অর্ণব আইচ: ফের আদালতে মুখ পুড়ল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার! রেশন বন্টন দুর্নীতি মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটকে তীব্র ভর্ৎসনা করল আদালত। মামলার সঠিক তথ্যপ্রমাণ আদালতে হাজির করা, স্বচ্ছতা বজায় রাখা নিয়ে তদন্তকারীদের ভূমিকা প্রসঙ্গ উষ্মা প্রকাশ করেন বিচারক। মঙ্গলবার রেশন বন্টন দুর্নীতি মামলার দুই অভিযুক্ত বাকিবুর রহমান ও বিশ্বজিৎ দাসকে ব্যাঙ্কশালে ইডির বিশেষ আদালতে তোলা হয়েছিল। সেই শুনানিতেই ‘মুখ পুড়ল’ ইডির। তবে শুনানি শেষে বিশ্বজিৎ দাসকে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। বাকিবুর রহমানের পরবর্তী শুনানি ১ মার্চ।
বাকিবুরের আইনজীবী বলেন,”ইডি নিজের এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে পুলিশের মতো তদন্ত করছে।” এর পরই বিশ্বজিতের মামলার শুনানিতে ইডিকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করেন বিচারক। তাঁর প্রশ্ন “এই মামলায় যা তথ্য, প্রমাণ, নথি রয়েছে, তাতে ট্রায়ালে এই মামলা কতক্ষণ টিকবে? এই অভিযুক্তর নাম ভারতীয় পেনাল কোডের মামলায় নেই। এই মামলায় তিনি কীভাবে যুক্ত হচ্ছেন? তাঁর ভূমিকা কী?” জবাবে ইডির আইনজীবী জানান,”এনপিজি রাইস মিল থেকে গমের দুর্নীতি হয়েছে। তার সাক্ষ্যও মিলেছে।”বিচারক বলেন, “ইডি নিজের প্রয়োজনমতো গ্রেপ্তার করতে পারে। কিন্তু দেখতে হবে ইডির মামলায় তা খাপ খাচ্ছে কি না।”
[আরও পড়ুন: ‘হিরো’ সাজা বাইকচালকদের সতর্কবার্তা, রোহিতের বার্তা হাতিয়ার রাজ্য পুলিশের]
বিশ্বজিতের আইনজীবী জানান, বিমানবন্দর থেকে তাঁর মক্কেলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার আগে বিশ্বজিৎকে ইডি জেরা করতে পারেনি। ইডির আইনজীবী বলেন, ৩৫০ কোটি টাকা বিশ্বজিতের সংস্থার মাধ্যমে পাচার হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে দুবাইয়ে টাকা হাওয়ালা ও লোকের মাধ্যমে পাচার করা হয়। বয়ান ও প্রমাণের ভিত্তিতে জানা গিয়েছে, ভুয়া নথি আসল হিসাবে দেখানোর চেষ্টা হয়। বিচারক বলেন, “কিন্তু এটা আর্থিক তছরুপের মধ্যে পড়ে না। ইডি প্রেডিকেট অপরাধের তদন্ত করছে। ভুয়া নথির প্রমাণ করা যাবে? ফরেনসিক পরীক্ষা হয়েছে?”
ইডির দাবি, বিশ্বজিৎ ভুয়ো সংস্থার মাধ্যমে টাকা পাচার করেছেন। প্রভাবশালীর সাহায্যে সাধারণ মানুষের জন্য বরাদ্দের সরকারি টাকা সরানো হয়েছে। বিচারক বলেন, “তাঁকে দোষী ভেবে ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে যদি ট্রায়াল চলে, আর তার পর কিছুই প্রমাণিত না হয়, তাহলে এত বছরের ক্ষতিপূরণ তাঁকে কে দেবে?” ইডি জানায়, সন্দেহের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়। বিচারক জানান, শুধু সন্দেহ থাকলে হবে না। আধিকারিকদের উপযুক্ত প্রমাণ জোগাড় করতে হবে। বিশ্বজিতের আইনজীবী বলেন, চারটি মামলায় তাঁর নাম নেই। বাকিবুরের চালকলের সঙ্গে কোনওভাবেই তিনি যুক্ত নন। মিলের নথি বিচারক দেখতে চাইলে ইডি তখনই নথি দেখাতে পারেনি। তখনই বিচারক ভর্ৎসনা করে বলেন, “কীভাবে ইডি তদন্ত করে?”