, আবদুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম, এম রাশেদ চৌধুরি, এসএইচএমবি নূর চৌধুরি ও রিসালদার মোসলেমউদ্দিন। তাদেরও খোঁজ চলছে।
[আরও পড়ুন: করোনাকে হারিয়ে বেঁচে থাকুক সোনার বাংলা, মানবিক উদ্যোগ শামিল পদ্মাপাড়ের ক্রিকেটাররা]
গতকাল রাতে তাকে গ্রেপ্তার করার পর ১২ টা ১৫ মিনিটে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে বাংলাদেশ পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (CTTC)। তারপর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার না দেখানো পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে কাউন্টার টেরোরিজম। ওই আবেদনে বলা হয়, আবদুল মাজেদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। সে দীর্ঘদিন পলাতক ছিল। এই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার না দেখানো পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হচ্ছে। শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম জুলফিকার হায়াত।
গত ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরকে হত্যার ৩৪ বছর পর এই হত্যা কাণ্ডের বিচার হয় ২০০৯ সালের ১৯ নভেম্বর। খুব ধীরে দীর্ঘ ১২ বছরে নিম্ন আদালত থেকে শুরু করে আইনের প্রতিটি ধাপ স্বচ্ছতার সঙ্গে অতিক্রম করে সর্বোচ্চ আদালতের মাধ্যমে স্বঘোষিত খুনিদের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হয়। সাজাপ্রাপ্ত ১২ জন আসামির মধ্যে কারাবন্দি পাঁচ আসামির ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি ফাঁসি হয়। তারা হল সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, মুহিউদ্দিন আহমেদ, বজলুল হুদা ও একেএম মহিউদ্দিন আহমেদ। পলাতক খুনিদের মধ্যে খন্দকার আবদুর রশিদ লিবিয়া বা বেলজিয়ামে থাকে। শরীফুল হক ডালিম পাকিস্তানে বলে জানা গিয়েছে। পাকিস্তান থেকে হংকংয়ে তার যাতায়াত রয়েছে বলে একাধিক সূত্রে খবর। এএম রাশেদ চৌধুরি লস অ্যাঞ্জেলেস ও এন এইচ এমবি নুর চৌধুরি কানাডায় রয়েছে। আর রিসালদার মোসলেমউদ্দিন নাকি ভারতের জেলে বন্দি রয়েছে বলে অনেকের ধারণা।
[আরও পড়ুন: করোনায় টালমাটাল বাংলাদেশ, ঘরে বসেই নমাজ পড়ার নির্দেশ হাসিনার]
The post ৪৫ বছর পর বাংলাদেশে ধৃত বঙ্গবন্ধুর খুনি আবদুল মাজেদ appeared first on Sangbad Pratidin.